কাজের পরিবেশ নিয়ে সংস্থায় অভিযোগ ব্যবস্থা চালু রয়েছে। কিন্তু অভিযোগ জমা পড়ছে অত্যন্ত কম। বিশেষ করে বেসরকারি সংস্থায় এই হার ধর্তব্যের মধ্যে আসছে না। অথচ সরকারি তথ্য জানাচ্ছে, বেতন প্রাপ্ত কর্মীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে। তার জন্য অনেকাংশেই দায়ী করা হচ্ছে অস্বাভাবিক কাজের চাপের মতো বিরূপ পরিস্থিতিকে।
আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং (ইওয়াই)’র কর্মী চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট অ্যানা সেবাস্তিয়ানের মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসায় নড়েচড়ে বসতে হচ্ছে বিভিন্ন অংশকে। তদন্তে নেমেছে কেন্দ্রীয় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রকও। তবে এই অভিজ্ঞতা একেবারেই নতুন নয় বলেই জানাচ্ছে বহু অংশ। বরং কাজের বাজারে সঙ্কটের পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে বেশিরভাগ বড় সংস্থা, একদিকে নতুন নিয়োগ কমিয়ে দিয়েছে। আরেকদিকে কর্মরতদের ওপর কাজের চাপ বাড়ছে।
বাণিজ্য বিষয়ক পত্রিকা ‘হিন্দু বিজনেস লাইন’ শেয়ার বাজারে নাম লেখানো ওপরের সারির বিভিন্ন সংস্থার তথ্য বিশ্লেষণ করেছে। দেখা যাচ্ছে, ‘নিফটি ৫০’ সংস্থাগুলির মধ্যে মোট কর্মীর অভিযোগ জানানোর হার ০.০১ শতাংশ থেকে ৭.৪ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে।
সরকারি তথ্য যদিও জানাচ্ছে, নির্দিষ্ট বেতন পাচ্ছেন এমন কর্মীদের মধ্যেও আত্মহত্যার প্রবণতা মারাত্মক বাড়ছে। ২০২২ সালে এই ক্ষেত্রের কর্মীদের মধ্যে ১৬ হাজার ৩৬৪ জন আত্মঘাতী হয়েছেন। এঁদের ৭০.২ শতাংশ বেসরকারি ক্ষেত্রে কর্মরত ছিলেন। অথচ মানবাধিকার লঙ্ঘন, শ্রমবিধি লঙ্ঘন, অন্যায্য ব্যবসায়িক লেনদেনে যুক্ত থাকতে বাধ্য করার মতো বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ জানানোর সুযোগ রয়েছে।
দেখা যাচ্ছে বেসরকারি ক্ষেত্রে অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কে এমন অভিযোগ জানিয়েছেন কর্মীদের ১৩১ শতাংশ, কারণ কয়েকজন একাধিক দফায় অভিযোগ জানিয়েছেন। মারুতি সুজুকিতে ৭.৪ শতাংশ, আলট্রাটেক সিমেন্টে ৪.৮ শতাংশ। কিন্তু প্রবল প্রতাপশালী আদানি এবং রিলায়েন্স গোষ্ঠীর সংস্থাগুলিতে কোনও অভিযোগই জমা পড়েনি।
সংশ্লিষ্ট অংশ বলছে, পরিবেশের মধ্যেই কর্মীদের সন্ত্রস্ত করে রাখা হচ্ছে। স্থায়ী কাজ তুলে দিয়ে আউটসোর্স করা প্রবণতায় ঢালাও সরকারি অনুমোদন সেই ভয়কে গভীর করছে। অভিযোগ জানালেও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না বহু ক্ষেত্রেই। সব মিলিয়েই সঙ্কট বাড়ছে।
WORKING CONDITION
আত্মহত্যা বাড়লেও কাজের পরিবেশ ঘিরে অভিযোগ জমা সামান্যই

×
মন্তব্যসমূহ :0