জানা অজানা — নতুনপাতা, কবিপক্ষ - বর্ষ ৩
দুখু মিঞা নাম কিভাবে এলো
তপন কুমার বৈরাগ্য
কাজী নজরুল ইসলাম সম্প্রীতির মহান প্রতীক ছিলেন।বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় এই কবি বাংলার ১৩০৬ সনের ১১ই জ্যৈষ্ঠ
বুধবার এবং ইংরাজীর ১৮৯৯খ্রিস্টাব্দের ২৪ শে মে বর্তমানে
পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার অন্তর্গত চুরুলিয়া
গ্রামে সকালবেলায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম ছিলো ফকির
আহমেদ এবং মায়ের নাম ছিলো জাহেদা খাতুন। নজরুলের
পিতামহের নাম ছিলো আমিনুল্লাহ এবং মাতামহের নাম ছিলো
মুনশী তোফায়েল আলী।নজরুলের পূর্বপুরুষরা বিহারের
পাটনার নিকট হাজীপুরে বাস করতেন। তার পূর্বপরুষেরা
সম্রাট শাহআলমের রাজত্বকালে হাজীপুর থেকে চুরুলিয়া
আসেন। শাহ আলম ছিলেন সপ্তদশ মুঘল সম্রাট।যিনি ছিলেন
দ্বিতীয় আলমগীরের পুত্র।কবির পিতা ছিলেন স্বাস্থ্যবান এবং সুপুরুষ। কাজী ফকির আহমদ সাতপুত্র ও দুই কন্যার জনক
ছিলেন।তার জ্যেষ্ঠ পুত্রের নাম ছিলো সাহেবজান।এরপর ফকির
আহমদের আরও চারপুত্র জন্মগ্রহণ করেন।প্রত্যেকেই জন্মের
অল্পদিন পরেই মারা যান।চার পুত্রের জন্মের পরে পরেই মৃত্যু ফকির আহমদ ও জাহেদা খাতুনের জীবনে নিয়ে আসে চরম হত্যাশা।
চারপুত্রের একের পর এক মৃত্যুর পর জন্ম নিলেন
নজরুল।একদিকে আনন্দ আবার চারপুত্রের মৃত্যু, বাবা মায়ের
জীবনে নিয়ে এলো চরম উৎকন্ঠা। সবসময় তারা ঈশ্বরের
শরণাপন্ন হলেন। জন্মের পর নজরুলকে দেখতে ছিলো অপূর্ব
সুন্দর। দুখের মাঝে নজরুলের জন্ম বলে বাবা মা তার
ডাকনাম রাখলেন দুখু মিঞা।নিদারুণ দুঃখ কষ্টের মধ্যে
নজরুলের বাল্যকাল অতিবাহিত হয়েছে।কখনো রুটির দোকানে
মাসিক বেতনে কাজ।আবার কখনো লেটোর দলে সংগীত রচনা।
আবার কখনো যুদ্ধযাত্রা করা।একটা সংগ্রামী দুঃখের জীবন।
আবার তার শেষ জীবনেও নেমে এসেছে অবিচ্ছিন্ন দুঃখ।
এইভাবেই কাজী নজরুল ইসলামের দুখু মিঞা নাম যথার্থ সার্থক হয়ে উঠেছে।
Comments :0