মীর আফরোজ জামান: ঢাকা
ভারতের আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তিতে অনিয়ম বা দুর্নীতির প্রমাণ মিললে তা বাতিল করবে বাংলাদেশ। অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রকের উপদেষ্টা মহম্মদ ফাওজুল কবির খান এই ঘোষণা করেছেন।
খান বলেন, ‘‘প্রতিটি চুক্তিতেই স্বীকারোক্তি থাকে যে এ চুক্তিতে কোনো দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়া হয়নি। কিন্তু এটা যদি লঙ্ঘন করা হয়, তা’হলে চুক্তি বাতিল করা যায়। তা প্রমাণিত হলে চুক্তি বাতিল করা সম্ভব।’’
সাংবাদিক সম্মেলনে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে চুক্তি বাতিলের একটা প্রক্রিয়া আছে। সাধারণ কোনো কারণ দেখিয়ে এবং কারণ ছাড়া- দু’ভাবে চুক্তি বাতিল করা যায়। তবে কারণ ছাড়া চুক্তি বাতিল করলে নির্ধারিত পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দিতে হয়।’’
বাংলাদেশের চুক্তি পর্যালোচনা কমিটির সদস্য ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের ফ্যাকাল্টি অব ল অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সের অধ্যাপক (অর্থনীতি) মোশতাক হোসেন খান বলেন, ‘‘মাসখানেকের মধ্যে আরও অনেক দুর্নীতির তথ্য পাবেন। এই দুর্নীতি আমাদের রোধ করতেই হবে। বাংলাদেশে বিদ্যুতের দাম আমাদের প্রতিযোগীদের চেয়ে ২৫ শতাংশ বেশি হয়ে গেছে। এটি এই দুর্নীতির কারণে। ভরতুকি বাদ সরিয়ে দিলে দামে ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি হয়ে যাবে। আমাদের হিসাবে বিদ্যুতের এই দামে বাংলাদেশের শিল্পপ্রতিষ্ঠান টিকতে পারবে না। তাই আমাদের এটিকে শুধরাতেই হবে।’’ তিনি বলেন, ‘‘বিদ্যুতের মাশুল দিচ্ছেন সাধারণ ভোক্তা, ক্রেতা ও করদাতারা। আমাদের ওপর চুক্তি চাপিয়ে দিয়ে আগের সরকার চলে গিয়েছে।’’
বিশ্বব্যাঙ্কের প্রাক্তন ‘লিড ইকনমিস্ট’ ও অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘‘২০১১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিদ্যুতের উৎপাদন চারগুণ বেড়েছে, কিন্তু অর্থ পরিশোধের দায় বেড়েছে ১১ গুণ। আমরা ২০১১ সালে বিদ্যুতের জন্য ৬৩৮ মিলিয়ন (১০ লক্ষ) ডলার পরিশোধ করেছিলাম। যেটা ২০২৪ সালে এসে বেড়ে ৭.৮ বিলিয়ন (১০০কোটি) ডলার হয়েছে।’’
Comments :0