বিজেপির সভা থেকে নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘‘বাংলার যুব সমাজ বাংলার ভবিষ্যৎ ঠিক করবে। বাংলায় একাধিক সমস্যা আছে – সমাজে অরাজকতা বাড়ছে, নারী নিরাপত্তা নেই, যুব সমাজের মধ্যে হতাশা গ্রাস করেছে, বেকারত্ব বাড়ছে, দুর্নীতি হচ্ছে, গরীবদের লুঠ করা হচ্ছে। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি হাজার হাজার শিক্ষক এবং তাদের পরিবারের ভবিষ্যৎকে শেষ করে দিয়েছে। বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থাকে শেষ করে দেওয়া হয়েছে।’’
উল্লেখ্য এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির মামলার তদন্ত দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে যাচ্ছে সিবিআই। এখনও পর্যন্ত শেষ হয়নি তদন্ত। উল্টে কেন্দ্রীয় এজেন্সির গাফিলতিতে জামিন পেয়েছেন মানিক ভট্টাচার্য সহ নিয়োগ দুর্নীতি সাথে যুক্ত একাধিক তৃণমূল নেতা এবং প্রশাসনিক বক্তব্য। এই বিষয় নিয়ে কোন কথা বললেনি প্রধানমন্ত্রী। চাকরি হারাদের পাশে যে তার দল এবং সরকার আছে এমন কোন বার্তাও তিনি দেননি।
এদিনের সভার শুরু থেকেই বিজেপির বক্তব্য ছিল সাম্প্রদায়িক। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারি যিনি এক সময় তৃণমূলের দুর্নীতির শরিক ছিলেন তিনি বলেন, হিন্দুদের বাঁচাতে হিন্দু বিরোধী সরকারকে হারাতে হবে। বাংলার উন্নয়ন বা দুর্নীতির জন্য তৃণমূল সরকারকে পরাস্ত করার যে প্রয়োজন এমনটা বলেননি শুভেন্দু। বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘’১৪ বছর ধরে বাংলায় লুঠ করছে, তোষনের রাজনীতি করছে তৃণমূল। হিন্দু বিরোধী তৃণমূলকে হারাতে আজ শপথ নিতে হবে এই সভা থেকে। হিন্দুদের রক্ষা করতে বিজেপিকে আনতে হবে ক্ষমতায়।’’
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘কাশ্মীর আর মূর্শিদাবাদ এক হয়ে গিয়েছে। ২২ এপ্রিল পহেলগামে সিঁদুর দেখে গুলি করা হয়েছে। মূর্শিদাবাদেও এই একই ঘটনা ঘটেছে।’’
১০০ দিনের কাজ, আবাসের দুর্নীতি, যুবদের কর্মসংস্থান এই সব কথা এদিন স্থান পায়নি বিজেপি নেতাদের বক্তব্যে। তাদের কথায় শুধু ছিল একটাই জিনিস তা হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতার বিষ। প্রধানমন্ত্রী সভা থেকে বলেন বাংলার পুরনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হবে। কিন্তু সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যে এই রাজ্যের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট তা এদিন ভুলে যান বিজেপি নেতারা।
প্রধানমন্ত্রী কথাতেও শোনা গিয়েছে মালদহ, মূর্শিদাবাদ প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, ‘‘মালদহ, মূর্শিদাবাদে যা হয়েছে তা এই সরকারের নির্মমতার উদাহরণ। তুষ্টিকরণের নাম করে গুন্ডারাজকে মদত দেওয়া হচ্ছে। মানুষের বাড়ি জ্বলছে আর পুলিশ চুপ করে দাঁড়িয়ে দেখছে। আদালতের হস্তক্ষেপ ছাড়া এই রাজ্যে এখন কোন কাজ হয় না।’’ মূর্শিদাবাদের সাম্প্রদায়িক হিংসাকে কেন্দ্র করে যেই রিপোর্ট হাইকোর্টে জমা পড়েছে তাতে স্পষ্ট ভাবেই উল্লেখ করা হয়েছে যে গোটা ঘটনা ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। সেই ঘটনায় কে বা কারা যুক্ত ছিল তা এখনও স্পষ্ট হয়নি।
নরেন্দ্র মোদী অভিযোগের সুরে বলেন এরাজ্যে রাজ্য সরকার একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্প চালু করতে দেয় না। যার জেরে রাজ্যের মানুষ সেই সব প্রকল্পের হাত থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কিন্তু ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ নিয়ে বা আবাসের দুর্নীতি নিয়ে কোন কথাই বললেন না প্রধানমন্ত্রী।
রাজনৈতিক সভার আগে আলিপুরদুয়ারে সরকারি সভা করেন নরেন্দ্র মোদী। সেখানে তিনি সিটি গ্যাস সরবরাহ পরিষেবা প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। সেই সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আড়াই লক্ষ পরিবারের কাছে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পৌঁছে যাবে রান্নার গ্যাস। ২০১৪ সালের পর ৫৫০ বেশি জেলায় এই প্রকল্প ছড়িয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বর্তমানে বেড়েছে এলপিজি গ্রাহকের সংখ্যাও।’’
Comments :0