Real Madrid

এখনও পর্যন্ত রিয়ালের খেলায় সন্তুষ্ট কোচ জাবি আলোন্সো

খেলা

ছবি সৌজন্য - রিয়াল মাদ্রিদ অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ

বুধবার রাতে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের রাউন্ড অফ সিক্সটিনের ম্যাচে জুভেন্তাসকে ১-০ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টারে জায়গা করে নিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ । এই প্রতিযোগিতার প্রথম ম্যাচেই সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলালের কাছে ১-১ গোলে আটকে যায় রিয়াল। তখন জাবি আলোন্সোর ফরম্যাশন নিয়ে বিস্তর সমালোচনা হয়েছিল। চার ডিফেন্সে খেলে প্রথমেই ফাউল করে লাল কার্ড দেখেন সেন্টার ব্যাক রাউল এসেন্সিও দ্বিতীয় ম্যাচে। তবে তারপর দশজনে খেলেই পাচুয়া এফসিকে হারায় রিয়াল মাদ্রিদ। গ্ৰুপের শেষ ম্যাচে আলোন্সো নিজস্ব ফরম্যাশনে ফিরতেই রিয়ালও ফেরে নিজস্ব ছন্দেই। স্যালজবার্গের বিরুদ্ধে ৩-৫-২ ফরম্যাশনে খেলেই বাজিমাত করেন আলোন্সো। এম্ব্যাপে না থাকার সত্ত্বেও সেই ম্যাচে ৩-০ গোলে জিতেছিল রিয়াল। বুধবারের ম্যাচে জুভেন্তাসের বিরুদ্ধে যেন আরো উন্নততর ফুটবল খেলল মাদ্রিদ। এই ম্যাচে তাদের ফরম্যাশন শুরুতে ৩-৪-৩ লাগলেও। খেলার সময় আদতে তা হয়ে যায় ৩-৫-২। উইং থেকে সরে এসে দুই স্ট্রাইকার ভিনিসিয়াস ও গার্সিয়ার পিছনে একটু ডিপ থেকে আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার হিসেবে খেলেন জুড বেলিংহ্যাম। আন্সেলোত্তির অধীনে যখনই চুয়ামেনি সেন্টার ব্যাক হিসেবে খেলেছেন। গেল গেল রব উঠেছে ততবারই। তবে আলোন্সো যেন নতুন জীবন দিয়েছেন চুয়ামেনিকে। রুডিগার ও হিউসেনের সঙ্গে জুটি বেঁধে দারুণভাবে ঠান্ডা মাথায় সামলাচ্ছেন রক্ষণভাগ। মাঝমাঠে নতুন দায়িত্ব বেশ ভালোভাবেই পাওলিন করছেন আর্দা গুলার। বছর ১৯ এর এই খেলোয়াড়ও দলে  ব্রাত্য ছিলেন আন্সেলোত্তি জমানায় । দুরন্ত স্কিল ও পাস বাড়ানোর সক্ষমতায় যেন তিনি মনে করাচ্ছেন একদা রিয়ালে খেলে যাওয়া জার্মান মিডফিল্ডার মেসুট ওজিলের কথা। ৫মিডফিল্ডারে রাইট উইংয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছেন সদ্য রিয়ালে যোগ দেওয়া ইংলিশম্যান ট্রেন্ট আলেকজান্ডার আর্নল্ড। তার বিষ মাখানো নিঁখুত সেন্টার থেকেই হেড করে দলকে জয় এনে দেন গঞ্জালো গার্সিয়া। ৩-৫-২ এর এই জটিল ফরম্যাশনে দুই উইং ব্যাককে নিজেদের পজিশন একদম সঠিক রাখতে