CPIM Condemned

তৃণমূলের বিজয় উল্লাসে নাবালিকা হত্যার তীব্র নিন্দা সিপিআই(এম)’র

রাজ্য জেলা

উপনির্বাচনের গণনাতেও ঝরল রক্ত রাজ্যে। সোমবার কালীগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার আগেই পৈশাচিক আনন্দে আত্মহারা হয়ে বোমাবাজি শুরু করে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। এদিন বেলা ১ টা নাগাদ নদিয়ার কালীগঞ্জে ভোটগণনা চলাকালীন কালীগঞ্জে বোমার আঘাতে ১ বালিকার মৃত্যু হয়েছে। 
ঘটনা প্রসঙ্গে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন ,‘‘ নৃশংসতার নমুনা। গণনা চলাকালীন কালিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূল বিজয় মিছিল শুরু করে। পলাশির মোলান্দি গ্রামের এমন এক বিজয় মিছিল থেকে ছোড়া শকেট বোমায় প্রাণ হারায় দশ বছরের নিরীহ শিশু, তামান্না খাতুন। সমর্থক পরিবারের মেয়ে চতুর্থ শ্রেণির এই ছাত্রী।’’
স্থানীয়দের অভিযোগ, ভোট গণনা শেষ হওয়ার আগেই তৃণমূলের বিজয়োল্লাস থেকে বোমা ছোড়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাকি যারা এই ঘটনায় জড়িত তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কাজ চলছে বলে পুলিশের তরফে জানান হয়েছে। 
জানা গিয়েছে, কালীগঞ্জ থানা এলাকার মোলান্দি এলাকায় তৃণমূলের মিছিল থেকে বোমা ছোড়া হয়। সেই বোমায় মৃত্যু হয় নাবালিকার। তৃণমূলের বিজয়োল্লাস থেকেই বোমা ছোড়া হচ্ছিল। 
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিপিআই(এম) সমর্থকের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়েছে। সেই বোমা ফেটেই চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। মৃত নাবালিকার নাম তামান্না খাতুন(১০)। বাড়ি কালীগঞ্জের মোলান্ডিতে।     একটি নয় একাধিক সিপিআই(এম) সমর্থকদের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি চালিয়েছে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। স্থানীয়রা দাবি করে বলেন, নির্বাচনের আগেও এখানে সিপিআই(এম) সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি এসে হুমকি দিয়েছিল তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। 
নিহত নাবালিকার মা সাবিনা বিবি জানান, ‘‘এই এলাকায় অনেকেই সিপিআই(এম)’র সমর্থক রয়েছেন। ভোটের রেজাল্ট প্রকাশিত হওয়ার আগেই তৃণমূলের লোকেরা আমার বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়ে। আমার মেয়ে স্নান করতে বেরিয়েছিল। ওকে লক্ষ্য করেই বোমাবাজি করে। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে প্রাণ হারায় আমার মেয়ে।’’ তিনি আরো বলেন, ‘‘আমার স্বামী কাজের সূত্রে উড়িশায় থাকেন। বাড়িতে আমি আর আমার মেয়ে থাকতাম।’’ দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি চাই। 
সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ জয় পেয়েও বীভৎস আচরণ করল তৃণমূল কংগ্রেস। সংগঠিতভাবে বোমা মারা হয়েছে। বামপন্থী বলে বোমা মারা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন কারও রাজনৈতিক পরিচিত নয়। বড় কথা হলো জয়ের পর গ্রামের সাধারণ মানুষের বাড়িতে আক্রমণ হয়েছে। যা থেকে বোঝা যাচ্ছে বোমা গুছিয়ে রাখা হয়েছিল সংগঠিত আক্রমণের জন্য। তিনি প্রশ্ন তোলেন যে কে হামলার প্রস্তুতি নিয়েছিল, পুলিশ কী করছে, পুলিশ জানে না?  নাকি পুলিশের প্রশ্রয়ে নির্বাচনের জন্য বোমা মজুত করে রাখা হয়েছিল, সেই বোমা ফাটানো হলো। এ দায় পুলিশের, এ দায় প্রশাসনের। সংগঠিত ভাবে বোমা জোগার করে মানুষকে আক্রমণ করা হলো। এটা নির্বাচনের জয় না, এটা বীভৎসতার জয়।

ঘটনা প্রসঙ্গে সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন, ‘‘আমরা প্রকাশ্য সমাবেশ থেকেই বলেছিলাম পশ্চিমবঙ্গে গুন্ডারাজ চলছে। সংসদীয় রাজনীতিতে কোনও রাজনৈতিক দল হারবে কোনও রাজনৈতিক দল জিতবে। তাই বলে তার বিজয় উল্লাসে একটি ১০বছরের মেয়ের প্রাণ কেড়ে নেবে। এটা গুন্ডারাজের নিদর্শন। আমরা গত ২০ জুন ডিওয়াইএফআই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ২০তম সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশ থেকে ডাক দিয়েছিলমা গুন্ডারাজ খতম করার জন্য জিআইএফআই প্রতি বুথে লড়াই করবে।
কৃষ্ণনগরের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে বলেন, মর্মান্তিক ঘটনা। কে বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে। আখতার শেখ নামে একজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Comments :0

Login to leave a comment