Midnapore

মেদিনীপুরে বৃদ্ধ দম্পতির মৃতদেহ উদ্ধার

রাজ্য জেলা

মেদিনীপুরের কেশপুর ব্লকের কোটা গ্রামে ষাটোর্ধ্ব দম্পতির মৃতদেহ উদ্ধার হলো ঘর থেকে। অভাবের যন্ত্রণায় ওই দম্পতি কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করলেন এমনটাই অনুমান গ্রামের বাসিন্দাদের। জেলা প্রসাশন সূত্রে জানা গেছে মৃত দম্পতির নাম সুশান্ত পাত্র(৬৮) এবং লতারানি পাত্র(৬৩)। বৃহস্পতিবার ভাঙা জরাজীর্ণ টিনের চালা ঘর থেকেই দম্পতির দেহ উদ্ধার হয়। বড়ো ছেলে নান্টু পাত্র(৪১) ১৭ বছর একাই থাকেন গ্রামের একপ্রান্তে। দিনমজুর ও চাষবাস করে দিন চালান। ছোটো ছেলে রবি পাত্র(৩৬) ১২ বছর ঘর ছাড়া হয়ে উত্তর ২৪ পরগনায় থাকেন। ছেলেদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। প্রতিবেশীরা বলেন,কয়েক দিন ধরেই স্ত্রী লতারানির জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। নিমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন স্বামী সুশান্ত। হাসপাতাল যাওয়ার মতো বা চিকিৎসক দেখানো ও ওষুধ কেনার টাকা ছিলো নাা। সেই সঙ্গে ছিল একাকীত্ব। বার্ধক্য ভাতার আবেদন করেও মেলেনি। মেলেনি লক্ষ্মীর ভান্ডারও। একাকিত্ব ও অভাবের কারণেই এই পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানালেন প্রতিবেশীরা।

প্রতিবেশীরা বক্তব্য কয়েকদিন ধরে লতারানি অসুস্থ ছিলেন। সুশান্ত পাত্রও নিমোনিয়ায় ভূগছিলেন। ডাক্তার দেখানো এবং ওষুধ কেনার মতো অর্থ ছিলো না তাদের কাছে। হাসপাতালে যাওয়ার মতো অর্থও তাদের কাছে ছিল না। তাদের দেখাশোনার লোক কেউ ছিলো না। বিঘা দেড়েক চাষের জমিতে গত বছর ধার দেনা করে আলু চাষ করেন। কিন্তু প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই ঋণের বোঝাও মাথায় ছিল। শারীরিক কারণে এবছর আর চাষ করতে পারেনি। লোককে দিয়ে চাষ করতে যে টাকা পেয়েছিলেন তা ঋণের চাপে শোধ করে দেয়।

এদিন সকাল ৮টায় দরজা বন্ধ থাকায় এবং কোনো সাড়া শব্দ না পাওয়ায় প্রতিবেশীরা দরজায় ধাক্কা দিয়ে ডাকতে থাকেন। কোনো সাড়া না পাওয়ায় দরজা ভেঙে দেখেন বিছানার উপর স্বামী স্ত্রীর নিথর দেহ পড়ে রয়েছে। নীচে কীটনাশকের শিশি উদ্ধার হয় বলে প্রতিবেশীরা জানায়। প্রতিবেশীরা থানায় খবর দিলে আনন্দপুর থানার পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান কীটনাশক খেয়েই আত্মঘাতী হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে সবটাই পরিস্কার হবে।

Comments :0

Login to leave a comment