‘‘প্লাস্টিক পদার্থের দূষণে গ্রহের দম আটকে যাচ্ছে। মানুষ এবং জীবজগত এবং প্রকৃতির টিকে থাকার সমস্যা করে দিয়েছে।’’
বিশ্ব পরিবেশ দিবসের বার্তায় একথা বলেছেন রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ। এ বছরের বিশ্ব পরিবেশ দিবসে প্লাস্টিক দূষণকে হারানোর ডাক দিয়েছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ। গত দশ বছরে এই নিয়ে তৃতীয়বার এমন আহ্বান।
গুতেরেজ বলছেন, ‘‘প্লাস্টিক বর্জ নদীর গতিপথ আটকে দিচ্ছে, দূষিত হচ্ছে সাগর। বন্যপ্রাণের বিপদ ডেকে আনছে।’’ 
গুতেরেজ বলছেন, ‘‘আন্তর্জাতিক স্তরে ফের ব্যবহারের যোগ্য প্লাস্টিক উপকরণ তৈরির জন্য জোর দেওয়া হচ্ছে। বারবার ব্যবহার করার সুযোগ থাকলে বর্জের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। সমন্বয় গড়ে এই দূষণ আমরা বন্ধ করতে পারি।’’ 
সোশাল মিডিয়ায় রাষ্ট্রসঙ্ঘ ভিডিও পোস্ট করে বলেছে প্লাস্টিক দূষণ রোধ করতে প্রকৃতির নিজস্ব নিয়ম থেকে শেখা দরকার। কৃত্রিম মেধা এই দূষণ রোধ করবে না। করবে আমাদের যৌথ সক্রিয়তা। 
রাষ্ট্রসঙ্ঘের এবারের বক্তব্য যদিও নতুন কিছু নয়। বেশিরভাগেরই লক্ষ্য ব্যক্তি নাগরিক। যেমন বলা হয়েছে বাজার দোকান করার সময় নিজের ব্যাগ ব্যবহার করুন। যাতে প্লাস্টিকের থলে নিতে না হয়। এঁটো প্লাস্টিকের পাত্রে না ফেলে কাচের বোতলে ফেলুন। জলের জন্য প্লাস্টিকের বোতল ব্যবহার না করে বারবার ব্যবহার করা যায় এমন বোতল রাখুন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন ২০৫০’র মধ্যে সমুদ্রের মাছের তুলনায় প্লাস্টিক বেশি হয়ে উঠবে। বছরে গড়ে ৭৫ থেকে ১৯৯ মিলিয়ন (দশ লক্ষ) টন প্লাস্টিক জমা হচ্ছে সমুদ্রে। সমস্যা হচ্ছে প্লাস্টিক পদার্থ প্রকৃতিতে মিশে যায় না। 
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের তথ্য, ১৯৫০ সালে বিশ্বে মাত্র ২০ লক্ষ টন প্লাস্টিক উৎপন্ন হতো। চলতি দশকের গোড়াতেই সেই অঙ্ক বেড়ে হয়েছে ৪৫০ মিলিয়ন টন। 
বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে প্লাস্টিকের উপকরণ বিভিন্ন কাজে দরকারি। জীবনযাপনের ধরনের কারণেও চটজলদি দরকারে প্লাস্টিক ব্যবহার হচ্ছে। এই ফোরাম বলছে, প্লাস্টিকের বিকল্প উপকরণ দিয়ে পণ্যসামগ্রী তৈরির দিকে জোর দিলে কমানো যায় প্লাস্টিকের ব্যবহার। 
তবে ব্যক্তি নাগরিকদের ওপর দূষণ রোধের দায় চাপিয়ে দিলে কাজের কাজ খুব কমই হবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের বড় অংশের। জাতীয় নীতিতে মুনাফা এবং ব্যবসায়িক প্রয়োজনের বিচার করে প্লাস্টিকের ব্যবহারকে অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। যেমন ভারতে চটশিল্পকে ফের জোরালো করার মতো জাতীয় স্তরে কোনও নীতি নেই। অথচ, অনেকাংশে প্লাস্টিক পণ্যের বিকল্প হতে পারে পরিবেশ বান্ধব চট।