নতুনপাতা : বইকথা
হিংসুটে দৈত্য’ এক পরিবর্তিত মনের আখ্যান
সৌরভ দত্ত
দৈত্য দানবের বই পড়তে কার না ভালো লাগে । শিশুমনে দাগ কাটে এ ধরনের বই।‘হিংসুটে দৈত্য’ সেরকমই এক স্বল্পায়তন বই। যে বই আমাদের অস্কার ওয়াইল্ড এর স্বার্থপর দৈত্যের কথা মনে করিয়ে দেবে।ড:ভুবনেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায় এর লেখা বই –‘ হিংসুটে দৈত্য’ বইয়ে দৈত্যর শত্রু শিশুরা। শিশুদের জন্য তার দয়ামায়া নেই।গল্পে দৈত্য জব্দ হয়েছে প্রকৃতির কাছে।একসময় দৈত্যের বোধদয় ঘটেছে। ধীরে ধীরে দৈত্যের মানসিকতার বদল ঘটেছে বিভিন্ন ঘটনার অভিঘাতে। গল্পের শুরুতেই রয়েছে ছয় ঋতুর কথা।‘একটা বিশাল বাগান। কত গাছগাছালি।’যেখানে স্কুল ফেরতা ছেলেপুলেরা ছোটাছুটি করে। বাগানের মালিক এক দৈত্য।দুটো প্রকাণ্ড গজ দাঁত মুখের দুধারে। মাথায় শিং এর মতো দুটি ঝুঁটি।মোষের মতো মস্ত কালো মাথা। দৈত্য তার বাগানে ছেলেদের খেলতে দেয় না।যুক্তিটা –“আসলে শিশুদের ঐ খুশির মেজাজদেখে–গায়ের জ্বালা আর হিংসা।” বাগানে শিশুদের খেলতে না দেওয়ার জন্য সে কড়া ব্যবস্থা নিয়েছিল–‘বাগানের চারপাশে মজবুত,দেওয়িল গাঁথা হল ।”হিংসুটে ছাড়াও এ দৈত্য সম্পর্কে যেসব বিশেষণ গুলি যোগ করা যায়–নিষ্ঠুর, বেরসিক,স্বার্থপর, আত্মকেন্দ্রিক। নোটিশবোর্ড নোটিশ দেওয়া হল–“বাগানে ঢুকলেই শাস্তি।”গল্পের শেষে দেখা যায়–“কাঁপতে কাঁপতে হঠাৎ দৈত্য পড়ে যায় শিশুটির পায়ের কাছে।”একজন বন্ধু দৈত্যের উদ্দেশ্যে বলল–“তুমি তো পেয়ে গেছো তোমার সবচেয়ে প্রিয় ছোট বন্ধুর । কোথায় গেল?”বন্ধু দৈত্য আর শেষ পর্যন্ত জাগেনি। সত্যিকারের ভুল বুঝতে পেরে দৈত্য মানুষ হয়েছে।গল্পটি বেশ প্রাঞ্জল ভাষায় লেখা। অবশ্যই শিশুকিশোর উপযোগী।
বইয়ের নাম–হিংসুটে দৈত্য
লেখক–ড: ভুবনেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রচ্ছদ–ধীরেন শাসমল
প্রকাশক–এন.ই.পাবলিশার্স
Comments :0