Election Commission of India

মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তরকে আরও স্বাধীনতা দিতে কমিশনের চিঠি মুখ্য সচিবকে

জাতীয় রাজ্য

রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার অফিসকে আরও স্বাধীনতা দিতে রাজ্য সরকারকে বিশেষ নির্দেশ দিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। রাজ্যে ভোটার তালিকার স্পেশাল ইনটেন্সিভ রিভিশন (এসআইআর) শুরুর আগে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তর কে স্বাধীন প্রতিষ্ঠানে পরিনত করতেই উদ্যোগী হয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে ১৭ জুলাই রাজ্যের মুখ্য সচিবকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বর্তমানে সিইও দপ্তরের আর্থিক বিষয় থেকে কর্মী নিয়োগ সবটাই রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের অধীনে। এখন যিনি রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল তিনি আ্যডিশনাল চিফ সেক্রেটারি স্বরাষ্ট্র এবং পাহাড় বিষয়ক দপ্তরেরও দায়িত্বে রয়েছেন। নির্বাচন কমিশনর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগরওয়াল এখন থেকে শুধু মাত্র সিইও’র দায়িত্বই পালন করবেন। স্বাধীন দপ্তর হিসাবে কাজ করবে সিইও দপ্তর। এ বিষয়ে আর্থিক এবং প্রতিষ্ঠানিক স্বাধীনতা সিইও দপ্তরকে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে কমিশনের চিঠিতে।
নির্বাচন কমিশন চিঠিতে বলেছে সিইও দপ্তর একটি স্বাধীন স্বতন্ত্র নির্বাচন দপ্তর হিসাবে কাজ করবে। রাজ্য সরকারের কোনও দপ্তরের কোনও প্রভাব সিইও দপ্তরের উপর থাকবে না। দপ্তরের বাজেটও হবে আলাদা। আর্থিক এবং প্রশাসনিক বিষয়ে স্বাধীন ভাবে কাজ করবে এই দপ্তর। যাতে সিইও দক্ষতার সঙ্গে নিরপেক্ষ ভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে পারেন। এক্ষেত্রে যদি কোনো ফিন্যান্সিয়াল অ্যাডভাইজারের সাহায্যের প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে সিইও রাজ্য সরকারের সাহায্য নিতে পারবেন।
এই নির্দেশে স্পষ্ট, মুখ্যয় নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তর আর রাজ্যের অধীনে থাকবে না। এতদিন এই দপ্তর সংশ্লিষ্ট রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের অধীনে পরিচালিত হত। কমিশনের বক্তব্য, প্রতিটি রাজ্যেরর এই বিভাগ স্বাধীন ভাবে পরিচালিত হয়। তাই পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রেও এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। 
বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধন স্পেশাল ইনটেন্সিভ রিভিশনের কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। এদিন বিহারে ভোটার তালিকার বিশেষ গভীর সংশোধনের বিষয় নিয়ে সংসদে বিক্ষোভ দেখান বিরোধী সাংসদরা। বাদল অধিবেশন দ্বিতীয় দিনে বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকার বিশেষ সমীক্ষা নিয়ে সরব হন বিরোধীরা। শুরু হয় তুমুল হৈহট্টগোল। বন্ধ হয়ে যায় অধিবেশন।
গত ২৪ জুন বিহারে বিধানসভা ভোটের কয়েক মাস আগে নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকার বিশেষ সার্বিক সংশোধন বা এসআইআর এর শুরু করেছে। কমিশনের নোটিশে বলা হয়েছে ২০০৩ সালের পর থেকে ভোটার তালিকায় যাদের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে তাদের বাবা মায়ের জন্মশংসাপত্র পত্র একাধিক নথি জমা দিতে হবে। তার ভিত্তিতে তাদের নাম ভোটার তালিকায় থাকবে। বিরোধীদের দাবি কোন আলোচনা ছাড়াই নির্বাচন কমিশনে এই নির্দেশিকা জারি করেছে। তাদের দাবি ঘুর পথে এনআরসির কাজ করানো হচ্ছে নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে। এই নির্দেশিকা নিয়ে ইতিমধ্যে সরব হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দল গুলো। উল্লেখ্য প্রায় ২.৫ কোটি ভোটারের নাম বাদ যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যেই যেই ভোটারদের থেকে এই সব নথি চাওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে অনেকে পরিযায়ী শ্রমিক এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ।
নির্বাচন কমিশন মঙ্গলবার জানিয়েছে যে বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের ফলে প্রায় ৫২ লক্ষ নাম বাদ পড়ছে। তাদের মধ্যে ১৮ লক্ষের মৃত্যু হয়েছে। বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় স্থানান্তরিত হয়েছেন ২৬ লক্ষ ভোটার। দু'ই জায়গায় নথিভুক্ত করা আছে সাত লক্ষ ভোটারের নাম। ১ অগাস্ট প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকায় সমস্ত যোগ্য ভোটারদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কমিশন আশ্বস্ত করেছে যে তালিকায় পরিবর্তন আনার জন্য সময় দেওয়া হবে, যাতে যাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন তাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যায়। কমিশন জানিয়েছে যে, কাগজপত্র সহ বা ছাড়াই গণনা ফর্ম জমা দেওয়া প্রতিটি ভোটারকে ১ আগস্ট প্রকাশিত খসড়া তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। যদি কোনও ভোটার তার গণনা ফর্ম জমা দিতে অক্ষম হন, তবে ঘোষণাপত্রের সাথে নির্ধারিত ফর্মে দাবি জমা দেওয়ার পরে তাদের চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

Comments :0

Login to leave a comment