গত পাঁচ বছর ধরে রমরমিয়ে চলছিল চিট ফান্ডের প্রতারণা চক্র। বোলপুরের বুকে সেই চিট ফান্ড সংস্থার এক পান্ডার বাড়িতে অবশেষে হয়েছে আয়কর হানা। তবে পান্ডার হদিশ পায় নি আয়কর দপ্তর। আগেভাগেই চম্পট দিয়েছে সে। গোরু পাচার মামলা, চাকরি দূর্নীতি মামলা, লটারির টিকিট হাতবদলের মাধ্যমে কাঁচা টাকা লেনদেন, কয়লা পাচার সহ একাধিক মামলার তদন্তে গত কয়েক বছরে বোলপুরে পা পড়েছে ইডি-সিবিআইয়ের। সেই বোলপুরেই এবার চিট ফান্ড কারবারের রহস্যভেদ করতে হানা দিল আরেক কেন্দ্রীয় সংস্থা আয়কর দপ্তর।
বৃহস্পতিবার সকালে হয়েছে আয়কর দপ্তরের এই অভিযান। মহম্মদ আনারুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে খোলা বাজার থেকে কমপক্ষে ১০০ কোটি টাকা তোলার অভিযোগ রয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে প্রায় ৩ ঘন্টা ধরে বোলপুরে বাইপাস এলাকায় বিলাশবহুল বাড়িতে তল্লাশি চালায় আয়কর দপ্তরের আধিকারিকরা। তবে দিনের শেষে জানা যায়, বাড়ির মালিক অর্থ্যাৎ মূল অভিযুক্ত ফেরার হয়ে গিয়েছে আগেই। এদিন অভিযুক্ত আনারুল ইসলামের শ্যালক সাইফুল ইসলামকে সাথে নিয়ে হানা দেয় আয়কর দপ্তর। বাড়ি ঢুকে বেশ কিছু নথি সংগ্রহ করেছেন আধিকারিকরা। সূত্র মারফত জানা গেছে, এই সংস্থার জাল শুধু বীরভূম জেলায় নয়, রাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। আয়কর দপ্তর সূত্রে আরও জানা গেছে, বীরভূমের লাভপুরের ঠিবা গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজিপাড়ার বাসিন্দা মহম্মদ আনারুল ইসলাম। ‘এলএফএস বুকিং প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে একটি চিটফাণ্ড সংস্থার বড় শেয়ার হোল্ডার সে। খোলা বাজার থেকে সে কোটি কোটি শেয়ার মার্কেটের নামে তুলেছে। একটি বড় চক্র রয়েছে এর পেছনে। সেই মহম্মদ আনারুল ইসলামের উপর বেশ কিছু দিন ধরে আয়কর বিভাগ নজর রাখছিল। বহু মানুষকে ভুল বুঝিয়ে বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে খোলা বাজার থেকে টাকা তোলা হয়েছে সংস্থার নামে। অভিযুক্তের শ্যালক সাইফুল ইসলাম তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, গত ৫ বছর ধরে এই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত আনারুল। তবে প্রায় ৬ মাস ধরে ফেরার সে। এদিন তল্লাশী শেষ হওয়ার পর লগ্নিকারীরা সাইফুলকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। পরে বোলপুর থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। সাইফুল ইসলামের বক্তব্য, ‘‘আমাকে বাড়ির চাবি নিয়ে আসতে বলা হয়েছিল। এর বেশি কিছু জানি না। আমাকে কোন কিছু জিজ্ঞাসাও করা হয়নি। তবে এলএফএস কোম্পানির জন্যই অফিসারেরা এসেছিল।’’
Chit Fund In Bolpur
বোলপুরে চিট ফান্ডের হদিশ, হানা দিল আয়কর দপ্তর

×
Comments :0