উড়িশার জলেশ্বরে এক গহনার দোকান থেকে সোনার অলঙ্কার লুট করে পালানোর সময় ধরা পড়ল মেদিনীপুরের বিজেপি নেতা। অভিযুক্তের নাম সোমনাথ সাহু। মেদিনীপুর শহরের হবিবপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিজেপি যুব মোর্চার সম্পাদক পদে ছিলেন বলে জানা গেছে। ঘটনার পর অস্বস্তিতে পড়ে বিজেপি নেতৃত্ব দাবি করেন দলের কোনো পদে নেই সোমনাথ।
যদিও সোমনাথ সাহু’র সঙ্গে বিজেপি’র সর্বভারতীয় ও রাজ্য স্তরের নেতা, সাংসদ, বিধায়কদের সঙ্গে ছবি সামাজিক মাধ্যমে রয়েছে। সেগুলি সোমনাথ নিজেই সামাজিক মাধ্যমে পোষ্ট করেছেন। সাংসদ সুকান্ত মজুমদার, বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ছবি রয়েছে দলিয় কর্মসূচির। গত পৌরসভা নির্বাচনে অভিযুক্তের স্ত্রী স্বাতীলেখা দাস সাউ মেদিনীপুর শহরের বিজেপি দলের প্রার্থী হয়েছিলেন।
শুক্রবার দুপুরে ওড়িশার জলেশ্বরের একটি সোনার দোকানে ক্রেতা সেজে ঢোকেন সোমনাথ। তিনি কালো রংয়ের স্করপিও গাড়িতে চেপে দোকানে গিয়েছিলেন। বিভিন্ন ধরনের অলঙ্কার দেখতে থাকেন তিনি। সে সময়েই দোকানের কর্মীদের অন্যমনস্কতার সুযোগ নিয়ে প্রায় ১০০ গ্রাম সোনার অলঙ্কার হাতিয়ে গাড়িতে উঠে চম্পট দেন। খরিদ্দার সেজে দোকানে ঢুকে সোনার গহনা নিয়ে দৌড়ে পালানোর সেই সিসিটিভি ফুটেজও প্রকাশিত হয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় সোনার দোকান থেকে প্রায় একাধিক সোনার অলংকার হাতিয়ে দৌড়ে পালায় মাথায় কমলা রং এর ওড়না ঢাকা এক ব্যাক্তি। দ্রুত অন্য গাড়িতে চেপে ওই অভিযুক্তকে ধাওয়া করেন ওই দোকানের কর্মী এবং স্থানীয়রা। দোকানের সামনে কালো রংয়ের একটি দাঁড়িয়ে থাকা স্করপিও গাড়িতে চেপে পালানোর সময় পিছন থেকে মানুষ ধাওয়া করে। জলেশ্বর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে লক্ষণনাথ রোড সংলগ্ন এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডিভাইডারে ধাক্কা মেরে সোমনাথের গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় লোকজনই গাড়ির ভেতরে থাকা সোমনাথকে পাকড়াও করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। সেই খবর শনিবার এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। ওড়িশা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে লুঠ করা সোনার অলংকারের বাজার মূল্য ১৫ লক্ষ টাকারও বেশী। ধৃতকে প্রাথমিক জেরা করে জলেশ্বর থানার পুলিশ জেনেছে, একসময় মেদিনীপুর শহরের পাটনাবাজার এলাকায় সোনার কারিগর হিসেবে কাজ করতেন সোমনাথ। তিনি বিজেপি’র যুব মোর্চার একজন সক্রিয় কর্মী। বিগত কয়েক বছর ধরে যুব মোর্চার জেলা কমিটির সম্পাদক পদে রয়েছেন।
যে স্করপিও গাড়িটি করে পালাচ্ছিলেন যুবক সেই গাড়িতে করেই মহাকুম্ভে গিয়েছিলেন মেদিনীপুর শহরের বিজেপি দলের নেতারা। সেই গাড়ি সমেত এই সোনা ডাকাতি ব্যাক্তির সাথে মেদিনীপুর শহরের একাধিক নেতার মহাকুম্ভ যাওয়ার ছবিও উদ্ধার হয়। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই তদন্তে নেমেছে জলেশ্বর থানার পুলিশ। সোনা পাচার, গরুপাচার, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, খুন সহ সোনার অলংকার ডাকাতি’র ঘটনায় তৃণমূল ও বিজেপি দুই দলের নেতারা জড়িত থাকার ঘটনায় মেদিনীপুর শহরে রাজনৈতিক মহলে শোরগোল।
BJP leader Arrested
সোনা চুরির অভিযোগে উড়িশায় গ্রেপ্তার মেদিনীপুরের বিজেপি নেতা

×
Comments :0