DYFI STATE CONFERENCE

বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই গুন্ডারাজের বিরুদ্ধে : মীনাক্ষী

রাজ্য

শনিবার বহরমপুরে সমাবেশে মীনাক্ষী মুখার্জি।

"২০২৬ এর নির্বাচনে লড়াই হবে গুন্ডারাজ খতম করার ।" বহরমপুরের ডিআইএফআইয়ের প্রকাশ্য সমাবেশ থেকে বললেন ডি ওয়াই এফ আই এর রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি। তার কথায়, সমাজ বদলাতে হলে,রাজনীতি বদলাতে হবে। রাজ্যের গুণ্ডারাজ শেষ করতে হবে।
তিনি বলেন, "এখন কাজের কোন নিশ্চয়তা নেই। মানুষ স্থায়ী কাজ চাইছে। এখন দেখা যাচ্ছে কম টাকায় ১২ ঘণ্টা ১৪ ঘণ্টা কাজ করানো হচ্ছে। রাজ্যে যখন বামফ্রন্ট সরকার ছিলো তখন ৮ঘণ্টার বেশি কোথাও কাজ করানো হতো না । ১৯৭৭ সালে আজকের দিনে রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল । যুবকের চোখে স্বপ্ন ছিল,আজ সেই স্বপ্ন শেষ।"

মীনাক্ষী আরও বলেন, "রাজ্যে ৮০,০০০ বুথ আছে। প্রতিটি বুথে আমাদের যুবকদের কষ্টের কথা তুলে ধরতে হবে । বামফ্রন্ট সরকার গরিবদেরকে মানুষের মর্যাদা দিয়েছিল ।পঞ্চায়েতের মাধ্যমে গ্রামের মানুষের হাতে তুলে দিয়েছিল ক্ষমতা । গ্রামের মানুষকে অধিকার দিয়েছিল নিজের উন্নয়ন নিজেদের করার । আজ এই ১৪ বছরে গ্রামের মাতব্বরদের বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। তারা ফের নিজেদের চরিত্রে ফিরছে। এদের মাথা তুলতে দেওয়া যাবে না ।"

ডিওয়াইএফআই সর্বভারতীয় সভাপতি এএ রহিম বলেন, ‘‘গণতন্ত্র এবং সংবিধানের ধ্বংসের সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে চলবে লড়াই। বহু যুবককে কাজ করতে হচ্ছে ‘অ্যাপ’ ভিত্তিক পরিষেবায়। তাঁদের কর্মী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় না। কোনও শ্রম আইন তাঁদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তাঁদের আয় বা কাজের কোনো নিশ্চয়তা নেই। কাজের বাজারে এমনই অবস্থা সর্বত্র। বামপন্থীরাই বিকল্প। কেরালার বাম গণতান্ত্রিক সরকার স্থায়ী কাজ বৃদ্ধি করতে পারছে।’’ কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘‘দেশে মারাত্মক বেড়েছে বৈষম্য। কর্পোরেটের মুনাফার পক্ষে কাজ করছে এই সরকার। শ্রমিক-কৃষক-যুব-ছাত্র সহ সমাজের সব অংশের ওপর আক্রমণ নামছে।’’

ডিওয়াইএফআই সাধারণ সম্পাদক হিমগ্নরাজ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এমন দিনে সমাবেশ হচ্ছে ১৯৭৭ সালে যে দিনে শপথ নিয়েছিলেন বামফ্রন্ট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। বামফ্রন্ট সরকারের পর চলেছে তৃণমূলের শাসন। জ্যোতি বসু বলেছিলেন কেবল রাইটার্স থেকে সরকার পরিচালিত হবে না। গ্রামে গঞ্জে থেকে হবে। জমির পাট্টা দিয়েছিল বামফ্রন্ট সরকার। গড়েছিল পঞ্চায়েত ব্যবস্থা। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করেছিল বামফ্রন্ট সরকার। ২০১১-র পর, তৃণমূল সরকার। রাজ্যে ৮ হাজার স্কুল বন্ধ। ২১ হাজার মদের দোকান খুলেছে মমতা ব্যানার্জির সরকার। বামফ্রন্ট জনমুখী শিক্ষার নীতিতে বাড়িতে বাড়িতে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়ার নীতি নিয়েছিল। প্রতি বছর মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ত। এখন প্রতি বছর মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিকের সংখ্যা কমছে। বেকার যুবদের অন্য রাজ্যে যাওয়া ছাড়া পথ নেই।  এই অবস্থা বদলাতে হবে।’’

মীনাক্ষীও বলেছেন, ‘‘আরজি কর হাসপাতালে ছাত্রী খুন হওয়ার পর যে কাউন্সিলর দেহ পুড়িয়ে দিল তাকেই পুরস্কার দিয়ে পৌরসভার চেয়ারম্যান করল তৃণমূল। বাবা-মায়ের চোখের জলের দাম নেই, রাজ্যজুড়ে মহিলা রাত জাগলেন, তার দাম নেই, পাত্তাই দিল না তৃণমূল সরকার। এ শাসন গুন্ডারাজ ছাড়া কী?’’ তিনি বলেন, ‘‘আমরা চাইছি সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা মাথা তুলে দাঁড়াক, সরকারি হাসপাতাল বাঁচুক। চাইছি শ্রমিক-কৃষকের সম্মান। চাইছি আমাদের করের টাকায় পিসি-ভাইপোর লুট বন্ধ হোক। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বলেছিলেন দাঙ্গা করতে এলে মাথা ভেঙে দেওয়া হবে। আর এখন পুলিশ দাঙ্গার খবর পেলে লুকিয়ে পড়ে। এর বদল চাই। তার জন্য লড়াই চালাতে হবে।’’

শনিবার বহরমপুরে ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্মেলনের মঞ্চে প্রাক্তন যুবনেতা আভাস রায়চৌধুরীকে সংবর্ধনা দিচ্ছেন মীনাক্ষী মুখার্জি এবং রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা।

Comments :0

Login to leave a comment