বিশেষ প্রতিনিধি: ঢাকা
এপার জানে তোলাবাজি কী। সীমান্তের ওপার অতিষ্ঠ চাঁদাবাজিতে। যার বেশিরভাগই চলছে নিজেদের সমন্বয়ক দাবি করে। গত শনিবার ঢাকার গুলশান এলাকায় চাঁদাবাজির দায়ে পুলিশ আটক করেছে পাঁচ জনকে। অভিযোগ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে চলছিল জুলুম।
গুলশানে আওয়ামি লিগ নেত্রী ও প্রাক্তন সাংসদ শাম্মি আহমেদের বাড়িতে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হয় ধৃতেরা। আটক ইব্রাহিম হোসেন মুন্না এবং তাঁর সঙ্গীরা শাম্মি আহমেদের থেকে ৫০ লক্ষ টাকা চাঁদা চেয়েছিল বলে অভিযোগ। দশ লক্ষ টাকা তুলেছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। বাকি টাকা আনতে গিয়েই শনিবার পুলিশের হাতে আটক হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে বাংলাদেশে বিক্ষোভের জেরে দেশ ছাড়তে হয় শেখ হাসিনাকে। মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। কিন্তু অরাজকতার বিবিধ ঘটনা সামনে আসছে বারবার। 
সম্প্রতি উমামা ফাতেমা নামে এক সমন্বয়ক পদ ছেড়েছেন প্রতিবাদে। তিনি বলেছেন, ”আমি মুখপাত্র হওয়ার পর আবিষ্কার করছি, অনেকে অনেক কিছু করছে। টেন্ডার-তদ্বির বাণিজ্য করছে। জুলাই আন্দোলনকে কেন মানি মেকিং মেশিন কর হবে?’’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, ”ঢাকার উত্তরার ঘটনাগুলো সামনে আসছে না। ওই এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নোমান এসএম প্লাজা নামক একটি ভবনে রীতিমত চাঁদাবাজির অফিস খুলে বসেছে। দখলবাজি, চাঁদাবাজি, অবৈধ উচ্ছেদ একের পর এক ঘটিয়ে চলেছে।’’ 
এই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশ সম্প্রতি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) তৈরি করেছে। অনভিপ্রেত একাধিক ঘটনা সামনে আসায় দলের যুগ্ম সদস্যসচিব গাজি সালাউদ্দিন তানবিরকে গত এপ্রিলে দল থেকে ‘সাময়িক অব্যাহতি’ দেওয়া হয়েছে।
গত বছর ডিসেম্বরের প্রতারণা, চাঁদাবাজি ও মানহানির অভিযোগে করা এক মামলায় ফেনীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমন্বয়ককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি একটি মাদ্রাসার অধ্যক্ষের কাছে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন। রংপুরের এক নেতার গত মার্চ মাসে এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবির ভিডিও এবং অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়েছে।
অপরাধ বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. তৌহিদুল হক বলেন, ‘‘পূর্ব বোঝাপড়া করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিলে তা কোনো পরিবর্তনও আনবে না। কঠোর আইনগত ব্যবস্থা না নিলে রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে অপরাধের প্রবণতা বাড়বে।’’
                                        
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
Comments :0