ভ্রমণ — মুক্তধারা, বর্ষ ৩
অজানা দিল্লী
অভীক চ্যাটার্জী
প্রথম পর্ব
দিল্লী, রাজধানী শহর, বা বলা যায় শহরের রাজধানী। এ বছর, মে মাসে যুদ্ধের বাজারে হঠাৎ ই সুযোগ হয়ে যায় আমার এ শহর ভ্রমণের। আমি ঠিক করেছিলাম এ শহরকে একটু অন্য ভাবে ঘুরে দেখার। না, যে ভাবে সকলে ঘোরে, সেভাবে নয়, একটু অন্য ভাবে, একটু অন্য পথে এ শহরের গন্ধ নেওয়ার।
দিল্লী বললে তো সেই কুতুব মিনার লাল কেল্লা লোটাস টেম্পল এসবই মনে পড়ে। কিন্তু আমার দিল্লী ভ্রমণ শুরু হয় জাহাজ মহল দিয়ে। লোদি রাজবংশের এই জাহাজের মত দেখতে সরাইখানাটি ছিল তাদের আনন্দের অবলম্বন। অধিকাংশ ভেঙে পড়লেও যা বাকি আছে, তাও টেনে নিয়ে যায় সেই পঞ্চদশ শতকের আভিজাত্যের কাছে।
সেখান থেকে আমি চলে গেলাম সেনাপতি আদম খাঁ এর সমাধিসৌধে। ভুলভুলাইয়া নামে পরিচিত এই জায়গাটি যদিও ASI - এর তত্ত্বাবধনাধীন, কিন্তু সংরক্ষণের অভাবে একেবারেই মলিন। এটি মূলত কুতুব মিনারের পেছন দিকে অবস্থিত।
সেখান থেকে আমরা কুতুব মিনারের একটা ঢুঁ মেরে আমরা চলে গেলাম জামালি কমলি মসজিদে। লোদি সময়ের এই স্থাপত্যটি মূলত সুফি সন্ত জামাল খানের সমাধি। আরও শোনা যায় এই জায়গাটি দিল্লির অন্যতম ভূতুড়ে জায়গার মধ্যে একটি।
এর পর আমি চলে গেলাম সাতপুলা দেখতে। কম বেশি সাতশো বছরের পুরোনো লোদি সময়ের বাঁধটি সাত খানা দ্বার সমৃদ্ধ , এবং অন্যান্য প্রাচীন কারিগরি বিদ্যার প্রমাণ বহন করে।
আচ্ছা, চাঁদনী চক তো সবাই শুনেছি আমরা। কিন্তু, আমরা অনেকেই জানি না এই বাজারের মধ্যেই রয়ে গেছে এক প্রবাদ প্রতিম মানুষের বাসস্থান। তিনি হলেন মির্জা গালিব। চাঁদনী চক এর গলি তস্ব গলির মধ্যে ছোট্ট সে বাড়িতে ঢুকলে সময় যেনো থমকে যায়। কানে ভেসে আসে আজানের সুর। আর এক অশীতিপর বৃদ্ধ লিখে চলেছেন একেরপর এক শায়েরি।
" উমরভর গালিব ইহি ভুল করতা রহ।
ধূল চেহেরে পর থি আউর আয়না সাফ করতা রহ।।"
চলবে
Comments :0