গত কয়েকদিন ধরেই সমগ্র সিকিম জুড়ে প্রবল বর্ষণ চলছে। আর প্রাকৃতিক দূর্যোগের মধ্যে পাহাড়ের বেড়াতে এসেই দুর্ঘটনার মুখে পড়লো পর্যটকবোঝাই গাড়ি। রাস্তা থেকে সোজা হাজার ফুট নীচে তিস্তা নদীতে পড়ে যায় গাড়িটি। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িতে গাড়িটিতে পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা ও ত্রিপুরার পর্যটকরা ছিলেন। একজনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দুজনকে জখম অবস্থায় উদ্ধার করা গেছে। এখনও নিখোঁজ আট পর্যটক। 
উত্তর সিকিমের গুরুডোংমার লেক থেকে ফেরার পথে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর সিকিমের মঙ্গন জেলার চুঙথাঙ- মুনসিথাং যাবার রাস্তায়। SK03-0J-650 নম্বরের পর্যটক বোঝাই গাড়িটি উত্তর সিকিমের লাচুং থেকে লাচেনের দিকে যাচ্ছিলো। জানা গেছে, পর্যটক বোঝাই গাড়িটিতে চালক সহ মোট ১১জন পর্যটক ছিলেন। ছিলেন ওড়িশার জাজপুর রোড এলাকার বিজেপি’র রাজ্য মহিলা সভানেত্রী ইতশ্রী জেনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরাও। খাড়া ও পাহাড়ি দূর্গম রাস্তায় গাড়িটি আচমকাই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায় হাজার ফুট নীচে খাদে গড়িয়ে সোজা তিস্তা নদীতে পড়ে যায়। 
দুর্ঘটনার পরে বিকট আওয়াজ শুনতে পেয়ে স্থানীয়রা এগিয়ে গিয়ে উদ্ধার কাজে হাত লাগান। খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজে নেমে পড়ে পুলিশ প্রশাসন। এছাড়াও ভারতীয় সেনা জওয়ান, ইন্দো-তিব্বত বর্ডার ফোর্সের জওয়ান, দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দলের কর্মীরা উদ্ধার কাজে নেমে পড়েছেন। বৃহস্পতিবার সারা রাত ধরে উদ্ধার কার্য চলে। প্রবল বৃষ্টি চলছে উত্তর সিকিমে। চারিদিক কুয়াশায় আচ্ছন্ন। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। এক পর্যটকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং দুইজনকে জখম অবস্থায় উদ্ধার করে গ্যাঙটকের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের এখনও পর্যন্ত কোন খোঁজ মেলেনি। শুক্রবার সকাল থেকে ফের উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে। নিখোঁজ বাকি পর্যটকদের খোঁজে খরস্রোতা তিস্তা নদীতে ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি শুরু করা হয়েছে। যদিও এই সংবাদ লেখা পর্যন্ত কোন পর্যটকের নাম পরিচয় জানা যায়নি। উদ্ধার হওয়া মৃতদেহটি গাড়ির চালক পাশাং শেরপা’র বলে জানা গেছে। একটি সূ্ত্রে জানা গেছে ওড়িশা বিজেপি মহিলা মোর্চার সভানেত্রী ইতশ্রী জেনা তাঁর দুই ছেলে ও স্বামীকে নিয়ে উত্তর সিকিমে গিয়েছিলেন। নিখোঁজদের মধ্যে রয়েছে তাদের নাম। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উত্তর সিকিমের দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে মঙ্গনের পুলিশ সুপার সোনম ডেচু ভুটিয়া বলেন, একজন মৃত ও দুই জনকে জখম অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। রাত থেকে উদ্ধার কাজ চলছে। এখনও পর্যন্ত বাকিদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। উদ্ধার কাজ চলছে। আবহাওয়া অনুকূল না হওয়ায় উদ্ধারকাজে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে বারবার। উদ্ধার জখমদের গ্যাঙটকের এসটিএনএম হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে।