সত্যাব্রত ভট্টাচার্য: বিশাখাপত্তনম
প্রতিবাদ আর প্রতিরোধে রুখে দাও এই স্বৈরাচারী জমানা- সিআইটিইউ সর্বভারতীয় সম্মেলন আহ্বান জানালো এই মর্মেই।
বুধবার বিশাখাপত্তনমে সম্মেলনের পতাকা উত্তোলন করেন সিআইটিইউ’র সর্বভারতীয় সভাপতি কে হেমলতা। উপস্থিত ছিলেন সিআইটিইউ সাধারণ সম্পাদক তপন সেন, ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব ট্রেড ইউনিয়নস এর জেনারেল সেক্রেটারি প্যামবিস কইরিস্টিস সহ সিআইটিউ ও বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন ও ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ।
উপস্থিত ছিলেন সিআইটিউ পশ্চিমবঙ্গ কমিটির সভাপতি অনাদি সাহু, সংগঠনের পশ্চিমবঙ্গ কমিটির সাধারণ সম্পাদক জিয়া উল আলম, প্রাক্তন সভাপতি সুভাষ মুখার্জি সহ রাজ্য সিআইটিইউ নেতৃত্ব।
ছিলেন কৃষক সভার রাজ্য সম্পাদক পরেশ পাল, কৃষকনেতা কৃষ্ণ প্রসাদ, বিএসএনএল নেতা অনিমেষ মিত্র প্রমুখ।
শহীদ বেদীতে মাল্যদানের মাধ্যমে সম্মেলনের সূচনা হয়। এদিন সম্মেলনে উপস্থিত ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব ট্রেড ইউনিয়ন্স -এর জেনারেল সেক্রেটারি প্যামবিস কইরিস্টিস সম্মেলনকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, শ্রমিক শ্রেণির লড়াই চলছে গোটা বিশ্ব জুড়েই। প্রতিক্রিয়াশীল আর সাম্রাজ্যবাদ শক্তি পুঁজিবাদের জয়গান করছে। শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তার মোকাবিলা করছে গোটা বিশ্বে। আমেরিকার আগ্রাসন আর হস্তক্ষেপকে ঠেকাতে হবে। সেই লড়াই লড়ছে ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব ট্রেড ইউনিয়নস।
সম্মেলনে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন এম সাইবাবু।
এছাড়া আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি সাধারণ ধর্মঘট সম্পর্কিত অপর একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন কে হেমলতা। স্বাগত ভাষণ দেন রিসেপশন কমিটির চেয়ারম্যান সি এইচ নরসিংরাও। সম্মেলন পরিচালনা করেন কে হেমলতা সহ সভাপতিমন্ডলী।
সভাপতির বক্তব্যে কে হেমলতা বলেন, বিজেপি সরকারের নয়া উদারীকরণ নীতি, আরএসএস’র সম্প্রদায়িক শক্তি বিভেদ তৈরি করেছে। এই পরিস্থিতিতে শ্রমিক-কৃষককে ঐক্যবদ্ধ করা এক বড়ো চ্যালেঞ্জ। সিআইটিইউ’র মুখ্য দায়িত্ব রয়েছে এক্ষেত্রে। পরিযায়ী থেকে গিগ ওয়ার্কার, বিভিন্ন ক্ষেত্রের শ্রমিকরা আন্দোলন করছেন ঠিকই। আন্দোলনে সাফল্যও আসছে। এই আন্দোলনকে সর্বাত্মক রূপ দিতে হবে। শ্রমিকদের মধ্যে সচেতনতা আনতে তুলে ধরতে হবে বিকল্পের কথা।
তপন সেন সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদনে বলেন, এই যে ক্রমশ মুনাফা বাড়ছে মুষ্টিমেয় কিছু কর্পোরেট সংস্থার, তার কারণ একচেটিয়াত্ব। দেশের কোনো উন্নয়ন, অগ্রগতি ঘটছে না। বেকারত্ব বাড়ছে, বঞ্চনা বাড়ছে, বিনিয়োগ নেই, কর্মী নিয়োগ নেই। তাও দেখা যাচ্ছে ভারতে ৫-৬ টি সংস্থা মুনাফা লাভ করছে।
তপন সেন বলেন, সিআইটিইউ-কে এই আক্রমণ ঠেকানোর নতুন পরিকল্পনা নিতে হবে। ধর্মের নামে, জাতের নামে বিভাজন এনে রাজনীতি চলছে। যাতে শ্রমিক কৃষকরা বেশি ভুক্তভুগী হচ্ছেন। সুতরাং আরো বেশি সংগঠিত প্রতিরোধ চাই। প্রতিবাদ প্রতিরোধ হচ্ছে, সাফল্য আসছে। যেমন গিগ ওয়ার্কারদের আন্দোলন একটা সংগঠিত আন্দোলন হিসেবে দানা বেঁধেছে দেশ জুড়ে। এভাবেই শ্রেণি সচেতনতা ও শ্রেণি ঐক্য গড়ে তুলতে হবে আরো বেশি করে। আন্দোলনের অভিমুখকে নিয়ে যেতে হবে শ্রমিকদের দরজায় দরজায়।
Comments :0