NATUNPATA : GK : BAGHAJATIN : TAPAN KUMAR BAIRAGAY : 6 SEPTEMBER 2024, FRIDAY

নতুনপাতা : জানা অজানা : বাঘাযতীন নাম কে দিলেন? : তপন কুমার বৈরাগ্য : ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, শুক্রবার

ছোটদের বিভাগ

NATUNPATA  GK  BAGHAJATIN  TAPAN KUMAR BAIRAGAY  6 SEPTEMBER 2024 FRIDAY

নতুনপাতা : জানা অজানা

বাঘাযতীন নাম কে দিলেন?
তপন কুমার বৈরাগ্য

আমরা সবাই জানি বাঘাযতীনের নাম।যার আসল নাম  
যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়।বাঘাযতীন ১৮৭৯ সালের ৭ই ডিসেম্বর
নদীয়া জেলার কুষ্টিয়ার নিকট কয়াগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
তাঁর দুই মামা ।বড়মামার নাম বসন্তকুমার এবং ছোটমামার
নাম ললিত কুমার।দুই মামাই যতীনকে খুব ভালোবাসতেন।তাই
তাঁর বেশি সময় কাটতো কয়াগ্রামে।এখানেই তিনি মামাদের
কাছে থেকে লেখাপড়া শিখতেন।
সেই সময়ে কয়াগ্রাম ছিলো বনজঙ্গলে পরিপূর্ণ।গ্রামের পাশে ছিলো
এক গভীর বন।এই বনে তখন বাঘ বাস করতো। রাতে গ্রামে ঢুকে
গরু ,ছাগল, মোষ,ভেঁড়া মেরে খেয়ে চলে যেত।
গ্রামের মানুষতো পড়লো মহা ফ্যাঁসাদে।বাঘকে মারতেই হবে।
কিন্তু কে মারবে? গ্রামের একমাত্র সাহসী ছেলে ছিলো ফণি।
ফণি ছিলো তাঁর মামাতো ভাই। মামার বাড়িতে একটা বন্দুক
ছিলো।সেটা নিয়েই ফণি বাঘ শিকারে যাবে।যতীনও ছাড়ার পাত্র
নয়।সেও দাদার সাথে যাবে বলে পণ করেছে। ফণি কিছুতেই 
ভাইকে নিয়ে যেতে রাজী হলো না।যতীন দমবার পাত্র নয়।
অবশেষে যতীনের জেদের কাছে চুনীকে হার মানতেই হলো।
একটা মাত্র ভোজালি নিয়ে দাদার সাথে বের হলো।
বনে পৌঁছে ফণি বন্দুক হাতে বাঘ খুঁজতে লাগল। অবশেষে
বাঘের সাক্ষাৎ পেলেন।ফণি গুলি ছুঁড়লেন।গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলো।
বাঘটা ভয়ানক রেগে গেল।কাছেই ছিল যতীন।যতীনের উপরেই বাঘটা
ঝাঁপিয়ে পড়ল।শুরু হলো এক অসীম সাহসী কিশোরের সাথে
এক বাঘের  রক্ত হিম করা সংগ্রাম। বাঘটা তাঁর শরীরে অসংখ্য
ক্ষতের সৃষ্টি করল।আর যতীন বাঘের মাথায় ভোজালি দিয়ে
আঘাতের পর আঘাত করে চলল।এক সময় বাঘটা মাটিতে লুটিয়ে
পড়ল।আহত যতীন একসময় জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে গেল।
দুই মামা সত্ত্বর তাঁকে নিয়ে এলেন কলকাতায়।তাঁকে ভর্তি
করা হলো নীলরতন সরকারে। তাঁর চিকিৎসার ভার পড়ল তখনকার
বাংলার চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে কিংবদন্তি শল্য চিকিৎসক
সুরেশপ্রসাদ সর্বাধিকারী । সার্জারি এবং মেডিসিনে অভিজ্ঞ প্রখ্যাত
এই চিকিৎসক অপারেশনের মাধ্যমে যতীনকে সুস্থ করে তুললেন।
অপরেশনের দুদিন পরেই যতীন জ্ঞান ফিরে পেলেন। চোখ মেলে
চেয়ে আছেন।এমন সময় সুরেশপ্রসাদ এলেন।রোগী চোখ মেলে
চায়ছে দেখে সুরেশপ্রসাদ তাঁর কাছে এসে তাঁর তারিফ করে বললেন--
তুমি তো যে সে ছেলে নয়।একটামাত্র ভোজালি দিয়ে বাঘ মেয়েছো।
যা কেউ কোনোদিন পারেনা।তাই তোমার আজ থেকে নাম দিলাম---
বাঘা যতীন।সালটা ছিলো ১৯০০খ্রিস্টাব্দ।যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়
হয়ে উঠলেন বাঘাযতীন নামে বেশি পরিচিত। 

Comments :0

Login to leave a comment