Mrinal Sen Centenary Celebration

শতবর্ষে মৃণাল সেন, সিনেমা প্রদর্শন এবং বিশ্লেষণ

কলকাতা

তিনি এমন একজন কিংবদন্তি যার হাত দিয়ে আন্তর্জাতিক উৎকর্ষ ছুঁয়েছিল ভারতীয় সিনেমা। তাঁর চিন্তায় আ্যলাঁ রেনে, জাঁ লুক গোদার, ত্রুফোঁ থেকে সোফিবা লরেন, গার্সিয়া মার্কেজ পদচারনা করেন অথচ শিকড় ছিল মাটির বুকে। জাতীয় আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ঘটনাকে কাঁটাছেড়া করেছেন, তা সে ভিয়েতনাম মুক্তিযুদ্ধই হোক অথবা সোভিয়েত পতন-, অনায়াস দক্ষতায় সেলুলয়েডে জুড়ে দিয়েছেন বৃহত্তর রাজনৈতিক ক্যানভাস। তিনি মৃণাল সেন। তাঁর জন্ম শতবর্ষ পালন হতে চলেছে কলকাতায়। আয়োজনে ব্লু চক স্টুডিয়ো। স্থান আলিয়ঁস ফ্রঁসে দিউ বেঙ্গল।

 

কলকাতা ৭১, ভুবন সোম এবং অন্তরীণ- তিন সময়ের তিনটি ছবি প্রদর্শিত হবে। সঙ্গে উপরি পাওনা মৃণাল সেনে সিনেমারই নায়ক অঞ্জন দত্তের সাথে আলাপচারিতা। আলোচনা করবেন শেখর দাশ, সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ের মত সিনেমাবেত্তারাও। এছাড়াও হিরণ মিত্রের স্কেচের প্রদর্শনী হচ্ছে মৃণালবাবুর সিনেমাগুলো ঘিরে। দেখানো হবে ব্লু চক ষ্টুডিও এবং ট্রামলাইন-এর বানানো একটি তথ্যচিত্র, যা জানাবে কলকাতা মৃণাল সেনকে কিভাবে মনে রেখেছে।

মৃণাল সেন এক বিশেষ সময়ের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। যে সময়টি ছিল ভারতে কমিউনিস্ট আন্দোলনের চড়াই উতরাইয়ের টালমাটাল সময়। আজীবন কমিউনিজমের প্রতি তাঁর আস্থা অটুট থাকলেও কখনও আনুষ্ঠানিকভাবে পার্টির সদস্যপদ নেননি তিনি। যদিও পার্টির সাংস্কৃতিক শাখা ভারতীয় গণনাট্য সংঘের সাথে যুক্ত হয়েছিলেন তিনি। পরে রাষ্ট্রপতির মনোনীত সদস্য হিসেবে মৃণাল সেন ভারতের পার্লামেন্টেও গেছেন।
১৯৫৫ সালে মৃণাল সেনের প্রথম পরিচালিত ছবি ‘রাতভর’ মুক্তি পায়। এ ছবিটি বেশি সাফল্য পায়নি। তার দ্বিতীয় ছবি ‘নীল আকাশের নিচে’ তাকে স্থানীয় পরিচিতি এনে দেয়। তার তৃতীয় ছবি ‘বাইশে শ্রাবণ’ থেকে তিনি আন্তর্জাতিক পরিচিতি পান। ১৯৬৯ সালে তার পরিচালিত ছবি ‘ভুবন সোম’ মুক্তি পায়।


চারের দশক জুড়ে পদার্থবিজ্ঞান থেকে সিনেমার যাত্রায় তাঁর দীর্ঘ সঙ্গী ছিল ইম্পেরিয়াল লাইব্রেরী। রুডলফ আর্নহেইম, ভ্লাদিমির নিলসেন এর পাশাপাশি ১৯৪৪ সালে বিজন ভট্টাচার্যর "নবান্ন", ১৯৪৬ সালে আই পি টি এ র প্রযোজনায় খ্বাজা আহমেদ আব্বাসের "ধরতি কে লাল", ১৯৫০ এ নিমাই ঘোষের "ছিন্নমূল" তাঁর আঞ্চলিক দর্শনকে সংগ্রামী ভাষা দিয়েছিল। ১৯৪১ এ রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুদিনে নিমতলা ঘাটে হাজার শোকাহত মানুষের ভীড়ে একটি শিশুকে পদপিষ্ট হয়ে থেঁতলে যেতে দেখেছিলেন। শিশুটিকে তাঁর বাবা দাহ করতে নিয়ে এসেছিলেন।  এক অস্থিরতার সময়কে মহীরুহের শাখা মেলে ধরতে চেয়েছিলেন তিনি তাঁর ‘‘তৃতীয় ভুবন’’এ- যার দিকে মানুষ অপার বিস্ময়ে তাকিয়ে থেকে শুকিয়ে নিতে চাইবে টাটকা বিস্ময়।

সময়সূচী: ৯, ১০ এবং ১১ই অগাস্ট ২০২৩। সন্ধ্যা ৬টা থেকে। আলিয়ঁস ফ্রঁসেস দিউ বেঙ্গলে, ৫৭ এ, পার্ক স্ট্রিট, পার্ক ম্যানশনে। প্রবেশ অবাধ।

Comments :0

Login to leave a comment