বইকথা — নতুনপাতা
শরৎ-এর একমুঠো উচ্ছ্বাস: অনাবিল ১৪৩২
সৌরভ দত্ত
শারদোৎসব মানেই শিশুদের আনন্দের অনাবিল উদ্ভাস।এক টুকরো উন্মুক্ত উচ্ছ্বাস।আর সে যদি হয় তো শিশুকিশোরদের হাতের লেখায় ও রঙের রেখায় পুষ্ট তাহলে তা আকর্ষণীয় হয়ে হয়ে চলে। শিশুকিশোরদের সৃজনশৈলী ও চমৎকারিত্বে ভরপুর সেরকমই এক পূজা বার্ষিকী অনাবিল ১৪৩২।নবম বর্ষের প্রথম সংখ্যা এটি।পত্রিকার এক মনোরম প্রচ্ছদ নির্মাণ করেছেন অনুপ রায়। ছোটদের কাঁচা হাতে বেশ কিছু পরিণত ছোটগল্প লেখা হয়েছে এই সংখ্যায়।যার মধ্যে দেবরাজ মেহেতার গুপ্তধনের দেশ,হৃদি মণ্ডলের সৌমিলির বুদ্ধি,সৌপ্তিক ভট্টাচার্যের ডোডোর ডাক্তারি,সুজয় সাহার বজরঙ্গীপুরের বিছুটি পাতা,ঈশা সাহার এক মেয়ে ও কুসুমের গল্প,শ্রেয়ার মণ্ডলের বারমুডা ট্রায়াঙ্গল খুব উল্লেখযোগ্য গল্প। ছোটদের লেখা কবিতার মধ্যে আসছে ঋষিত ধরের আসছে পুজো–“আসছে ফিরে গণেশদাদা/সঙ্গে, লাড্ডুপ্রেমী ইঁদুর হাঁদা/আসছে আবার কার্তিক/ময়ূর নাচবে চারদিক।” কবিতাযটি বেশ হাস্যরসাত্মক। পদ্মশ্রী দুখু মাঝিকে নিয়ে এক টুকরো মাণিক্যময় কবিতা লিখেছে অনুব্রত সরখেল–“রাস্তার পাশে দেখো যদি মহীরুহ/জানবে সেটাও লাগিয়েছেন দুখু মাঝি,/গাছেদের সাথে সখ্যতা তার ভারি/দুঃখটাকে ও মেনে নিতে তিনি রাজি।”দূষণমুক্ত নামাঙ্কিত সুন্দর কবিতায় শ্যামসুন্দর মণ্ডল লিখেছেন–“মাটির উপর ক্রংক্রিটেরই/জঙ্গলে না ঘুরে,/ময়না বলে চন্দনাকে/চল চলে যাই দূরে।”এই পূজা বার্ষিকীর ভিতরে স্থান পেয়েছে–অনুপম বিশ্বাসের–‘রক্তেলেখা স্বাধীনতা’,দেবদৃতা ভাদুড়ির–‘অংক কি কঠিন ’,অগ্নিশিখা অগ্নিহোত্রীর ‘টুসু পরব’ প্রভৃতি বেশ কিছু অসম্ভব ভালো গদ্যধর্মী লেখা। এছাড়া রয়েছে বড়গল্প,হারানো গল্প,নাটক, সাক্ষাৎকার,কমিকস, নিবন্ধ,কীর্তি রেখে যাওয়া ব্যক্তিদের কথা, ধারাবাহিক,খাই-খাই,ও ছাত্রছাত্রীদের অঙ্কনশৈলী। প্রখ্যাত পট চিত্রকর রেবা সালের সাক্ষাৎকার নিয়েছে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী শরণ্যা সিনহা এবং বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার সন্দীপ রায়ের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছে দূর্বা গাঙ্গুলি। সমগ্র পূজা বার্ষিকীটির পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে একটা শুদ্ধতার শরৎ বাতাস ভেসে আসে।
পূজাবার্ষিকী ১৪৩২– অনাবিল
সম্পাদক ও প্রকাশক–দূর্বা গাঙ্গুলী
প্রচ্ছদ–অনুপ রায়
অভ্যন্তরীণ অলংকরণ–শুভেন সিংহ ও ঈশ্বরচন্দ্র কর্মকার
মন্তব্যসমূহ :0