প্রতীম দে: হালিশহর
ইরশাদ আনসারি হালিশহরের হাজিনগর এলাকার বাসিন্দা। এই এলাকায় দশকের পর দশক কমিউনিস্ট পার্টিকে যাঁরা প্রতিষ্ঠা করেছেন মানুষের মধ্যে তাঁদের অন্যতম তিনি।
হালিশহর দিয়ে যখন ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’ যাচ্ছে তখন অশক্ত শরীর নিয়ে উপস্থিত ছিলেন ইরশাদ আনসারি।
সংখ্যালঘু এলাকা হাজিনগর। হিন্দিভাষীদের বসবাস বেশি। বয়সে আশি পার করা ইরশাদ আনসারির কথায়, ‘‘ওরা হিন্দু মুসলিমে ভাগ করার চেষ্টা করছে। কিন্তু মানুষ তো ভালো নেই। শ্রমিকরা মজুরি পায় না। পৌর পরিষেবা ঠিক নেই। ধর্মের নেশায় মানুষ আর বুঁদ হচ্ছে না।’’
উত্তর ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে সোমবার চলছে ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’। সময় যত গড়িয়েছে বেড়েছে মানুষের ভিড়। কারখানার শ্রমিক থেকে শুরু করে স্কুল কলেজের পড়ুয়া, সবাই আপন করে নিয়েছে এই যাত্রাকে।
ইছাপুর রাইফেলস কারখানার সামনে সমাবেশ হয়। সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন, 'শ্রমিকের কোন ধর্ম হয় না। চা বাগানের শ্রমিক মজুরি পায় না। বিড়ি শ্রমিক মজুরি পায় না। একদিকে বেকারি বাড়ছে, অন্যদিকে শ্রমিকদের ওপর শোষণ বাড়ছে। বামফ্রন্ট সরকারের সময় রাজ্যের অর্থনীতি উন্নতি করেছিল। ছোট বড় কারখানা তৈরি হয়েছিল। আজ ২২ হাজার কারখানার গেটে তালা পড়ে গিয়েছে। কারখানা, সরকারি সংস্থা না থাকলে প্রান্তিক মানুষ বাঁচবে না। এরা সংবিধানের নামে শপথ নিয়েছে কিন্তু আজ একের পর এক সংস্থাকে বিক্রি করে দিচ্ছে।'
তিনি বলেন, 'এই রাজ্যে শিল্প সম্মেলন হয় কিন্তু শিল্প হয় না। সরকার বদলাতে হবে, তবে যুবরা, শ্রমিকরা বাঁচবে।'
বারাকপুরের সভায় প্রাক্তন সাংসদ এবং প্রবীণ সিপিআই(এম) নেতা তড়িৎ বরণ তোপদার বলেন, 'লুঠের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।'
মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী গোটা দেশকে বেচে দিচ্ছেন। ‘পিকে’ সিনেমায় দেখিয়েছিল ধর্মকে ব্যবহার করে চুরি করা হয় কিভাবে।'
তৃণমূল বিজেপিকে নিশানা করে বলেন, 'আরএসএস এর দুই সন্তান মোদি আর মমতা। একজন রাম মন্দির করে আর একজন জগন্নাথ ধাম। এই রাজ্যের মানুষ স্কুল, কলেজ করেছিল। এখন মমতা সরকার যুবদের হাত থেকে কাজের খাম কেড়ে নিয়ে মাথায় মন্দির তৈরির ইট তুলে দিচ্ছে।'
তিনি বলেন, '২০১১ সালে গুন্ডাদের থানা থেকে ছড়িয়েছিল মমতা ব্যানার্জি। গুন্ডারাজকে প্রশ্রয় দিয়েছে। লাল ঝান্ডা সেই সরকার চায় যা এই গুন্ডারাজকে প্রশ্রয় দেবে না।'
Comments :0