নতুনপাতা : মণ্ডা মিঠাই
আমাদের দেশে আমরা কি স্বাধীন?
সৌম্যদীপ জানা
“স্বাধীনতা"এই শব্দটি শুনলে আমরা সকলেই নতুন এক উত্তেজনায় উজ্জীবিত হয়ে উঠি। এই শব্দটি শুনলে সকলেরই মনে জাগে স্বতন্ত্রতার এক অমোঘ বাণী যা সর্বদা মনে করিয়ে দেয় নিজের অধীন থাকা সব থেকে বেশি শ্রেয়। যদি স্বতন্ত্রভাবে নিজেকে ভালোভাবে পরিচালনা করা যায় তবে স্বাধীনতার থেকে বড় সুখ বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে অদ্বিতীয়।
১৫ ই আগস্ট ২০২৪, আমাদের ভারতবর্ষের ৭৮তম গর্বের স্বাধীনতা দিবস। সকাল থেকেই নানান জায়গায় শুরু হয়ে গিয়েছে পতাকা উত্তোলন দেশাত্মবোধক গানের মেলা। উচ্চস্বরে দেশাত্মবোধক আবৃত্তি ও শ্রুতি নাটকের ভিড়, মোড়ে মোড়ে রক্তদান শিবির। আজ সকল ভারতবাসী মেতে উঠেছে স্বাধীনতার অপার আনন্দে। আজ আমাদের দেশ সত্যি সত্যি মেতে উঠেছে স্বাধীনতার উচ্ছসিত, উদ্ভাসিত আনন্দে।
কিন্তু এত রং ,এত আনন্দ, এত উৎসবের মধ্যৈও আমাদের দেশে কোন না কোন জায়গায় নিশ্চয়ই সাধারণ মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। সমানে ঘটে চলেছে কোন না কোন অপরাধ তা হোক চুরি,ডাকাতি কিংবা খুন, জখম। রাজনৈতিক নেতাদের উত্তেজক বক্তৃতার মধ্যেও তাদের নিকৃষ্ট চেহারা তারা কি কি গোপন করে চলেছে। দুর্নীতিগ্রস্থ নেতা মন্ত্রীদের কুকর্মের ফলে দেশের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ভারসাম্য ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
সত্যি কি আমরা স্বাধীন এই দেশে? যেখানে দেশের মানুষের পর্যাপ্ত খাদ্য নেই বস্ত্র নিয়ে বাসস্থান নেই নেই জীবিকার খোঁজ। আমাদের দেশে রয়েছে অসাধারণ জাতীয় ভাষাবৈচিত্র্য। উত্তরে হিমালয় থেকে দক্ষিনে কন্যাকুমারিকা পর্যন্ত পূর্বে অরুনাচল থেকে পশ্চিমে কচ্ছ পর্যন্ত আমাদের দেশের প্রতিটি মাইলে মাইলে রয়েছে বৈচিত্রতার অসাধারণ মেলবন্ধন যেখানে একই থালায় ভাত খায় হিন্দু, মুসলমান বা বাঙালি, পাঞ্জাবি। একই বাতাসে শ্বাস নেয় ব্রাহ্মণ থেকে কুলি কামিন পর্যন্ত। একই মাটিতে জীবন ধারণ করে আপামর ভারতবাসী। আমরা সকলেই দেশকে অত্যন্ত ভালোবাসি দেশের জন্য সব করতে প্রস্তুত ।
কিন্তু পরিশ্রম যদি ভুল পথে করা হয় তবে কখনোই উন্নতি সাধন হয় না। আমাদের দেশের মধ্যে সবই আছে। অসাধারণ শিক্ষাগত ক্ষমতা, যার নিদর্শন কোটি কোটি ভারতীয় বৈজ্ঞানিক যারা দেশে ও বিদেশে নানা প্রতিষ্ঠানে নানান গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার করে দেশের মুখ উজ্জ্বল করছেন। তাছাড়া কৃতি ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার,উকিল অধ্যাপক ,শিক্ষক তো দেশকে সর্বদাই অগ্রগতির পথে এগিয়ে দিচ্ছেন। তাছাড়া দেশের সকল নাগরিকের দেশের প্রতি কর্তব্য পালন করে দেশের উন্নতির পথ করছেন।কিন্তু দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক নেতা এবং মানুষের জন্য আমাদের দেশের পরিশ্রম বেশিরভাগ সময়ই ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে। আমরা না পাচ্ছি বিশ্বমানের শিক্ষা না পাচ্ছি বিশ্বমানের স্বাস্থ্য। তার অনেকগুলি কারণো অবশ্য আছে, যেমন আছে দেশের অত্যাধিক জনসংখ্যা বৃদ্ধি, দেশের শিক্ষার হার এবং মান কিছুটা হলেও বহির্বিশ্বের থেকে কম। তাছাড়া এত বড় বিশাল জাতিবৈচিত্র্য সম্পন্ন দেশের সকল রকম উন্নতিমূলক কাজ করার জন্য সদিচ্ছার অভাব। আমরা যদি একটু চেষ্টা করি তবে পূর্বোক্ত সকল নেতিবাচক কথাগুলিকে ইতিবাচক করে তুলতে পারি। এই একবিংশ শতাব্দীর বৈজ্ঞানিক যুগে এসেও আমাদের দেশের মা বোনেরা নিরাপত্তার অভাবে ভোগেন। দেশের যুবকেরা যথেষ্ট যোগ্যতা অর্জন করে জীবিকার খোঁজ পায়না। কিন্তু আমাদের দেশে সকল মানুষ যদি সংঘটিত হয়ে চলে আমাদের দেশ পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ দেশের পরিণত হবে। আবার কবির সেই উক্তি সফল হবে, ভারত আবার “জগতের সবাই শ্রেষ্ঠ আসন লবে”।
অষ্টম শ্রেণী
কল্যাণ নগর বিদ্যাপীঠ
খড়দহ, উত্তর ২৪ পরগনা
Comments :0