‘‘বন্যা দুর্গতদের পাশে দাড়াও!’’ মালবাজার মহকুমার নাগরাকাটা ব্লকের একাধিক গ্রাম ৫ অক্টোবরের বিধ্বংসী বন্যায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও প্রশাসনের তরফে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও ত্রাণকার্য চালানো হচ্ছে না। সোমবার এই অভিযোগে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে নাগরাকাটা সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের (বিডিও) অফিসে অভিযান সংগঠিত করল সিপিআই(এম)’র নাগরাকাটা এরিয়া কমিটি। এদিন নাগরাকাটা দলীয় অফিস থেকে সিপিআই(এম) জেলা সম্পাদক পীযুষ মিশ্রের নেতৃত্বে একটি বিশাল প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয়। মিছিলে বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষ ও বহু সিপিআই(এম) কর্মী অংশ নেন। মিছিলটি নাগরাকাটা বিডিও অফিসে পৌঁছালে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অভিযানের সূচনায় সিপিআই(এম) কর্মীরা ১০ দফা দাবিপত্র নিয়ে বিডিও-কে স্মারকলিপি দিতে গেলে বিডিও দেখা করতে অস্বীকার করেন বলে অভিযোগ। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি দলকে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এরই প্রতিবাদে মিছিলে অংশগ্রহণকারী বন্যা দুর্গত মানুষজন তৎক্ষণাৎ রাস্তায় দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে শুরু করেন। পুলিশের সঙ্গে সাময়িক বাদানুবাদ হয় নেতৃত্ব ও কর্মীদের। অবশেষে তাঁদের জেদের কাছে হার মানতে বাধ্য হয় ব্লক প্রশাসন। বিডিও সিপিআই(এম) নেতাকর্মীদের কাছ থেকে ডেপুটেশন সংগ্রহ করেন। জেলা সিপিআই(এম) নেতা রামলাল মুর্মু জানান, ‘‘ভয়ঙ্কর বন্যায় শুধু নাগরাকাটাই নয়, ধূপগুড়ি, ময়নাগুড়ি-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার চা শ্রমিক ও সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহু পরিবারের ঘরবাড়ি সম্পূর্ণভাবে ভেসে গেছে, হাজার হাজার মানুষ আশ্রয়হীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাঘাট ও সেতু ভেঙে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। এলাকায় পানীয় জলের তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে এবং জল দূষণের আশঙ্কা বাড়ছে। অন্যদিকে হাজার হাজার একর জমির ধান ও চা ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে, যার ফলে কৃষিজীবী ও চা শ্রমিকরা চরম অনিশ্চয়তার মুখে দাঁড়িয়ে।’’ বন্যা দুর্গত মানুষজনের অভিযোগ, সরকারি ত্রাণ কার্যত অপ্রতুল ও অপর্যাপ্ত।
এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সিপিআই(এম) নেতৃত্ব বিডিও’র কাছে ১০ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি পেশ করেন। এদিনের এই গুরুত্বপূর্ণ অভিযানে সিপিআই(এম)’র জেলা সম্পাদক পীযুষ মিশ্র ছাড়াও নেতৃত্ব দেন রামলাল মুর্মু, সিকান্দার মাঝি, কৌশিক ভট্টাচার্য, শের বাহাদর লিম্বু, নবীউল ইসলাম, কৃষ্ণা ওঁরাও প্রমুখ নেতৃত্ব। অভিযানের শেষে জেলা সম্পাদক পীযুষ মিশ্র প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, ‘‘প্রশাসন যদি দ্রুত ত্রাণ ও পুনর্গঠনের কাজ শুরু না করে, তাহলে মানুষের এই চরম দুর্দশার প্রতিবাদে বৃহত্তর গণআন্দোলনের পথে হাঁটতে বাধ্য হব আমরা। মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য শেষ পর্যন্ত লড়াই জারি থাকবে।’’
CPI(M) Deputation
দশ দফা দাবি নিয়ে নাগরাকাটার বিডিওকে ডেপুটেশন বন্যা দুর্গতদের
×
Comments :0