Kolkata Municipal Corporation

৪০ হাজার শূন্যপদ! জল-জঞ্জাল নিয়ে নতুন প্রতিশ্রুতি কলকাতার মেয়রের

কলকাতা

জল জমার সমস্যা মেটেনি কলকাতায়। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত তো বটেই, স্বাভাবিক বৃষ্টিতেও জল জমার সমস্যা রয়েছে। এই বাস্তবতা ফুটে বেরিয়েছে কলকাতা কর্পোরেশনের মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কথাতেই।
মেয়রের যদিও দাবি, এবারের বৃষ্টিতে কলকাতায় জল জমবে না। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলেও ৪ ঘন্টার বেশি জল জমে থাকবে না। 
মেয়রের এই দাবিতে যদিও প্রশ্ন রয়েছে নানা মহলেই। কলকাতায় জল জমার সমস্যা বারবার দেখা যাচ্ছে। তার ওপর নিকাশি নালা নিয়মিত পরিষ্কার না হওয়ার অভিযোগও রয়েছে। কলকাতা কর্পোরেশনের প্রাক্তন মেয়র পারিষদ ফৈয়াজ আহমেদ খান বলছেন, সমস্যা রয়েছে গোড়াতেই। কলকাতা কর্পোরেশনের প্রায় ৪০ হাজার পদ শূন্য। দীর্ঘদিন নিয়োগ নেই। ফলে সব নিকাশি থেকে জঞ্জাল, সব ক্ষেত্রেই কাজে সমস্যা হচ্ছে। 
মেয়র যদিও জানিয়েছে ন যে জল জমার পাাশাপাশি জঞ্জাল সাফাই অভিযানেও বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। 
আগামী ২৮ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত বিশেষ অভিযানচালাবে কর্পোরেশনের জঞ্জাল বিভাগ। কলকাতার ১৪৪ টি ওয়ার্ডের মধ্যে কোথাও জঞ্জাল পড়ে থাকলে ছবি তুলে পাঠাতে বলছে কলকাতা কর্পোরেশন। বলা হয়েছে, ৪ ঘণ্টার মধ্যে সেই জায়গা পরিষ্কার হয়ে যাবে। ৯০৭৩৩৬৭৮৮৩ হোয়াটস অ্যাপ নম্বরে জানাতে বলেছে কর্পোরেশন।  
মেয়র দাবি করেছেন যে কলকাতার বিভিন্ন নিকাশি নালা ও খাল থেকে ২০ লক্ষ টন পলি তোলা হয়েছে। জল নিকাশের ১৪টি খাল সংস্কার করা হয়েছে। ফলে বেড়েছে জলধারণ ও নিকাশির ক্ষমতা। 
মেয়র বলেছেন যে কলকাতার মূল তিনটে জায়গায় জল জমে। ঠনঠনিয়া-কলেজ স্ট্রিট চত্বর, বেহালার একাংশ ও খিদিরপুরে। তাঁর দাবি, খিদিরপুরে জল জমার সমস্যা মিটে গেছে। বেহালায় আগের থেকে অনেক কম জল জমে। কলেজ স্ট্রিটে আমরা বড় পাইপ বসানোর কাজ করছি। আশা করা যায় জল জমলেও তা ৩ ঘন্টার বেশি থাকবে না। 
হাকিম বলেন, কলকাতার একাধিক রাস্তা ঠিক করছে কর্পোরেশন। কলকাতা এনভায়রনমেন্ট ইনভেস্টমেন্ট ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (কেইআইআইপি)-র আওতায় থাকা সমস্ত কাজ ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে শেষ করার কথা। কোথাও রাস্তা খারাপ থাকলে ডিজি-কে সাসপেন্ড করার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি। 
প্রাক্তন মেয়র পরিষদ সদস্য ও সিপিআই(এম) নেতা ফৈয়াজ আহমেদ খান বলেন, বামফ্রন্ট যখন কলকাতা কর্পোরেশনের দায়িত্বে ছিল তখন নিকাশি ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু হয়েছিল। সেই সময়ই খিদিরপুরে গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যান ও কর্পোরেশন একত্রে কাজ করেছিল। বেহালাতে যে কাজ হয়েছে তা-ও বামফ্রন্টের সময়েই। 
ফৈয়াজ আহমদ খান বলেছেন, ঠিকভাবে পাক তোলা হয় না নিকাশি নালায়। মেয়র শুধু নিজের প্রচারটাই করেন। বামফ্রন্টের সময় মেয়র কাজ করতেন, নিজের প্রচার করতেন না। 
জঞ্জাল প্রসঙ্গে খান বলেন, চার ঘন্টার মধ্যে পরিষ্কার করার কথা বলছেন। কিন্তু বাস্তবে তা হয় না। আসলে সমস্যাটা গোড়ায়, দীর্ঘদিন নিয়োগ হয় না। প্রায় চল্লিশ হাজার শূন্য পদ। তিনি বলেন, আমহার্স্ট স্ট্রিট চত্বরে আমরাই পাম্পিং স্টেশন করেছিলাম। আসলে এগুলো হচ্ছে ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। বামফ্রন্টের সময়ে কাজ শুরু হয়েছিল। সেই কাজ শেষ করার দায়িত্ব পৌরসভার পরবর্তী বোর্ডের।
খানের অভিযোগ, কাজ শেষ না করে ফেলে রেখে নতুন প্রকল্প চালু করা হচ্ছে। তৃণমূলের বোর্ডের এই কৌশলের ফলে কাটমানি খাওয়ার সুবিধা হয়ে যাচ্ছে।

Comments :0

Login to leave a comment