রাজনীতির বর্বর খেলার শিকার কালীগঞ্জের ১০ বছরের শিশুকন্যা তামান্না খাতুন। বিজয়োল্লাসে উন্মত্ত তৃণমূল কর্মীদের মিছিল থেকে ছোঁড়া বোমায় প্রাণ গিয়েছে তার। সোমবার, কালীগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের পলাশির মোলান্দি গ্রামে ঘটেছে এই বর্বরোচিত ঘটনা।
মঙ্গলবার সকালে পুলিশে ভরসা নেই সিবিআই তদন্তের দাবি জানালেন কালীগঞ্জে তৃণমূলের বোমায় নিহত হওয়া নাবালিকার মা সাকিনা বিবি। ঘটনার পর কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার তাঁর সঙ্গে দেখা করে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের আশ্বাস দেন।  তবে তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন পুলিশ যদি ব্যাবস্থা না নেয় তবে আদালতে যাবো। সিবিআই দিয়ে তদন্তের দাবি জানাবো। নিহত নাবালিকার বাবা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, পুলিশের অভিযুক্তদের ধরার সাহস হবে না। সিপিআই(এম)’র সমর্থক তাদের ভোট দেওয়ার কারণেই তৃণমূল বিজয়উল্লাসের মিছিল থেকেই বাড়িতে বোমা মেরে মেয়েকে হত্যা করেছে।
মঙ্গলবার কৃষ্ণনগর পুলিশের তরফে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে জানানো হয়েছে, নাবালিকার মৃত্যুর ঘটনায় চার অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 
ধৃতেরা হলেন আদর শেখ, মানোয়ার শেখ, কালু শেখ এবং আনওয়ার শেখ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে তদন্ত চলছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। ধৃতদের মঙ্গলবার আদালতে পেশ করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। 
মৃতার মা বলেন ‘‘আমার মেয়েকে ওরা কেড়ে নিলো। আমরা সিপিএম করি। সেই কারণে আমাদের বাড়িতে ওরা বোমা মারলো। আমি দেখেছি কারা বোমা ছুড়েছে। ওদের সকলের মুখ চেনা, সবাই তৃণমূল করে। ’’তিনি প্রশ্ন তোলেন কেন মাত্র চার জন গ্রেপ্তার। পুলিশ যদি ব্যাবস্থা না নেয় বাকি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার না করে তবে আদালতে যাবো। সিবিআই তদন্তের দাবি জানবো।  
গ্রামেরই মানুষজন বলছেন, এই ঘটনার জন্য দায়ী তৃণমূল। মোলান্দির গ্রামেরই বাসিন্দা বাদশা শেখ বলছিলেন,‘‘তৃণমূলের ব্লক সভাপতি দেবব্রত মুখার্জির নির্দেশে ভোট গণনা শেষ হওয়ার আগেই তৃণমূলের বিজয়োল্লাস থেকে বোমা ছোঁড়া শুরু হয়। সিপিআই(এম) সমর্থকদের তাড়িয়ে বেড়াতে থাকে দুষ্কৃতীরা। ভয়ে লুকোতে থাকে লোকজন। সেই সময় এই সিপিআই(এম) সমর্থক পরিবারের মেয়েটার দিকে তাক করে বোমা মারে। জেনেবুঝেই ওরা মারে। একরত্তি শিশুকেও ওরা রেহাই দেয়নি। ওরা মানুষ?’’