গাজায় গণহত্যা এবং গাজা অভিমুখী ত্রাণবাহী জাহাজ বহর 'ফ্লোটিলা'র উপর ইজরায়েলী আক্রমণ, আটক ও গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে, গ্রেটা থুনবার্গ সহ আন্তর্জাতিক পরিবেশবিদ, রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনের কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবীতে, অবিলম্বে গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবীতে, মার্কিন মদতপুষ্ট যুদ্ধবাজ ইজরায়েলকে তীব্র ধিক্কার জানিয়ে কলকাতায় ফের পথে নামলো রাজ্যের বামপন্থী দল সমূহ।
এদিন রবীন্দ্র সদন থেকে শুরু হয়েছে মিছিল। শেষ হবে ধর্মতলার লেনিন মূর্তির পাদদেশে। মিছিলে উপস্থিত আছেন প্রবীন সিপিআই(এম) নেতা এবং বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। তিনি বলেন, ‘যে ভাবে ফ্লোটিলা আটকানো হয়েছে এবং গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা ভয়ঙ্কর। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করা হচ্ছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘ সঠিক ভূমিকা পালন করছে না। খাদ্য এবং ওষুধ নিয়ে যাওয়া কোন জাহাজকে আটকানো যায় না।’
কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এই ভারত ১৯৫৪ সালে বান্দুং সম্মেলন থেকে বলেছিল কোন দেশে কোন দেশের বিষয় নাক গলাতে পারবে না। এখন দক্ষিণপন্থী রাজনীতির কারণে ভারত সেই অবস্থা থেকে সড়ে এসেছে।’ বিমান বসুর কথায়, ‘দক্ষিণপন্থী রাজনীতি মানুষের মুক্তি সংগ্রামকে পছন্দ করে না, সমর্থন করে না।’
প্রসঙ্গত, নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রসঙ্ঘের অধিবেশনে যোগ দিতে এসে বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন নেতানিয়াহু। রাষ্ট্রসঙ্ঘে নেতানিয়াহুর ভাষণের সময় হল ছেড়ে বেরিয়ে যান বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা। যার ফলে স্পষ্ট নেতানিয়াহু এবং ইজরায়েল-মার্কিন নীতিতে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে সব দেশের মধ্যেই।
দু বছর ধরে গাজায় ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে জায়নবাদী ইজরায়েল। গোটা গাজার জনপদ ধ্বংসের মুখে। একদিকে মহামারি, অপুষ্টি অন্যদিকে মুহুর্মুহ বোমাবর্ষণ। প্রতিবাদ হচ্ছে সর্বত্র। একাধিক বার পথে নেমেছে সিপিআই(এম) সহ বিভিন্ন বামপন্থী দল ও গণ সংগঠন গুলি।
এদিন মিছিলে ভারতের জাতীয় পতাকার পাশাপাশি প্যালেস্তাইনের পতাকাও দেখা যায়।
মিছিল শেষে ধর্মতলায় সংক্ষিপ্ত সভায় সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘যে ভাবে প্যালেস্টাইনের সমস্ত অসামরিক ক্ষেত্রগুলিকে বেছে বেছে আক্রমণ করা হচ্ছে তা অত্যন্ত নিন্দাজনক। গোটা পৃথিবীর মুক্তি কামী মানুষ প্যালেস্টাইনের সংহতিতে রাস্তায় নামছেন। ইজরায়েলের জায়নবাদী আক্রমণ এবং সেই আক্রমণের পেছনে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সরাসরি মদত রয়েছে। দুর্ভিক্ষ অপুষ্টিতে ভুগছে গোটা গাজা। বামপন্থীদের দায়িত্ব পৃথিবীর সকল গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল আন্দোলনের পাশে দাঁড়ানো। এই কলকাতার রাস্তাতেই তোমার নাম আমার নাম ভিয়েতনাম ভিয়েতনামের স্লোগান হয়েছিল ভিয়েতনামের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে। আজকের প্রায় পঞ্চাশ বছর পর একই ভাবে আক্রমণের বিরুদ্ধে কলকাতা উদ্বেলিত হচ্ছে। আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদ ভিয়েতনামকে শেষ করতে পারেনি। বর্তমানে ইজরায়েল ও আমেরিকান যৌথ আক্রমণের কাছে এই লড়াই নতজানু হবে না। প্যালেস্টাইন এবং গাজাকে যারা নিশ্চিহ্ন করতে চায় তাদের শক্তি মানবতার শক্তির কাছে পরাজিত হবেই।’
Comments :0