তপন বিশ্বাস :ইসলামপুর
মহেশতলায় চোর অপবাদ দিয়ে কিশোরকে উল্টো করে ঝুলিয়ে ইলেকট্রিক শক দেওয়ার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সহ গ্রেপ্তার তিন। মহেশতলার উলটো করে ঝুলিয়ে মারধর করা কিশোরের ভিডিও পাওয়ার চারদিন পরে ঘটনায় মূল অভিযুক্ত কাপড় রঙ করা কারখানার মালিক শাহেনশা সহ দু'জনকে মুম্বাই থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবীন্দ্রনগর থানার পুলিশ এবং ডায়মন্ড হারবার থানার স্পেশাল অপারেশনাল গ্রুপের যৌথ অভিযানে বৃহস্পতিবার মুম্বাইয়ের থানে থেকে শাহেনশা ও ফিরোজ সহ তাদের ভাগ্নেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে এখনও পুলিশ খোঁজ পায়নি আক্রান্ত কিশোরের। ধৃতরাই যে অভিযুক্ত তা নিশ্চিত করতে মুম্বাই থেকে ভিডিও কলিং করে আক্রান্ত আরেক কিশোর আনাসরকে। পুলিশ মোবাইল টাওয়ারের সূত্র ধরেই মুম্বাই পাড়ি দেয় অভিযুক্তের সন্ধ্যানে।
এদিন মহেশতলা থানার পক্ষ থেকে পরিবারকে ফোন করে তিনজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানায়। এরপরে পরিবারের সদস্যরা ইসলামপুর জেলা পুলিশ দপ্তরে যোগাযোগ করে। সেখানে থেকে তাদের জানিয়ে দেওয়া হয় ওই তিনজন এদিন গ্রেপ্তার হয়েছে। এরপর ওই দুই কিশোরের বাবা দিল মহম্মদ বলেন, ‘‘এবার আমরা আশাবাদী যে আমাদের ছোট ছেলে শামসাদকে এবার খুঁজে পাবো। আদৌ আমরা নিশ্চিত নই যে সে এখনও বেঁচে আছে কি নেই। পুলিশ আনসারকে উদ্ধার করতে পারলেও শামসাদ এখনও নিখোঁজ। বিষয়টি আমাদের ভাবাচ্ছে।’’
আক্রান্ত দুই কিশোরের মা হাসিনা খাতুন বলেন, ‘‘আমার ওই দুই ছেলে স্থানীয় একটি হাই মাদ্রাসাতে পড়ে। আনসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্র এবং শামসাদ ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। হাতে কিছু টাকা আসবে এই লোভ দেখিয়ে শাহেনশা ওই দুই ছেলেকে কাজের টোপ দেয়। বড় ছেলের বেতন ঠিক হয়েছিল ১০ হাজার টাকা এবং ছোট ছেলের বেতন ঠিক হয়েছিল ৮ হাজার টাকা। গরমের ছুটিতে এক মাস কাজ করে ঈদুজ্জোহাতে বাড়ি ফিরে আসার কথা ছিল দুজনের। কিন্তু তার আগেই ছেলেকে মোবাইল চোরের অপবাদ দিয়ে বৈদ্যুতিক শক লাগায় এবং বড় ছেলে ঘটনার পর উদ্ধার করতে পারলেও থেকে ছোট ছেলে সেই থেকে নিখোঁজ রয়েছে। জানিনা আদৌ সে বেঁচে আছে কিনা।’’
আক্রান্ত কিশোরের মায়ের আরও বলেন, ‘‘শাহেনশা ছোট ছেলেকে উল্টো করে ঝুলিয়ে শক দেওয়ার ভিডিও পাঠিয়ে হারিয়ে যাওয়া মোবাইল বাবদ ৩ লক্ষ টাকা দাবি করে। তাকে বারবার বলেছি ছেলেদেরকে নিয়ে ইদুজ্জোহাতে বাড়ি এসো, তারপর গ্রামে বসে সমস্যার সমাধান করা যাবে। তাকে বারবার অনুরোধ করেছি যেন ছেলেদেরকে মারধর না করা হয়। কিন্তু সেই অনুরোধ রাখেনি শহেনশা।’’
নির্যাতিত কিশোরের বাড়িতে সিপিআই(এম)’র প্রতিনিধি দল। ছবি তপন বিশ্বাস।
এদিন সিপিআই(এম) ইসলামপুর ২ নং এরিয়ার কমিটির এক প্রতিনিধি দল ছোঘরিয়া গ্রামে গিয়ে ওই পরিবারের সদস্যদের সাথে সহমর্মিতা জানান এবং তাদের সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে পাশে থাকার আশ্বাস দেন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন এরিয়া কমিটির সম্পাদক মহম্মদ সামি খান, জেলা কমিটির সদস্য বাজিল আখতার, এরিয়া কমিটির সদস্যদ বাবন পাল, মাসুম আলম, ইমতিয়াজ আজিজী, সাহেরুল ইসলাম, যুব নেতা কুশ মজুমদার, তেহজিব আলম প্রমূখ।
Comments :0