Rahul Gandhi

ভোটযন্ত্র, ইডি, সিবিআই হলো মোদীর প্রাণভোমরা ন্যায় যাত্রার শেষে সমাবেশে রাহুল

জাতীয়

‘‘নরেন্দ্র মোদী মুখোশ মাত্র। আসল লড়াই শক্তির বিরুদ্ধে।’’ রবিবার মুম্বাইয়ের শিবাজী পার্কে ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ শেষে এক সমাবেশে একথা বলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। কী সেই ‘শক্তি’ তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘হিন্দুত্ববাদে শক্তি বলে একটা কথা আছে। তবে আমরা এমন এক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছি যে সবাইকে ভয় দেখাচ্ছে।’’ আবার মোদীর নাম মুখে না নিয়েই তাঁর কটাক্ষ, ‘‘রাজার প্রাণভোমরা রয়েছে বৈদ্যুতিন ভোট যন্ত্রের মধ্যে। আর প্রাণভোমরা রয়েছে ইডি, সিবিআই এবং আয়কর দপ্তরে।’’ সাম্প্রতিককালের মধ্যে এদিন বিরোধীদের সর্ববৃহৎ সমাবেশের সাক্ষী থাকলো শিবাজী পার্ক। এদিনের সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বামপন্থীরাও। তবে ইন্ডিয়া মঞ্চের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ভাষণ দিয়েছেন।
রাহুল গান্ধী বলেন, ‘‘আমরা কোনও নির্দিষ্ট দল বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করছি না। লড়াই করছি শক্তির বিরুদ্ধে।’’ সেই শক্তি সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি সদ্য কংগ্রেসত্যাগী মহারাষ্ট্রের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘‘উনি দল ছাড়ার সময় আমার মা সোনিয়াজীর সঙ্গে দেখা করে বলেছিলেন যে তাঁর সেই ক্ষমতা নেই যে ওই শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করবেন। তিনি জেলে যেতে চান না। তবে তিনি একা নন, এরকম কয়েকশো বিরোধী দলের নেতাকে এরকম হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।’’ উপস্থিত জনগণের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘‘আপনারাই ভারতমাতা। আপনাদেরও ওই শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের দায়িত্ব আছে। আমি আপনাদের এবং এই দেশকে বাঁচানোর জন্য যে কোনও লড়াইয়ে প্রস্তুত। বিদ্বেষ ছড়াতে দেবেন না। ঘৃণার বাজারে ভালোবাসার দোকান খুলুন।’’
‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র পর ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ কেন করতে হলো তারও ব্যাখ্যা এদিন সমাবেশে দিয়েছেন রাহুল গান্ধী। তিনি বলেছেন, ‘‘সংবাদমাধ্যমে দেশের জ্বলন্ত সমস্যার কথা তুলে ধরছে না। তারা বেকারত্ব, মুদ্রাস্ফীতি, হিংসা, কৃষকদের সমস্যা, অগ্নিবীর প্রশ্নে সম্পূর্ণ নীরব। তারা মোদী ভজনায় ব্যস্ত থাকে সারাক্ষণ। এসব কথা আপনাদের সামনে তুলে ধরার জন্যই আমাদের এই ৪ হাজার কিলোমিটার পথ হাঁটা।’’
সমাবেশে আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব বস্তুত রাহুল গান্ধীর সুরেই বলেন, ‘‘ইন্ডিয়া মঞ্চ মোটেই নরেন্দ্র মোদী কিংবা অমিত শাহ নামক ব্যক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করছে না। লড়াই করছে ঘৃণার মতাদর্শের বিরুদ্ধে। তাই এই মুহূর্তে প্রয়োজন দেশের বৈচিত্র এবং ভ্রাতৃত্ববোধকে সুরক্ষিত রাখা।’’ এরপরেই তিনি বলেন, ‘‘মোদী হলেন মিথ্যার কারিগর, পাইকারি ব্যবসায়ী এবং বিপণনকারী। তবে আমাদের মতো সত্য কথা বলি যাঁরা, তাঁরা এসবকে ভয় পাই না।’’ তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন নির্বাচনী বন্ডকে ‘ভদ্রলোকদের দুর্নীতি’ বলে তীব্র ভাষায় কটাক্ষ করেন। এরই সঙ্গে জানিয়ে দেন, ‘‘ইন্ডিয়া মঞ্চ এরই বিকল্প হিসাবে ধর্মনিরপেক্ষ, যুক্তরাষ্ট্রীয় এবং এক অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন করবে।’’ ফের মোদীকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘দশ বছর ধরে বিদেশ ভ্রমণ এবং মিথ্যা প্রচার চলছে। আমরা এসব বন্ধ করে দেবো।’’ শেষে তিনি বলেন, ‘‘এখন বিজেপি’র থেকে দেশের সামনে আর কোনও বড় শত্রু নেই।’’ জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা
বলেন, ‘‘চড়া দাম আনাজের, চড়া দাম জ্বালানির। কর্মহীন আমাদের যুবরা। আজ এককাট্টা হতে হবে। রোজগার বাঁচাতে হবে। সংবিধানকে বাঁচাতে হবে। ভারতকে বাঁচাতে হবে।’’ জম্মু-কাশ্মীরের আরেক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি অভিযোগ করেন যে, ‘‘মোদী মুখে ৪০০ আসনের কথা বলছে স্রেফ সংবিধান পরিবর্তনের স্বার্থে।’’ এনসিপি নেতা শারদ পাওয়ার বলেন, ‘‘এই মুম্বাই থেকেই ‘ভারত ছাড়ো’র ডাক দিয়েছিলেন মহাত্মা গান্ধী। এদিনের সমাবেশ থেকে ইন্ডিয়া মঞ্চের নেতাদেরও একই আহ্বান জানানো উচিত যে, বিজেপি-কে ক্ষমতাচ্যুত করো।’’
 

Comments :0

Login to leave a comment