Bhattar

ঝান্ডার নেতৃত্বে ফের খাস জমি পুনর্দখল ভাতাড়ে

রাজ্য জেলা

শঙ্কর ঘোষাল: ভাতাড়

জমি দিয়েছিল লাল ঝান্ডা, সেই জমি তৃণমূল কেড়ে নেওয়ার পর লাল ঝান্ডাই আবার সেই জমি লড়াই করেই ফিরিয়ে দিলো উচ্ছেদ হওয়া কৃষকদের। জোতদার ও শাসকদলের দখলের পর শুধুমাত্র ভাতাড়ে প্রায় ২০০ বিঘে জমি পুনর্দখল করেছে পাট্টাদার’রা। তৃণমূল ও পুলিশকে সাথে নিয়ে ষড়যন্ত্র করে গরিবের জমি কেড়ে নেবার ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে ভাতাড়ে। মুখোশ পরা শাসকদল যে গরিবের বন্ধু নয় সেটা একের পর এক জমি হাতছাড়া হবার পর বুজেছেন ভাতাড়ের মানুষ। তানা হলে দীর্ঘ ৩৪ বছর চাষ করছেন পাট্টা পাওয়া ৩টি পরিবার। সেই জমি গত ১২ দিন আগে জোতদারের নাতি জোর করে দখল নিয়ে চাষ দেয়। ভাতাড় থানার খেড়ুর মৌজায় প্রায় এক একর জমি চারজন ভূমিহীন ক্ষেতমজুর ১৯৯২ সালে ৩/৯২ পাট্টা মূলে দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে চাষাবাদ করে আসছেন। গত ১২ দিন আগে হঠাৎ ওই জমি ট্রাক্টর মারফৎ জোতদার জোর করে চাষ দেয়। বুধবার সকালে সংগঠিত গরিব মানুষের উপস্থিতিতে মিছিল করে জমিতে নেমে চাষ দেওয়া হয় ও চারা রোপন করা হয়। কৃষকসভা ও খেতমজুর নেতৃত্বও জমিতে চারা রোপন করেন। গরিব মানুষের সংগঠিত উপস্থিতি এলাকার মানুষদের উৎসাহিত করেছে। নেতৃত্ব দেন মিজানুর রহমান, নজরুল হক, সফিকুল ইসলাম, ইন্দ্রজিৎ হাজরা, ডালিম রায় ও সত্যনারায়ণ কর্মকার। 
গত ২৪ দিন আগে ২২ জুন এই ভাতাড়েই ৬৫ একর জমি জোতদার, শাসকদলের হাত থেকে পুনর্দখল করেন লাল ঝান্ডা নিয়ে গরিব মানুষ। লাল ঝান্ডা জমি দিয়েছিল, সেই জমি তৃণমূল কেড়ে নেবার পর  লাল ঝান্ডাই আবার সেই  জমিও লড়াই করেই ফিরিয়ে দিয়েছিল উচ্ছেদ হওয়া কৃষকদের। কাশীপুর ও তার পাশে ৬৫.৫১ একর মূল্যবান জায়গার উপর লোভ ছিল তৃণমূলের। ১৯৯৬ সালে বনপাস’র বাসিন্দা ওরম্বা সুন্দরী দাসীর এই জমি ভেস্ট হয়। সেই জমি থেকে ৫২জনকে পাট্টা দেওয়া হয়। বাকিরা দীর্ঘদিন দখলে রেখে চাষ ও বাস করছিলেন। ২০২২ সালে তৃণমূলের নেতাদের মদতে এই জমি রাতারাতি গরিব পাট্টাদারদের নাম বাদ দিয়ে প্রাক্তন জোতদারদের নামে পরিবর্তন হয়। জমির চরিত্র ও সরকারী খাস থেকে রায়ত জমিতে পরিনত হয়। এরপর তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী মাঠে নেমে গরিব পাট্টাদারদের উৎখাত করে সেই জমি প্রাক্তন জমিদারদের হাতে তুলে দেয়। ১০০ জনের বেশি গরিব মানুষ জমি থেকে উচ্ছেদ হয়। সেই জমি লাল ঝান্ডার নেতৃত্বে গরিব পাট্টাদার ও খেতমজুর’রা পুনর্দখল করে ১০০ জনকে ফিরিয়ে দেয়। 

ভাতাড়ে খাস জমি পুনর্দখল করলো লাল ঝান্ডার নেতৃত্বে গরিব মানুষ।


এবার খেড়ুর মৌজাতেও খাস জমি পুনর্দখল করলো লাল যান্ডার নেতৃত্বে পাট্টাদার’রা। এলাকার মানুষ জানিয়েছেন, গত ৩৪ বছর ধরে পাট্টাদার বাদল  সাঁতরা, মদন নন্দী, প্রশান্ত সাঁতরা ও তাঁদের পরিবার এই জমি চাষ করে আসছে। সেই জমি হঠাৎ জোতদারের  নাতি কল্যান বসু জোর করে শাসকদলের মদতে জমিতে চাষ দেয়। এরপরই এলাকার গরিব মানুষ জোটবদ্ধভাবে লাল ঝান্ডার তলায় সামিল হয়ে জমি ফের পুনর্দখল করার শপথ নেয়। এদিন ভোর বেলায় গ্রামে জড়ো হয়ে লাল ঝান্ডা নিয়ে মিছিল করে জমিতে নেমে ধান রুইয়ে দিয়েছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে কিন্তু পাট্টা পাওয়া সব তথ্য নিয়ে ফিরে যায় পুলিশ ও আর আই। এদিন খেতমজুর নেতা মিজানুর রহমান জানিয়েছেন পাট্টাদার, বর্গাদারদের জমি থেকে জোর উচ্ছেদ করা হলে সেই জমি পুনর্দখল করে ফিরিয়ে দেওয়া হবে পাট্টাদারদের। কৃষকসভা ও খেতমজুর ইউনিয়ন যৌথভাবে লড়াই চালাবে এই সংগ্রামে।

Comments :0

Login to leave a comment