মণ্ডা মিঠাই / নতুনপাতা
নজরুলের প্রথম কাব্য গুরু
তপন কুমার বৈরাগ্য
কাজী নজরুল ইসলাম সম্প্রীতির মহান প্রতীক ছিলেন।বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় এই কবি বাংলার ১৩০৬ সনের ১১ই জ্যৈষ্ঠ
বুধবার এবং ইংরাজীর ১৮৯৯খ্রিস্টাব্দের ২৪ শে মে বর্তমানে
পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার অন্তর্গত চুরুলিয়া
গ্রামে সকালবেলায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম ছিলো ফকির
আহমেদ এবং মায়ের নাম ছিলো জাহেদা খাতুন। নজরুলের
পিতামহের নাম ছিলো আমিনুল্লাহ এবং মাতামহের নাম ছিলো
মুনশী তোফায়েল আলী।নজরুলের পূর্বপুরুষরা বিহারের
পাটনার নিকট হাজীপুরে বাস করতেন। তার পূর্বপরুষেরা
সম্রাট শাহআলমের রাজত্বকালে হাজীপুর থেকে চুরুলিয়া
আসেন। শাহ আলম ছিলেন সপ্তদশ মুঘল সম্রাট।যিনি ছিলেন
দ্বিতীয় আলমগীরের পুত্র।কবির পিতা ছিলেন স্বাস্থ্যবান এবং সুপুরুষ।১৩১৪বঙ্গাব্দের ৭ই চৈত্র নজরুলের পিতা দেহত্যাগ করেন।তখন নজরুলের বয়স মাত্র আট বছর।একেই দারিদ্রের
সংসার ,তার উপর পিতার মৃত্যু,সংসারে এনে দিলো চরম বিপর্যয়।
বাংলার ১৩১৬ সাল।তখন তার বয়েস মাত্র দশ বছর। তিনি
মক্তব থেকে নিম্ন প্রাথমিক পরীক্ষায় পাশ করেন।তারপর একবছর
সেই মক্তবেই তিনি শিক্ষকতা করেন। নজরুলের কাব্য জীবন
শুরু এগারো বছর বয়েসে।তার কাকা ছিলেন কাজী বজলে
করীম।ফারসিতে তিনি অতি পন্ডিত ব্যক্তি ছিলেন। তিনি বাংলা এবং ফারসীতে কবিতার চর্চা করতেন।কাকার কাছে বসে বসে তিনি কাকার লেখা কবিতা শুনতেন ।কাকা একদিন বলেলেন--লেখ তো বাবা লেটোর দলের জন্য একটা গান। নজরুল লিখলেন----
মরি কী বদনের শোভা,মাতোয়ারা প্রাণ,
বুলবুল করতে এসেছে তাই মধু পান।
কাকা তার লেখা এই প্রথম গীতিকবিতা শুনে খুব প্রশংসা
করেছিলেন।তাকে আশীর্বাদ করে বলেছিলেন--বাবা তুই
এই অভাব থেকেই পৃথিবীর একজন শ্রেষ্ঠ কবি হ'বি। কাকার
প্রেরণায় উর্দু-ফারসী মিশ্রিত মুসলমানী বাঙলায় প্রথম পদ্য
রচনার শুরু করেন। তাই বলা যায় কাব্য চর্চার তার প্রথম গুরু তার
কাকা কাজী বজলে করীম। এই এগারো বারো বছর বয়েসে তার কাব্য চর্চার নিরলস প্রয়াস দেখে পাড়া পড়শীরা তার নাম দিলেন---'তারা ক্ষ্যাপা'।
Comments :0