বিদ্যুৎ বিভাগের গাফিলতির কারণে বিদ্যুৎহীন হয়ে চরম সংকটে পড়েছিলেন মানিকচক ব্লকের এনায়েতপুর অঞ্চলের বাসিন্দারা। এলাকার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনে নেমে সিপিআইএম নেতা কর্মীরা। শিকার হয়েছিল পুলিশী অত্যাচারের। জেলেও যেতে হয়েছিল। আন্দোলন থামানো যায় নি। বিদ্যুৎ পর্ষদ বাধ্য হয় বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করতে।
সেই আন্দোলনের বর্ষপূর্তিতে এনায়েতপুরে সমাবেশ হয়েছে শুক্রবার। বক্তব্য রেখেছেন সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের রাজ্য সভাপতি তুষার ঘোষ, এসএফআই রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে। এনায়েতপুর বাসস্ট্যান্ডে সভা পরিচালনা করেন সমীরণ মুখার্জি।
এনায়েতপুর হাইস্কুলের ছাত্রীদের ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের ঘটনাও ধরা পড়েছিল। ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও তাঁর স্বামী বিদ্যালয় পরিচালন সমিতির সভাপতি তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সুনন্দ মজুমদারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামে বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। সঙ্গে ছিল এসএফআই। প্রতিবাদের জেরে সুনন্দ মজুমদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। চাপে পড়ে টাকা ছাত্রীদের ফেরাতে বাধ্য হয় অপরাধীরা। সেই আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্রছাত্রীদের অভিনন্দন জানানো হয় সভায়।
এদিন একাধিক দাবিও তোলা হয় ফের। আদালতের নির্দেশ মতো অবিলম্বে ১০০ দিনের কাজ চালু, স্মার্ট মিটার বাতিল ও বিদ্যুৎ পরিষেবা উন্নয়ন, গঙ্গা নদী ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী কাজের মতো দাবিও উঠেছে। গঙ্গার ওপর মানিকচক রাজমহল সেতু, নুরপুর হিমঘর, মানিকচক হাসপাতালের উন্নয়ন ও ব্লাড ব্যাঙ্ক, পরিযায়ী শ্রমিকদের নিরাপত্তার দাবিতে সরব হন বক্তারা। অংশ নেয় সিআইটিইউ, কৃষক সভা, ভারতের গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি, ডিওয়াইএফআই-ও।
সভায় তুষার ঘোষ বলেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের নীতির কারণে খেতমজুর সহ সর্বস্তরের শ্রমজীবী মানুষ কাজ হারাচ্ছেন। রাজ্যের মানুষকে কাজের খোঁজে ভিন্ন রাজ্যে যেতে হচ্ছে। কাজে গিয়ে যেমন বিভিন্ন ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছেন। বাংলাভাষী বিদ্বেষের মুখে পড়তে হচ্ছে। অথচ যদি ১০০ দিনের কাজ রাজ্যে চালু থাকত তবে ভিন রাজ্যে যেতে হতো না।
তিনি বলেন, রাজ্যের শাসক দলের দুর্নীতি এমন জায়গায় পৌছেছে যে একে অপরকে খুন করছে। এর বিরুদ্ধে মানুষকে সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
দেবাঞ্জন দে বলেন, একদিকে শিক্ষায় দুর্নীতি, শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি যেমন শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করছে, রাজ্য সরকার তেমনি কলেজে কলেজে বহিরাগত তৃণমূলী ছাত্র নেতাদের দাদাগিরি চরম সংকট নামিয়ে এনেছে। এর বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজ আন্দোলনে পথে নেমেছে। আগামীতে এই আন্দোলন আরো তীব্র করতে হবে।
সমাবেশ থেকে ইয়ামানুদ্দিনের নেতৃত্বে ৫ জনের এক প্রতিনিধি দল গিয়ে এনায়েতপুরের প্রধানের কাছে দাবিগুলো তুলে ধরে স্মারকলিপি দেন।
Enayetpur
বিদ্যুৎ, কন্যাশ্রী: দুই আন্দোলনের সাফল্য পালন এনায়েতপুরে

×
Comments :0