strike in Jalpaiguri

বিনামূল্যে রেজিস্ট্রেশনের দাবিতে জলপাইগুড়িতে শুক্রবার ধর্মঘটে ই-রিকশা চালক ইউনিয়ন

জেলা

আরটিও অফিস অভিযানের পর এবার রাস্তায় নামছেন জলপাইগুড়ি জেলার টোটো চালকেরা। বিনামূল্যে টোটোর রেজিস্ট্রেশনের দাবিতে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে সিআইটিইউ অনুমোদিত ই-রিকশা চালক ইউনিয়ন। আগামী ৭ নভেম্বর জলপাইগুড়ি জুড়ে ডাকা হয়েছে একদিনের টোটো ধর্মঘট। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কাজ বাঁচানো ও বেঁচে থাকার তাগিদেই এই আন্দোলনের সিদ্ধান্ত।

বুধবার ইউনিয়নের জেলা দপ্তরে সাংবাদিক সম্মেলন করে জেলা সম্পাদক শুভাশিস সরকার বলেন, “রাজ্য সরকার পুরানো টোটোর রেজিস্ট্রেশনের নামে টাকা নিচ্ছে, অথচ দুই বছরের মধ্যেই সেই টোটো বাতিল করে নতুন ই-রিকশা কিনতে হবে বলে নির্দেশ দিচ্ছে। এটা টোটো চালকদের সঙ্গে অন্যায়।” তাঁর দাবি, পুরানো টোটোর রেজিস্ট্রেশন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করতে হবে এবং নতুন ই-রিকশা কেনার জন্য বিনা শর্তে ভর্তুকিযুক্ত ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। রাজ্যের পরিবহন দপ্তর ইতিমধ্যেই অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশনের কাজ শুরু করেছে। নির্দেশিকা অনুযায়ী, রেজিস্ট্রেশন ও নবীকরণের জন্য এক বছরের মেয়াদে ১,৬৪৫ টাকা ও দুই বছরের জন্য ২,৮৪৫ টাকা দিতে হবে চালকদের। এছাড়া নতুন ই-রিকশা কিনলে রেজিস্ট্রেশন ফি ৭,০৭০ টাকা, বিমা বাবদ প্রায় ১০,০০০ টাকা, ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ৯৮০ টাকা সহ একাধিক খরচের বোঝা চাপবে চালকদের ঘাড়ে।

তদুপরি, যানজট নিয়ন্ত্রণের নামে রাজ্য পরিবহন দপ্তর সম্প্রতি নির্দেশ দিয়েছে, একই এলাকায় টোটোগুলিকে দুই ভাগে ভাগ করে একদলকে রাত ২টা থেকে দুপুর ২টা এবং অন্য দলকে দুপুর ২টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত চালানোর অনুমতি দেওয়া হবে। এমনকি কোথাও কোথাও পালা করে একদিন একটি দল, আরেকদিন অন্য দলকে টোটো চালাতে বলা হয়েছে। ইউনিয়নের বক্তব্য, এই নির্দেশিকা বাস্তবে “তুঘলকি” সিদ্ধান্ত ছাড়া কিছু নয় এবং এতে হাজারো টোটো চালক কার্যত বেকার হয়ে পড়বেন।
শুভাশিস সরকার অভিযোগ করে বলেন, “রাজ্যের বিভিন্ন পৌরসভা অতীতে টোটো চালকদের থেকে নানা অজুহাতে টাকা আদায় করেছে। এখন সেই টাকাই সরকার ফেরত দিক। সরকার একদিকে বেকার যুবকদের ই-রিকশা কিনতে উৎসাহ দিচ্ছে, অন্যদিকে নিয়ম আরোপ করে তাঁদের রুজি ছিনিয়ে নিচ্ছে।”

ইতিমধ্যেই ধর্মঘটের সমর্থনে শহরজুড়ে মাইকিং, প্রচারপত্র বিতরণ ও সচেতনতা অভিযান শুরু করেছে ইউনিয়ন। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ৭ নভেম্বর জলপাইগুড়ি শহরে টোটো চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। তাদের হুঁশিয়ারি, সরকারের পক্ষ থেকে দাবি মানা না হলে ভবিষ্যতে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে নামবেন টোটো চালকেরা।

আন্দোলনকে ঘিরে জেলার পরিবহন দপ্তর ও প্রশাসনের মাথাব্যথা বাড়ছে। টোটো আজ জলপাইগুড়ির শহরাঞ্চল ও আশেপাশের গ্রামীণ এলাকার অন্যতম প্রধান গণপরিবহন মাধ্যম—তাই ধর্মঘটের দিন মানুষেরও চরম ভোগান্তির আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে সিআইটি অনুমোদিত ই রিকশা ইউনিয়নের জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক শুভাশিস দাস সংবাদ মাধ্যমের মাধ্যমে জলপাইগুড়ির মানুষের কাছে অনুরোধ জানান ৭ই নভেম্বর শুক্রবার নিত্যযাত্রী যারা টোটো কে পরিবহনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেন এবং স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রী যারা টোটো তে যাতায়াত করেন তারা অবশ্যই বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করে সেদিন টোটো চালকদের জীবন জীবিকা বাঁচাতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবেন।।

 

Comments :0

Login to leave a comment