Land Struggle Gopiballavpur

তাড়া তৃণমূলকে, গোপীবল্লভপুরে জমি লুট রুখলেন গ্রামবাসীরা

জেলা

ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর থানার চেন্দুগাড়ি-৭ পঞ্চায়েতের ভোলামহুলি মৌজায় লাল ঝান্ডার সঙ্গে মিছিল গ্রামবাসীদের।

চিন্ময় কর: গোপীবল্লভপুর

দলবেঁধে লাল ঝান্ডা ও শক্ত লাঠির প্রতিরোধের মুখে পিছু হটলো জমি হাঙরের দল। বর্গাদার ও পাট্টাদারদের চাষের জমি থেকে উচ্ছেদ করতে এসে তৃণমূলের মুথ সভাপতির বাহিনী কড়া টক্করের মুখে পড়ল। (দেখুন ভিডিও)
ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর থানার চেন্দুগাড়ি-৭ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ভোলা মহুলি মৌজায় এই জমিতে পঁয়তাল্লিশ বছর ধরে চাষ এই পরিবারগুলির। তৃণমূলের সরকারের মেয়াদে বারবার নকল দলিল বানিয়ে জমি দখল করতে আসছে জমি হাঙররা। পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের মেয়াদে সিলিং অতিরিক্ত জমি খাস করে দেওয়া হয়েছিল ভূমিহীন কৃষকদের। পাট্টাদার, বর্গাদাররা আইনি অধিকার পেয়েছিলেন। সেই অধিকারই কেড়ে নেওয়া হচ্ছে তৃণমূলের মেয়াদে।
তৃণমূলের বুথ সভাপতি এবং গত বারের পঞ্চায়েত সদস্য শান্তি সাউ অনুগামীদের নিয়ে রাতের অন্ধকারে একাধিক ট্রাক্টর নামিয়ে জমির আল তুলে দিয়ে মাটি চষে ফেলেন। সাত সকালে এলাকার মানুষ দেখেন পিচ রাস্তায় পুলিশ পাহারায় তাঁদের চাষের জমি দখল হচ্ছে। 
প্রতিবাদ করলে হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয় লক্ষীন্দর সিং, সীতারাম সিং, সন্তু দিগার, মানিক কুণ্ডুদের। তাঁরা গ্রামে ফিরে খবর দেন। সারা ভারত কৃষক সভার গ্রাম কমিটির সম্পাদক  শ্যামাপ্রসাদ দন্ডপাঠ সহ হরিশ সিংহ, বিশ্বরঞ্জন খামরুইরা গ্রামের মানুষকে জড়ো করেন। দশ মিনিটের সভায় সিদ্ধান্ত হয় লাল ঝান্ডার নিয়ে প্রতিরোধে শামিল হওয়ার। 
উচ্ছেদের খবর সহ ছড়িয়ে পড়ে। আশেপাশের গ্রামের মানুষ জেনে যান যে লাল ঝাণ্ডা নিয়ে কৃষক সভা প্রতিরোধে নেমেছে। তিনটি মৌজার আড়াইশোর বেশি পরিবারের বয়স্ক থেকে মহিলা, শিশুরা শামিল হয় প্রতিরোধে। চাষের জমির সরঞ্জাম নিয়ে রাস্তায় নামেন তাঁরা। সেই জনরোষের চেহারা দেখে ট্রাক্টর চালকরা গাড়ি নিয়ে এলাকা ছেড়ে পালায়। তৃণমূল নেতা ও বাহিনীকে এলাকা ছেড়ে পালাতে হয়। 
মহিলারা অগ্রণি ভূমিকা নিয়ে সেই চষা জমিতে নেমে পড়েন। একে একে ৩৬টি কৃষক পরিবারের জমি চিহ্নিত করে ফিতা ফেলে আল দাঁড় করিয়ে নিজেদের জমির দখল ফিরিয়ে নেন। সেই জমিতে কৃষকরা আজ সার ও ধানের  বীজও ছড়িয়ে দেন লাল ঝান্ডা উড়িয়ে।
হরিশ সিংহ বলেন, এই মহুলি মৌজায় ঐ জোতদারের ১৮ বিঘা জমি খাস হয়েছিল। তার মধ্যে মহুলি মৌজার এই পার্টেই ৯ বিঘা খাস হয়ে ৩৬ জন ভাগচাষী বর্গার পাট্টা পেয়েছিলেন।  বাকি অনেকে পাট্টা পেয়েছে। প্রথম দিনই প্রতিরোধ না করলে ওরা এলাকার আদিবাসী, শবর সহ তপশিলীদের জমি সব কেড়ে নেবে।

Comments :0

Login to leave a comment