হয় । উপর নিচে ওঠা নামা থেকে শুরু করে রক্ষণ ও আক্রমণেও সমানভাবে দায়িত্ব পালন করতে হয়। এই দায়িত্ব রিয়ালের দুই উইং ব্যাক ট্রেন্ট ও ফ্র্যান গার্সিয়া দারুণভাবেই পালন করছেন। সেন্টার ব্যাক পজিশনে নবাগত ডিন হিউসেন প্রত্যেকদিনই নজরকাড়া ফুটবল খেলছেন। প্রায় ৬ফুট ৫ইঞ্চির এই দীর্ঘকায় ডিফেন্ডার ঠান্ডা মাথায় নিজের দায়িত্ব পালন করেন। সঙ্গে রয়েছে ডিফেন্সচেরা পাস বাড়ানোর ক্ষমতাও। আলোন্সোর সিস্টেমে খেলাটি শুরু হয় একদম রক্ষণভাগ থেকেই। ফলে হিউসেনের মতো একজন বলপ্লেয়ার ডিফেন্ডার পেয়ে যাওয়ায় রিয়ালে কাজটা অনেকটাই সহজ হয়ে গেছে আলোন্সোর। ২০২৩ সালে এই জুভেন্তাসেই খেলতেন হিউসেন। তবে তৎকালীন জুভেন্তাসের কোচ থিয়াগো মট্টা মাত্র একম্যাচ খেলিয়েই তাকে একপ্রকার বহিস্কার করে দেন।তারপর ইংল্যান্ডের বোর্নমাউথে নিজের জাত চেনাতে থাকেন পরবর্তী মরশুম থেকেই । তাই ইউরোপের ' ওল্ড লেডি ' ( জুভেন্তাসের ডাকনাম ) যে স্বর্ণখনিকে বহিস্কার করলেও  , আলোন্সোর জহুরির চোখ ঠিকই খুঁজে নিয়েছিল এই স্প্যানিশ হীরা হিউসেনকে। টনি ত্রুস গত মরশুমে অবসর নেওয়ার পর থেকেই রিয়ালের মাঝমাঠকে খুব ছন্নছাড়া দেখাচ্ছিল। ত্রুসের ছেড়ে যাওয়া ৮ নম্বর জার্সি গায়ে চাপিয়ে আলোন্সোর অধীনে সেই দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়েছেন ভালভার্দে। বুধবার তাই তার হাতেই উঠল ম্যাচ সেরার পুরস্কার। স্ট্রাইকারে বুধবারও প্রথম একাদশে ছিলেননা এম্ব্যাপে। তবে সেই অভাব একেবারেই বুঝতে দেননি গঞ্জালো গার্সিয়া। বছর ২১ এর এই স্ট্রাইকার রিয়ালের একাডেমিরই খেলোয়াড়। ২০২৩ থেকে দলে রয়েছেন তিনি। আন্সেলোত্তি জমানায় সুযোগ মেলেনি। আলোন্সোর অধীনে যেন অনেকটা কিংবদন্তি রাউলের কথা মনে করাচ্ছেন এই স্ট্রাইকার। বুধবার সুযোগসন্ধানী এই স্ট্রাইকার সঠিক সময়ে ট্রেন্টের সেন্টার থেকে মাথা ছুঁইয়ে কাজের কাজটা করেছিলেন। ৪ম্যাচে ৩টি গোল ও ১টি এসিস্ট হয়ে গেল এই স্প্যানিশের। কোয়ার্টার ফাইনালে রিয়াল মুখোমুখি হবে ডর্টমিউন্ডের । ক্লাব বিশ্বকাপকে পাখির চোখ করেছেন আলোন্সো। এই প্রতিযোগিতা জিতেই মরশুম শুরু করতে চাইছে ' লস ব্লাঙ্কোস ' রা। ক্লাব বিশ্বকাপের পর আর এক স্প্যানিশ লেফট ব্যাক আলভারো কারেরাস যোগ দিতে চলেছেন দলে। আলোন্সোর কোচিংয়ে তাই রাজকীয়ভাবেই বিরাজ করা রিয়ালকে রুখতে ইউরোপকে অনেক স্ট্র্যাটেজি অবলম্বন করতেই হবে।          

 

Comments :0

Login to leave a comment