Bangla Bachao Yatra

চুরি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কেশপুরে বাংলা বাঁচাও যাত্রা

জেলা

কেশপুরের আমনপুর থেকে গ্রামীন ১৪কিমি পথে খেতুয়া পর্যন্ত বাংলা বাঁচাও পদযাত্রা। ছবি: চিন্ময় কর।

চুরি-দুর্নীতি তো পঞ্চায়েতের মজ্জায়। আবাস থেকে একশ দিনের কাজেও তোলাবাজি ভুরি ভুরি। গ্রামে বাস করতেও নানান অজুহাতে তোলাবাজি রাজ কায়েম। এমনকি পাট্টাদার ও বর্গাদারদের জমি থেকে উচ্ছেদের ফলে প্রান্তিক কৃষক আজ ক্ষেতমজুর নতুবা পরিযায়ী শ্রমিক। এই লুঠের রাজের যাঁতাকলে থেকে কেশপুরের মানুষ মুক্তি চেয়ে বাংলা বাঁচাও পদযাত্রা সামিল হলেন। সামিল হলেন সদ্য ওডিশায় আক্রান্ত হওয়া পরিযায়ী শ্রমিকরা। কেশপুর ব্লকের আনন্দপুর থানার আমনপুর থেকে খেতুয়া গ্রামীন পথে ১৪ কিমি পথে এই পদযাত্রা ৪৯ টি মৌজার উপর এগিয়ে চলে। সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা ৩০মি পর্যন্ত যাত্রাপথে একাধিক জায়গায় মিছিল আটকালো গ্রামের মানুষ। ব্রাম্ভনপুর মৌজায় আলু চাষের জমি থেকে কাদা মাখা শরীর নিয়ে ক্ষেতমজুর দম্পতি আল পথে ছুটে এসে মিছিলের সামনে নিজের উঠানের কয়েকটা গাঁথা ফুলের  সাথে কুঁড়িও তুলে এনে ছড়িয়ে দিলেন দাবী করলেন আমাদের একশ দিনের কাজটা না হলে পেট চলবে না। স্বামী শান্তি দিগার ওডিশার ফেরির কাজ করতে গিয়ে গেরুয়া বাহিনীর হাতে আক্রান্ত সহ তার সব কিছু লুঠ করে নেওয়ায় সর্বশান্ত হয়ে বাড়ি ফিরে এসেছে।
এদিন আমনপুর পদযাত্রা শুরু হয়। পদযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন সিপিআই(এম) পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক বিজয় পাল, রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস সিনহা, প্রবীন পার্টি নেতৃত্ব মানিক সেনগুপ্ত। উদ্বোধনী বক্তব্যে সিপিআই(এম) জেলা সম্পাদক বলেন, "তৃণমূল সরকার পরিবর্তনের ছিপ ফেলে ক্ষমতায় এসে বাংলায় গত ১৪ বছরে বাংলার যা হাল করেছে আজ আপনাদের অভিজ্ঞতা কি বলে। শিক্ষা-স্বাস্থ্য বেহাল। কৃষকের ফসলের ন্যাহ্য দাম নেই। বিজেপি-তৃণমূল দুই দলই স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করেনি। এতে কৃষক ফসলের উৎপাদন খরচের দেড় গুন দাম পাওয়া থেকে বঞ্চিত। উল্টে এরাজ্যে সার কীটনাশকের কালো বাজারি চলছে। এখন হিমঘরে আলু মজুত বাইরে রপ্তানি করতে না দেওয়ায়। মার খাচ্ছে কৃষক। এই কেশপুরে তিনটি গ্রামীন হাসপাতালে স্থায়ী চিকিৎসক নেই। নার্স ডাক্তারের অভাবে রোগী ভর্তি করা হয়না। ধলহারা হাসপাতাল টিকে আছে ফার্মাসিস্ট দিয়ে চালিয়ে। একাধিক প্রাথমিক স্কুল বন্ধ। স্কুলে শিক্ষক নেই। এই পরিবর্তন জনগন কেউ চাননি। বাংলার এই বেহাল দশা থেকে  বাংলাকে বাঁচাতে পারে কেবল মাত্রা লাল ঝান্ডাই। সিপিআই(এম) সেই আন্দোলন আপনাদের সহযোগিতায় নয়া বাংলা গড়ে তোলার শপথে। এতে একশ দিনের কাজকে ২০০ দিন এবং মজুরী ন্যূনতম ৬০০ টাকা চালু করলে প্রতিজন বছরে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা কাজ পায়। তা চালু করলেই  ঘরবাড়ি গ্রাম ছেড়ে আমাদের বাংলার ছেলেদের ভিন রাজ্যে যাওয়ার দরকার থাকে না। ঐ কয়েকটি অনুদানের প্রকল্প চালু করে মমতা ব্যানার্জী যদি মনে করে মানুষ সন্তুষ্ট আর এই ভাবে সরকারে টিকে থাকবেন তার জবাব রুটি রুজি, শিক্ষিত বেকারের কাজ, সবার জন্য সরকারী শিক্ষা ও উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা এ কেবল বামপন্থীরাই দিতে পারে তা আজ প্রমানীত।

Comments :0

Login to leave a comment