রাজ্যের শ্রম আইন সংস্কার করে দিনে ১০ ঘন্টা কাজের ফরমান জারি করল অন্ধ্র প্রদেশ সরকার। মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর সরকারের এই সংশোধনীতে বলা হয়েছে বেসরকারি দপ্তর এবং কারখানার জন্য এই বিধি চালু হবে।
এই আইনে মহিলাদের কাজের সময়েরও পরিবর্তন করা হয়েছে। সন্ধে ৭টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত নাইট শিফট করতে পারবেন মহিলারা।
কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকারের শরিক চন্দ্রবাবু নাইডু সরকার কড়া বিরোধিতার মুখে পড়েছে। দেশজুড়ে কেন্দ্রের শ্রমকোডের বিরুদ্ধে ৯ জুলাই ধর্মঘট আগেই ডেকেছে বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন। শ্রম কোডেই কাজের সময়, ন্যূনতম মজুরি, সংগঠিত হওয়ার অধিকারের মতো শ্রমজীবীর পক্ষে প্রয়োজনীয় শর্তগুলি কেড়ে নেওয়ার অভিযোগে সরব সিআইটিইউ’র মতো বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন।
অন্ধ্র প্রদেশে শ্রমিক আন্দোলনের অভিযোগ, রাজ্যের এই সিদ্ধান্তের ফলে বেসরকারি সংস্থাগুলি শোষণের আরও সুযোগ পেয়ে গেল। এমনিতেই চালু বিধি ভেঙে আট ঘন্টার বেশি কাজ করতে বাধ্য করানো হয় শ্রমজীবীদের। এবার আরও অবাধ হবে শোষণ।
তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে চন্দ্রবাবু নাইডু সরকারের যুক্তি, এই সিদ্ধান্তের ফলে বিনিয়োগ বাড়বে। বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ তৈরি হবে। ফলে কর্মসংস্থানও বৃদ্ধি পাবে। এই সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকে নেওয়া হয়েছে।
চন্দ্রবাবু নাইডুর দল তেলুগু দেশম পার্টি বলেছে, শ্রম আইনের এই পরিবর্তনের ফলে অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ও উন্নয়নের বৃহত্তর লক্ষ্য অর্জিত হবে।
মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু জানিয়েছেন, "এই সিদ্ধান্ত কর্ম-জীবনের ভারসাম্য উন্নত করা এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধির করার লক্ষ্যে কাজ করবে।"
উদারবাদী অর্থনীতির গোটা পর্বেই শ্রম আইনের ওপর আঘাত হয়েছে। তবে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে আসীন সরকারের মেয়াদে ‘স্বচ্ছন্দে ব্যবসা’ নীতিতে এই আক্রমণ তীব্র হয়েছে। সিআইটিইউ বারবারই বলেছে যে শ্রমকোড সংসদে পাশ হয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি না হলেও বিভিন্ন রাজ্য এবং কেন্দ্র নানাভাবে তার প্রয়োগ করে চলেছে।
অন্ধ্র প্রদেশের তথ্য ও জনসংযোগ মন্ত্রী কে পার্থসারথি জানিয়েছেন যে রাজ্যের শ্রম আইনে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রীসভার বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘‘যে ৫৪ নম্বর ধারায় দিনে ন’ঘণ্টা ডিউটির কথা বলা হয়েছে, সেটি ১০ ঘণ্টা করে দেওয়া হবে। ৫৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী, পাঁচ ঘণ্টা কাজের পর এক ঘণ্টা বিশ্রাম পেতেন কর্মচারীরা। সেই সময়সীমাও বাড়িয়ে ছ’ঘণ্টা করে দেওয়া হয়েছে।’’
এর আগে ইনফোসিসের প্রধান নারায়ণমূর্তি দিনে ১৪ ঘন্টা কাজের পক্ষে সওয়াল করেন। আবার আমেরিকায় টেসলার মালিক এলন মাস্ককেও সেই একই সুরে সরব হতে দেখা গিয়েছে। দেখা গিয়েছে শ্রমিকদের সুবিধা বাড়ানোর যুক্তি দয়ে পরিবর্তন হলেও বাস্তবে তার ফল মেলেনি। অর্থনীতিরও উন্নয়ন হয়নি। শ্রমিকের প্রকৃত মজুরি বাড়েনি। বরং, বিশ্বে এবং ভারতের মতো দেশগুলিতে লাফিয়ে বেড়েছে বৈষম্য।
10 hours work
দিনে ১০ ঘন্টা কাজ বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত অন্ধ্রে, তীব্র ক্ষোভ

×
Comments :0