অভীক ঘোষ
কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়ায় চড়া হল না পর্বতারোহী পিয়ালী বসাকের। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ফিরলেন তিনি। শোনালেন কাঞ্চনজঙ্ঘার অভিজ্ঞতা।
গত ৭ এপ্রিল চন্দননগর থেকে অভিযানে বের হন। সব ঠিকই ছিল কিন্তু হটাৎ শরীর খারাপ হওয়ায় ক্যাম্প ফোর থেকে নেমে আসেন পিয়ালী। শনিবার নেপাল থেকে চন্দননগরের বাড়ি ফিরেছেন তিনি। তিনি বলেন, "কাঞ্চনজঙ্ঘা আগে ওঠা হয়নি। তাই এবার যখন শিশাপাংমা অভিযান হলনা। ঠিক করলাম কাঞ্চনজঙ্ঘা উঠব। সব ঠিকই ছিল। খুব ভালো ক্লাইম্বিং করছিলাম।"
কিন্তু ক্যাম্প ফোর থেকে সামিট করতে আর এক হাজার মিটার দূরে থামতে হয় তাঁকে। জ্বর ও কাশি শুরু হওয়ায় ভারতীয় সেনা ওষুধ দেয়। ওষুধ খেয়ে কিছুটা সুস্থ হলেও আর এগোনো হয়নি। কারন শেরপারা অসুস্থ হয়ে পড়েন।
পিয়ালীর স্বপ্ন বিশ্বের শ্রেষ্ঠ পর্বতারোহী হওয়া। সব মহাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ গুলো আহরণ করা। তিনি বলেন, "পাহাড় চড়ার জেদ থাকার পাশাপাশি সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে জানতে হয়। যতটা পাহাড় চড়া, ততটাই ফিরে আসার ক্ষমতা থাকা দরকার। পাহাড় অনেক কিছু শেখায়। পরিবেশে কোথায় থামতে হয় সেটা জানা দরকার। তাই আমি আজ বেঁচে বাড়ি ফিরে এসেছি। জীবন থাকলে আবার অভিযান হবে। তাই আপাতত বাড়িতে থেকে শরীর চর্চা।"
পিয়ালী ইতিমধ্যেই 'পাহাড় কন্যার" নাম পেয়েছেন। তাঁর চেষ্টা ও অদম্য জেদ সবার কাছে দৃষ্টান্ত হতে পারে। শেষবার মাকালু অভিযানে সাক্ষাৎ মৃত্যুমুখ থেকে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রায় এক মাস নেপালের কাঠমান্ডুর হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এবারের অভিযানও যথেষ্ট কঠিন ছিল।
তিনি আরও বলেন, "এই উষ্ণতম আবহাওয়ার জন্যই প্রতিদিন পাহাড়ে বদলে যাচ্ছে। আমি যে কাঞ্চনজঙ্ঘাকে চিনতাম তা পুরোটাই পাল্টে গেছে। প্রতিদিন বরফ গলে যাচ্ছে। পাহাড়ের কালো ধূসর রং বেরোচ্ছে সাদা বরফ গলে। এইভাবে উষ্ণতা বৃদ্ধি হতে থাকলে আগামী দিনে পাহাড়ে আর বরফ থাকবে না।"
উল্লেখ্য, ২২ মে ২০২২ সালে এভারেস্ট জয় করেন চন্দননগরের পর্বতারোহী পিয়ালী বসাক। এছাড়াও আট হাজার মিটার উচ্চতার মানাসুলু, ধৌলাগিরি, লোৎসে, অন্নপূর্ণা, মাকালু, এভারেস্ট শৃঙ্গ জয় করেছে।
Comments :0