আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলিকে কাজ থেকে বরখাস্ত করল রাজ্য সরকার। তাঁর করা মামলাতেই কলকাতা হাইকোর্ট ২০১৪ সালের আগস্টে আরজি করের দুর্নীতিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। তদন্ত প্রক্রিয়ায় তাঁর ভূমিকাও খতিয়ে দেখছে সিবিআই, সে কথা জানিয়েই এখন তাঁকে বরখাস্ত করা হলো! এটাকে প্রতিহিংসার পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।
স্বাস্থ্য দপ্তর শুক্রবার তাঁর বরখাস্তের চিঠি দিয়েছে। আখতার আলি বর্তমানে উত্তর দিনাজপুরে কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে কাজ করছেন। ২০২৩ সালে তাঁকে মুর্শিদাবাদ হাসপাতালে বদলি করা হয়েছিল। এরপর আরজি কর হাসপাতলে চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় গোটা রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল। সেই প্রতিবাদ আজও চলছে। এই প্রতিবাদের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আরজি কর হাসাপাতলের দুর্নীতির প্রসঙ্গ। আরজি করের তৎকালীন প্রাক্তন অতিরিক্ত সুপার আখতার আলি এই অভিযোগ প্রথম সামনে এনেছিল। যদিও তখন স্বাস্থ্য ভবন থেকে পুলিশ প্রশাসন সকলেই হাত গুটিয়ে ছিল— মুখ্যমন্ত্রীর খাস লোক বলে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হয়নি। ভয়াবহ দুর্নীতির ১৫ দফা অভিযোগ এনেছিলেন তিনি। সেই আখতার আলির মামলাতেই আদালত সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। কার্যত একচ্ছত্র দুর্নীতি, নৈরাজ্যের শাসন চলছিল একটি সরকারি হাসপাতালের অভ্যন্তরে। সরকার, প্রশাসন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মায় মুখ্যমন্ত্রীও নীরব ছিলেন এতদিন ধরে। বরং তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের পরেই সেই তৎকালীন অধ্যক্ষকে যদিও চার ঘণ্টার মধ্যে আরও একটি মেডিক্যাল কলেজে অধ্যক্ষ করে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আখতার আলি এই দুর্নীতি এবং হাসপাতালের মধ্যে মহিলা চিকিৎসকদের নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে আদালতে মামলা করেছিলেন। গোটা দেশ এমনকি দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশেও তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হওয়া সেই আরজি করে ধর্ষণ ও খুনের মূল মামলায় এখনও চূড়ান্ত চার্জশিট দায়ের করতে পারেনি সিবিআই। কলকাতা পুলিশের ঠিক করে দেওয়া বৃত্তেই আটকে তদন্ত প্রক্রিয়া। যদিও হাসপাতালের অভ্যন্তরে আখতার আলির করা দুর্নীতির মামলায় চার্জ গঠন করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হয়।
গত এপ্রিল মাসে তাঁকে মুর্শিদাবাদ হাসপাতাল থেকে কালিয়াগঞ্জ হসপাতালে বদলি করা হয়েছিল। গত ১৩ অক্টোবর আখতার আলি তাঁর কাজ থেকে অব্যাহতি চেয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিল। সেই চিঠির কোনও উত্তর স্বাস্থ্য দপ্তর তাঁকে দেয়নি। শুক্রবার তাঁকে কাজ থেকে সাসপেন্ডের চিঠি পাঠানো হয়েছে।
RG Kar
আরজি কর দুর্নীতি সামনে এনে বরখাস্ত প্রাক্তন ডেপুটি সুপার
×
Comments :0