GK — TAPAN KUMAR BIRAGYA | VASAMAN DWIP — NATUNPATA | FRIDAY 9 AUGHST 2024

জানা অজানা — তপন কুমার বৈরাগ্য | ভাসমান দ্বীপ — নতুনপাতা | শুক্রবার ৯ আগস্ট ২০২৪

ছোটদের বিভাগ

GK  TAPAN KUMAR BIRAGYA  VASAMAN DWIP  NATUNPATA  FRIDAY 9 AUGHST 2024

জানা অজানা

ভাসমান দ্বীপ
তপন কুমার বৈরাগ্য

নতুনপাতা

পৃথিবীর ভাসমান দ্বীপগুলো টিটিকাকা হ্রদে অবস্থিত।
টিটিকাকা পৃথিবীর সবচেয়ে উচ্চতম হ্রদ। খ্রিস্টপূর্বাব্দ 
৩০০০বছর আগে আন্দিজ পর্বতমালায় ভয়ংকর ভূমিকম্প হয়।
সেই ভূমিকম্পের ফলে এই টিটিকাকা হ্রদ সৃষ্টি হয়েছে।
টিটিকাকা মালভূমিতে এই টিটিকাকা হ্রদ অবস্থিত।
এই হ্রদ দক্ষিণ আমেরিকার দীর্ঘতম পর্বতশ্রেণি আন্দিজ
পর্বতমালায় অবস্থিত। এই হ্রদটা পেরু ও বলিভিয়ার
সীমান্তে অবস্থিত।এই হ্রদে একশোর বেশি দ্বীপ আছে।
যে দ্বীপগুলোর অধিকাংশ ভাসমান। এই হ্রদ সমুদ্রপৃষ্ঠ
থেকে ১২০০ ফুট উচ্চতায়  অবস্থিত। 
এই হ্রদের আয়তন প্রায় নয়হাজার বর্গকিমি। এই হ্রদের মতন
বিশ্বে আর কোথাও এতো নৌকা চলে না। এখানে যে অধিকাংশ
দ্বীপ ভাসমান তার কারণ এই দ্বীপে প্রায় ৫০০০জন
উরু জনগোষ্ঠীর লোক বাস করে।যারা আদিবাসী সম্প্রদায়।
এরা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শিল্পী।এই হ্রদগুলোকে এরাই ভাসমান
করে তুলেছে।এই হ্রদে যেখানে সেখানে নলখাগড়া নামক
এক ধরনের উদ্ভিদ জন্মায়। এক একটা বিরাট এলাকা
জুড়ে এই গাছ জন্মায়। এই গাছের উপরের অংশটা
এরা আয়োডিনের অভাব পূরণের জন্য খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে।তারপর এই গাছগুলো শুকিয়ে গেলে এই গাছগুলো দিয়ে ভাসমান নৌকার মতন দ্বীপগুলো তৈরী করে। ভারী সুন্দর মনুষ্য সৃষ্ট
দ্বীপগুলো।এই দ্বীপগুলোতে জীবনধারনের সব রকম ব্যবস্থা থাকে।এই ভাসমান দ্বীপগুলো এক একটা
ছোট ছোট গ্রামের মতন ।
এই নলখাগড়া দিয়েই তাঁরা ঘরবাড়ি তৈরী করে।
হাতের নানারকম সুন্দর সুন্দর জিনিস তৈরী করে ।
নলখাগড়া দিয়েই তাঁদের যাতায়াতের জন্য নৌকাগুলো তৈরী করে। যেগুলো দেখতে অপূর্ব সুন্দর।
এরা এই নলখাগড়া দিয়েই মূর্তি ,কাপড় তৈরী করে।এগুলো এরা বিভিন্ন শহরে বিক্রি করে প্রচুর টাকা রোজগার করে। এরা বেশি লম্বা হয় না। কিন্তু আদিবাসী হলেও এরা সুসভ্য জাতি। নিজেরা ভদ্র পোশাক পরিধান করে।এরাই এই অপূর্ব সুন্দর ভাসমান
দ্বীপগুলোর সৃষ্টিকর্তা।অসংখ্য এই ভাসমান দ্বীপগুলো ভেসে
বেড়ায়। এরাই আবার এই ভাসমান দ্বীপগুলোতে পর্যটন
কেন্দ্র গড়ে তোলে।বছরে প্রায় তিনলাখ পর্যটক
এই টিটিকাকা ভ্রমণে আসে। এক একটা দ্বীপের স্থায়িত্ব
প্রায় চল্লিশ বছর। তারপর তাঁরা আবার পূর্বের মতন
ভাসমান দ্বীপ তৈরী করে। প্রাচীনকাল থেকেই এই ধারা
তাঁরা বজায় রেখে চলেছে।
টিটিকাকার জলের রঙ গাঢ় নীল।এই রকম জল
পৃথিবীর কোনো হ্রদে দেখা যায় না। এই টিটিকাকা
হ্রদের তীরেই গড়ে উঠেছিল পৃথিবীর প্রাচীন সভ্যতা
ইনকা সভ্যতা।তার অনেক নিদর্শন ছড়িয়ে ছিটিয়ে
আছে টিটিকাকা হ্রদের তীরে। টিটিকাকা হ্রদ পৃথিবীর
সবচেয়ে প্রাচীনতম হ্রদ।এই হ্রদে নানাধরনের 
পাখি দেখা যায়। পর্যটকদের আগমন বেড়ে যাওয়ায়
বর্তমানে টিটিকাকা হ্রদেও দূষণ দেখা দিয়েছে। 


 

Comments :0

Login to leave a comment