১০ – ১১ জুন সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক এমএ বেবি নেতৃত্বে সিপিআই(এম)’এর একটি প্রতিনিধি দল যাবে জম্মু ও কাশ্মীরে। দিল্লির একে গোপালন ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে এমএ বেবি শুক্রবার জানিয়েছেন প্রতিনিধি দলে থাকবেন পলিটব্যুরো সদস্য, লোকসভার সাংসদ অমরা রাম, লোকসভার সাংসদ কে. রাধাকৃষ্ণান, এসইউ ভেঙ্কটেশ, রাজ্যসভার তিন সাংসদ বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য, জন ব্রিটাস এবং এএ রহিম।
বেবি বলেন, ‘‘কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা তুলে দেওয়ার পর দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বার বার বলে এসেছেন সেখানে শান্তি ফিরে এসেছে। কিন্তু বাস্তব দেখা যাচ্ছে। আমরা বলছি মানুষের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে হবে। জম্মু কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রীকে ডাকা হয় না নিরাপত্তা সংক্তান্ত বৈঠক গুলোয়, রাজ্যপালকে ডাকা হয়। প্রশ্ন উঠছে তাহলে সেখানে নির্বাচিত সরকারের কি কোন গুরুত্ব নেই।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘ পহেলগামের ঘটনা নিয়ে দুটি সর্বদলীয় বৈঠক হয়েছে। একটাতেও প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না। তিনি অন্য রাজ্য গিয়ে ভাষণ দিয়েছেন। বিজেপি এবং এনিডিএ মুখ্যমন্ত্রীদের সাথে তিনি বৈঠক করেছেন পহেলগামের ঘটনার পর। দেশের প্রধানমন্ত্রী নয় নিজেকে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তুলে ধরছেন মোদী। প্রধানমন্ত্রী এক ঘন্টা সময় দিতে পারেন না বিরোধীদের সঙ্গে বসার আর ঘুরে ঘুরে পহেলগামের ঘটনাকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছেন।’’
উল্লেখ্য পহেলগামের ঘটনার পর থেকে বিজেপি এবং আরএসএস অপারেশন সিঁদুরকে লাগাতার রাজনৈতিক প্রচারে ব্যবহার করছে। পশ্চিমবঙ্গে এসেও একই কাজ করেছেন মোদী এবং অমিত শাহ। এই প্রসঙ্গে সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদককে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘মে মাসের শেষের দিকে নির্বাচন কমিশনের সাথে আমরা দেখা করি সেখান আমরা বলি অতীতে দেখা গিয়েছে বিজেপি কি ভাবে বালাকোট পুলওয়ামাকে ব্যবহার করেছে নির্বাচনী প্রচারে। প্রধানমন্ত্রী নিজে সেই প্রচারের অংশ ছিলেন। আমরা আশঙ্কা প্রকাশ করি যে বিজেপি এই পহেলগামের ঘটনাও রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করবে। এখন দেখা যাচ্ছে তাই হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে কমিশনকে সর্তক থাকতে হবে।’’
বেবি বলেন, ‘‘কিরেন রিজিজুকে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদের কাছে বার্তা পাঠিয়েছেন বিদেশে সংসদের প্রতিনিধি পাঠানোর জন্য। সংসদে দলনেতাদের সঙ্গে কথা হয়েছে কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলা হয়নি, কেন? অতীতে একাধিক প্রতিনিধি দল গিয়েছে, নির্দিষ্ট দল গুলোর সাথে কথা বলে প্রতিনিধিদের নাম ঠিক করা হয়েছে। এখন বিজেপি সেই সব তুলে দিয়েছে। আমরা দাবি করেছি সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার, কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে, কিন্তু সেই বিষয় কোন কথা নেই।’’
বেবি বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে অপারেশন সিঁদুর এবং যুদ্ধ বিরতি নিয়ে সংসদে ব্যাখ্যা দিতে হবে। দেশের মানুষকে সব জানাতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘বিদেশ মন্ত্রী রাজনাথ সিং দ্বিতীয় সর্বদলীয় বৈঠকে বলেন যে ভারত তার উদ্দেশ্যে সফল অপারেশন সিরদুরের মাধ্যমে। তারপরই ট্রাম্প দাবি করেন দুই পক্ষকে বুঝিয়ে তিনি যুদ্ধ বিরতি সিদ্ধান্ত আনতে সক্ষম হয়েছেন। সিপিআই(এম) সব সময় যুদ্ধ বিরোধী, মোদীকে বলতে হবে কী ভাবে যুদ্ধ বিরোধী হলো। কিন্তু তিনি মুখ খুলছেন না।’’
সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘সিমলা চুক্তিতে বলা হয়েছে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমেই ভারত পাকিস্তান দুই দেশের সমস্যা মেটাতে হবে। কোন তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ চলবে না। প্রধানমন্ত্রীকে মুখ খুলতে হবে এই বিষয়, যে কেন আমেরিকা বাইরে থেকে হস্তক্ষেপ করলো।’’
বেবি বলেন, ‘‘দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সাম্প্রদায়িক হিংসার কথা শোনা যাচ্ছে, সোফিয়া কুরেশিকে অপমান করা হয়েছে। বিজেপি মন্ত্রী মন্তব্য করেছে। বাংলা ভাষী মুসলিমদের বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে। তাদের বলা হচ্ছে অনূপ্রবেশকারি, এমন অনেকে আছে যারা দেশের নাগরিক তাদের বলা হচ্ছে অনুপ্রবেশকারি। আরএসএস গোটা দেশে ঘৃণা ছড়াচ্ছে।’’
MA BABY
চলতি মাসে বেবির নেতৃত্বে কাশ্মীরে যাচ্ছে সিপিআই(এম)’এর প্রতিনিধি দল

×
Comments :0