অমিত কুমার দেব
পরিযায়ী শ্রমিকদের তো বটেই, তাঁদের পরিবারকেও আটক করল দিল্লি পুলিশ। বাংলা ভাষায় কথা বলাটাই তাদের অপরাধ। আর এই অপরাধে দিল্লি পুলিশের হাতে আটক ৩শিশু, এক মহিলা সহ কোচবিহারের মোট ৭ বাসিন্দা।
এঁদের নাম শামসুল হক, রেজাউল হক, রবিউল হক, রশিদা বেগম, মহম্মদ রুমান হক, রায়হান হক ও রুমানা খাতুন। এরা প্রত্যেকেই কোচবিহার জেলার দিনহাটা মহকুমার সাবেক ছিট মহলের বাসিন্দা।
মোট ৮জনকে আটক করা হলেও, পরবর্তীতে একজনকে ছেড়ে দেয় দিল্লি পুলিশ। যাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয় তার বাড়ি দিনহাটা বড় নাচিনা এলাকায়। এই ঘটনায় রীতিমত উৎকণ্ঠায় রয়েছেন দিনহাটা শহরের বলরামপুর রোড সংলগ্ন এলাকায় স্থায়ী ভাবে বসবাসকারী সাবেক ছিট মহলবাসীরা।
দিল্লিতে এখন বিজেপি সরকার। বিভিন্ন রাজ্যে আসীন বিজেপি সরকার পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলাদেশী তকমা দিয়ে আটক করছে। ওড়িশায় মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের ১৩ শ্রমিককে আটক করেছে বিজেপি সরকারের পুলিশ।
আটক পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবার বলছে যে বৈধ নথি থাকা সত্ত্বেও দিল্লি পুলিশ নানা ভাবে হেনস্তা করছে। শুধু তাই-ই নয়, নানা ভাবে তাদের ওপর অত্যাচার চালানো হচ্ছে। এমনকি শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে তারা জানান।
২০১৫ সালের ৩১জুলাই ভারত -বাংলাদেশ সীমান্ত চুক্তি কার্যকরী হয়। কিন্তু আজও প্রাক্তন বাংলাদেশী ছিটমহলবাসীরা স্বাধীন ভারতের অঙ্গ হয়েও না-নাগরিকের মতো দিন কাটাচ্ছেন। সংসদে সংবিধানের ১১৯তম সংশোধনীর পরেও তাঁরা ভারতের নাগরিকত্ব পাননি। আর তা নিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দুজনেই মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছেন। কেন্দ্রের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন জটিলতা তৈরি করেছে।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সিপিআই(এম) কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় এদিন বলেন, আমরা কোন রাষ্ট্রে বাস করছি! নানা ভাষা, নানা বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ এই দেশ। দিল্লিতে গিয়ে একজন বাঙালি কি বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারবেন না? এই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে তিনি বলেন, আসলে এভাবেই গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে সাধারণ মানুষের ওপর আক্রমণ নামিয়ে আনা হচ্ছে। এটা সংবিধান বিরোধী। এব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, দেশের সরকার যদি সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ না করে, তাহলে পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশাপাশি গণতন্ত্র প্রিয় মানুষ ঐক্যবদ্ধ ভাবে আন্দোলনে শামিল হবেন।
Comments :0