প্রতীম দে
বামপন্থা মানে গরিব মেহনতি মানুষকে ভাষা ধর্ম নির্বিশেষে একজোট করে অধিকারের লড়াই। ৯ জুলাই সেই লড়াই দেখেছে দেশ। আর দক্ষিণপন্থা মানে রাম মন্দির বা জগন্নাথ মন্দিরের নামে ভাগাভাগি। মানুষকে ভাগ করে অধিকার কেড়ে নেওয়া। বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিককে বাংলাদেশি বলে নির্যাতন সেই রাজনীতির অংশ। কড়া প্রতিবাদ হবে সর্বত্র।
মঙ্গলবার যাদবপুরের মিছিলের শেষে গড়িয়া মোড়ে সংক্ষিপ্ত সভায় এই বার্তা দিয়েছেন সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ। বক্তব্য রেখেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী।
সেলিম বলেছেন, আজকে মিছিল করতে হচ্ছে কারণ গত কয়েক বছর ধরে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বিভাজনের রাজনীতির চাষ করা হচ্ছিল। তিনি বলেন, মমতা কাল মিছিল করবেন। কিন্তু ওঁর পুলিশ কোচবিহারে গিয়ে আসাম সরকারের হয়ে এনআরসি’র নোটিশ ধরাচ্ছে এ রাজ্যের নাগরিককে, উনি জানতেন না?
সেলিম বলেন, যে ভাষায় জাতীয় সঙ্গীত লেখা হচ্ছে সেই ভাষায় কথা বললে বিদেশি হয় কি করে? জনগণনা করে কেন্দ্র। আসামের মুখ্যমন্ত্রী বলেন কি করে জনগণনায় মাতৃভাষা বাংলা লিখলে বাংলাদেশে পাঠানো হবে? অবেকদিন ধরে এসব চলছে, রাজ্যের বিধানসভায় পরিযায়ী শ্রমিকদের এই নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রস্তাব গৃহীত হয়নি কেন?
সুজন চক্রবর্তী বলেন, আরএসএস বরাবর বাংলা বিরোধী, বাঙালি বিরোধী। আরএসএস-বিজেপি গরিব মানুষ বিরোধী। আমাদের সবাইকে এক হতে হবে।
চক্রবর্তী বলেন, বাংলা ভাষায় কথা বলে পৃথিবীতে ৩৬ কোটি মানুষ। এই দেশে বাঙালিদের হেনস্থা করা হচ্ছে এটা মানা যাবে না। আগামীকাল মুখ্যমন্ত্রী মিছিল করবেন। কিন্তু গত বেশ কয়েক বছর ধরে বাঙালিদের অনুপ্রবেশকারী বলা হয়েছে, হেনস্তা করা হয়েছে। তিনি পথে নামেননি। ২০০৩ সালের নাগরিকত্ব আইনের সংশোধনী নিয়ে প্রতিবাদ করেননি। বিজেপি সরকারের ওই সংশোধনীতে এনআরসি’র ইঙ্গিত ছিল। এই আইন যখন হয় মমতা তখন কেন্দ্রের মন্ত্রী ছিলেন। পরিযায়ী শ্রমিকের ওপর যখন আক্রমণ হয়েছে বামপন্থীরা পথে নেমেছেন। সিপিআই(এম) সাংসদ, নেতানেত্রীরা লড়াই করেছেন। আমরা তখন মমতাকে দেখিনি।
সেলিম বলেন, মমতা এবং আরএসএস মানুষের মধ্যে ভাগ করেছে ধর্মের নাম করে। এরা ভাষা, খাদ্য দিয়ে মানুষকে ভাগ করে বিদ্বেষ তৈরি করে। বিজেপি কখনো আমাদের যুক্ত রাষ্ট্রীয় কাঠামো মানেনি। আরএসএস আর বাংলাদেশের জামাতের রাজনীতি এক, এরা মানুষকে ভাগ করে। আমেরিকা থেকে ভারতীয়দের যখন তাড়িয়ে দিচ্ছে তখন কিন্তু চুপ থাকে মোদী সরকার। কারণ এরা তা সমর্থন করে। প্রতিবাদ চলবে।
Comments :0