অরিজিৎ মণ্ডল: হলদিয়া
২৫ বছর পর হলদিয়া শিল্প তালুকে সংগঠিত হচ্ছে সিআইটিইউ রাজ্য সম্মেলন। ১৩তম রাজ্য সম্মেলনের প্রক্কালে কঠিন সময়ের মুখে পড়তে হচ্ছে শ্রমজীবী মানুষের লড়াইকে। সিআইটিইউ নেতৃত্ব বারংবার বলছেন সেই কথা। গোটা দেশে মেহনতি মানুষের উপর আক্রমণ ছিল বরাবর। শ্রম আইনের মাধ্যমে আরও কোণঠাসা করা হচ্ছে শ্রমিক কর্মচারীদের। তাই স্লোগান উঠছে 'বিভেদ ভেঙে ঐক্য গড়ো', হকের দাবি আদায় করো, প্রতিরোধ তৈরি করো'।
হলদিয়া শিল্প বন্দর বামফ্রন্ট সরকারের পরিকল্পনার ফসল। একের পর এক শিল্প কলকারখানা গড়ে উঠেছিল বামফ্রন্ট সরকারের হাত ধরে। বর্তমানে সেই শিল্প তালুক ধুঁকছে। কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে শিল্পের কঙ্কালসার অবস্থার কথা।
বছর ত্রিশের স্থানীয় এক টোটো চালক বলছেন যে আমরা যখন ছোট ছিলাম বাপকাকাদের কাছে শুনেছি তোদের জন্য ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করেছে বাম সরকার। একের পর এক কারখানা হবে। হবে কর্মসংস্থান। কিন্তু পরিবর্তনের পর এখন এত উন্নয়ন যে একটাও নতুন কারখানা হয়নি। এখন টোটো চালাতে হচ্ছে। পরিবারের মুখে অন্ন দিতে হবে তো।
ওই টোটো চালকই দেখাচ্ছিলেন এখানে ট্রেড ফেয়ার হয়। কিন্তু শিল্প আসে না। বিজনেস সামিটের ঝংকার ওই টোটো চালকের স্বপ্নের থেকেও বেশি আলোকপ্রাপ্ত।
অবসর প্রাপ্ত হলদিয়া ডক কমপ্লেক্সের কর্মী বছর ৭৪ অবিনাশ চন্দ্র দাস জানাচ্ছেন, শুধু ডকের কঙ্কালসার অবস্থার তাই নয়। নতুন শিল্প হচ্ছেই না। মালিক শ্রেণি তৃণমূলের মাথাদের সাথে বোঝাপড়া করে শ্রমিক নিয়োগ করছে। কাউকে ৬মাস থেকে ১বছরের বেশি রাখছে না। স্থায়ী শ্রমিক নেই। সব অস্থায়ী শ্রমিক। তাঁদের নানা কলে ফেলে টাকা লুটে নিচ্ছে তৃণমূল। তৃণমূলের স্থানীয় শ্রমিক নেতারা এর বিরুদ্ধে একটাও কথা বলে না। তিনি বলেন, আগে ডকে প্রায় সাড়ে ৫ হাজারের বেশি স্থায়ী শ্রমিক কর্মচারী ছিল। বর্তমানে সেই সংখ্যা মেরেকেটে ৫০০।
নন্দীগ্রাম থেকে সমাবেশে এসেছিলেন সন্তু মণ্ডল সাথে স্ত্রী ও ৩ বছরের ছেলে। পেশায় নির্মাণ কর্মীদের পরামর্শদাতা। তিনি বলেন বিভাজনের রাজনীতি, শুভেন্দু অধিকারী যখন তৃণমূলে ছিলেন, তখন থেকেই তার বীজ বপন করা হয়েছে। এখন সনাতনী পক্ষে থেকে তিনি কথা বলেন। আদপে কাটমানি ছাড়া কিছুই বুঝতেন না। ১১ সাল থেকে বিজেপিতে যাওয়ার আগে পর্যন্ত নন্দীগ্রামের যুবকদের জন্য কিছুই করেননি। তাই কর্মসংস্থান প্রধান দাবি। জাতের নামে বিভাজন চলবে না। ভাতের লড়াই জোরদার করতে হবে।
Comments :0