CITU Haldia

শ্রেণি সংগ্রাম গড়ে তাড়াতে হবে চোর-ডাকাত, আহ্বান হলদিয়ার সমাবেশে

রাজ্য

সিআইটিইউ ১৩দশ রাজ্য সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশে তপন সেন ও কে হেমলতা। ছবি: দিলীপ সেন

অরিজিৎ মণ্ডল

আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই চোর-ডাকাতের শাসনকে হটাতে হবে। অন্য কোনও পথ নেই। ঐতিহাসিকভাবেই সত্য যে শ্রমিকশ্রেণিকে পরাজিত করা যায় না। শ্রেণি সংগ্রামই এরাজ্যে বামপন্থীদের শক্তি গড়েছিল। আজকে আবার সেই লড়াই গড়তে হবে।  
বৃহস্পতিবার হলদিয়ায় সিআইটিইউ রাজ্য সম্মেলনে কেন্দ্র করে আয়োজিত সমাবেশে এই আহ্বান জানিয়েছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তপন সেন। স্মার্ট মিটার বিরোধী আন্দোলনের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি।
সমাবেশে বক্তব্য রেখেছেন, সর্বভারতীয় সভাপতি কে হেমলতা। সভাপতিত্ব করেন সিআইটিইউ রাজ্য সভাপতি সুভাষ মুখার্জি। ৯ জুলাই সর্বভারতীয় ধর্মঘটকে সফল করার লক্ষ্য নিয়ে সম্মেলন সফল করার আহ্বান জানান রাজ্য সম্পাদক অনাদী সাহু। সংগঠনেরর ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদক মানিক দে-ও বক্তব্য রাখেন। বক্তব্য রেখেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
সমাবেশে শ্রম কোডের বিপদ ব্যাখ্যা করেন হেমলতা। তিনি বলেন, শ্রম কোড চালু হলে সংগঠন করাও অসম্ভব হয়ে যাবে। আরও কঠিন হবে ধর্মঘট করা। আরএসএস-বিজেপি’র এটিই উদ্দেশ্য, জীবিকার দাবিতে আন্দোলন স্তব্ধ করা। তাই শ্রমিকশ্রেণি এককাট্টা হয়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।  
হেমলতা বলেন, ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে আপনারা সব সংগঠন একজোটে করে দেখিয়েছিলেন সমাবেশ। দেশে এই হরতালও হচ্ছে কৃষক, খেতমজুর সহ বিভিন্ন সংগঠন এবং অংশের সমর্থনে। সব মেহনতি একজোট হচ্ছে সারা দেশে। 
তিনি বলেন, শ্রমজীবীর একতাকে ভাঙার জন্য চেষ্টা হচ্ছে। ধর্মের নামে ভেঙে দিতে চাইছে ঐক্য। যাতে শ্রমজীবী একজোটে অধিকারের দাবিতে একজোট হতে না পারে। যাতে ওদের শোষণের প্রক্রিয়া চলতে পারে মসৃণভাবে। সে কারণেই আজকের লড়াইয়ে জীবনজীবিকার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ সাম্প্রদায়িক বিভাজনের বিরুদ্ধে লড়াই।
হেমলতা বলেন, তামিলনাডুতে স্যামসাঙের কর্মীরা একজোটে লড়ে ইউনিয়ন গড়ার অধিকার আদায় করেছেন। বহু জায়গায় তা হচ্ছে। এমনকি গুজরাটেও একজোটে দাবি আদায়ের লড়াই হচ্ছে।
তপন সেন বলেন, এরাজ্যে চোর-ডাকাতের বাইনারিকে কায়েম রাখার ব্যবস্থা হচ্ছে। প্রশ্ন হলো, আমরা কিভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলে ঝেঁটিয়ে বিদায় করব। কেবল আক্ষেপ করে লাভ নেই। জনতাকে সচেতন করাটাই আজকের কাজ। সিআইটিইউ-কেই এই দায়িত্ব নিতে হবে।
সেন বলেন, পুঁজিবাদ সারা বিশ্বে লুট করে হাতে গোনা কয়েকটি কর্পোরেট মাফিয়ার হাতে সম্পদ তুলে দিচ্ছে। এই রাজনীতির প্রভাবেই সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলি আমাদের মধ্যে বিকাশশীল দেশগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে। আর আমাদের দেশের সরকার আমাদের স্বনির্ভরতার ক্ষেত্রকে দুর্বল করতে চাইছে। তিনি বলেন, ব্যবস্থার সঙ্কট আড়াল করতেই বিভাজনের রাজনীতি চলছে। ফলে এই লড়াই শুধু শ্রমিকের নয়, শুধু কৃষকেরও নয়। দেশের জন্য, দেশের জনগণের জন্য লড়াই। 
সাধারণ সম্পাদকের আহ্বান, ৯ জুলাই হলদিয়া, রাজ্যের শিল্পাঞ্চলে খেটে খাওয়া মানুষের সর্বাত্মক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। যাতে ধর্মঘট দৃশ্যমান হয়। সব অংশের কাছেই যাতে শ্রমজীবীর এই ধর্মঘট স্পষ্ট হয়। 

Comments :0

Login to leave a comment