নতুনপাতা : মণ্ডা মিঠাই
কেন পালনীয় শিক্ষক দিবস
সৌম্যদীপ জানা
আমরা সবাই জানি, ৫ই সেপ্টেম্বর দিনটি কি সমগ্র ভারতবর্ষ ব্যাপি শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা হয়।এই দিনটি ভারতের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি এবং এক অনন্য শিক্ষাবিদ স্বনামধন্য ভঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণনের জন্ম দিবসকে সামনে আমরা শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করে থাকি। এই দিনে স্কুলে স্কুলে ছাত্র শিক্ষকের মধ্যে উপহার বিনিময়ের ধুম পড়ে যায়। স্যারদের পা ছুঁয়ে প্রণাম করার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়। কোচিং টিউশনে টিচার্স ডে সেলিব্রেশনের জন্য চাঁদা তোলা, কেক কাটা এবং নানান রকম আমন্ত্রন আমাদের ছাত্র জীবনের এক অসাধারণ স্মৃতি জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে যায়। কিন্তু শিক্ষক দিবস মানে শুধু এই নয় যে কেবলমাত্র আড়ম্বরের সঙ্গে উদযাপন করার দিন, শিক্ষক দিবস মানে শিক্ষককে কৃতজ্ঞতা জানানোর দিন। সেই শিক্ষককে যিনি আমাদের জীবনে প্রতিটি পদক্ষেপ চলতে সাহায্য করেন।
আমাদের জীবনে প্রথম শিক্ষক আমাদের জন্মদাতা পিতা ও মাতা। তাঁদের কাছেই আমরা জীবনের প্রথম শিক্ষা পাই। আমাদের মা আমাদের প্রথম মা বলতে শেখান অর্থাৎ প্রথম ভাষার সঙ্গে আমাদের পরিচয় করান, আমাদের বাবারাই জীবনের প্রথম পা ফেলতে শেখান এই সুন্দর পৃথিবীর ওপর। একটু বড় হলে মা আমাদের অক্ষর পরিচয় করান এবং বাবা আমাদের সেখানে কিভাবে এই বিশাল পৃথিবীতে টিকে থাকতে হবে শিখিয়ে দেন।তারপর আমরা যখন একটু বড় হই , আমাদের পা যখন প্রথমবার স্কুলের ফটক পেরোয়ে তখন আমাদের জীবনে আসেন আমাদের প্রথম স্কুলের স্যার অর্থাৎ আমাদের প্রথম সার্বিক শিক্ষক। তারপর তাঁর হাত ধরেই আমাদের জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে কিভাবে চলতে হবে, কিভাবে পড়াশোনা করতে হবে, কিভাবে নিজের আচার-আচরণ সুন্দর করতে হবে সবই আমাদের শেখা। তাঁরাই আমাদের উৎসাহিত করেছেন আমাদের ভেতরের প্রতিভাকে সকলের সামনে আনতে। হয়তো তাঁরা না থাকলে আমরা জীবনে যতটা সফল হতে পারতাম তার সামান্যও হতে পারতাম না। আমাদের মধ্যেও যে কিছু করে দেখানোর ক্ষমতা রয়েছে তা হয়তো আমরা জানতেও পারতাম না!! কিন্তু বর্তমান সময়ে শেষ শিক্ষকদের নানান ভাবে হেনস্তা হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষদের কাছে। ছাত্রদের অতিরিক্ত বিশৃঙ্খলতায় শিক্ষকরা আজ নাজেহাল। তারা শাসন করার আপ্রাণ চেষ্টা করলেও বর্তমান সমাজে ছাত্রদের অবাধ্য আচরণের ফলে তাদের সকল প্রকার চেষ্টা বৃথা হয়ে যায়।
আমরা মনে করি আমাদের স্যারেরা হয়তো আমাদের কেবল বকেন, কিন্তু তাদের বকার মধ্যে যে আমাদের জীবনের অগ্রগতির চাবিকাঠি লুকিয়ে আছে তা হয়তো আমরা সেই বয়সে বুঝতে পারি না। কিন্তু সত্যি সত্যি শিক্ষকেরা আমাদের জীবনের ভিত তৈরি করেন যার উপর আমাদের জীবনের ভবন সম্পূর্ণরূপে দাঁড়িয়ে থাকে। আসল কথা হলো মানুষের জীবনের ভিত যদি নড়বড়ে হয় তবে তার জীবন যে কোনদিন তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়তে পারে । সেই কারণে শিক্ষকের ভূমিকা জীবনের শুরুতে চরিত্র গঠন এবং মানবিক শিক্ষার পাঠ দেওয়া যা মানব জীবনের অন্তিম লগ্ন পর্যন্ত কাজে লাগে। শিক্ষক আমাদের গুরু তাই গুরুর কাছে শিষ্যের যে সকল কর্তব্য পালন করা উচিত আমরা সেই সকল কর্তব্য পালন করার জন্য বদ্ধপরিকর হয়ে থাকবো। কোন এক শিক্ষকের কাছে শিক্ষা শেষ করলেও আমরা তাকে আজীবন মনে রাখব এই হবে আমাদের শপথ। শিক্ষক দিবসের মাহাত্ম্য সেখানেই যখন ছাত্র শিক্ষক পরস্পর সারা জীবন সম্পৃক্ত হয়ে থাকবে।
অষ্টম শ্রেণী
কল্যাণ নগর বিদ্যাপীঠ খড়দহ উত্তর ২৪ পরগনা
Comments :0