মঙ্গলবার থেকে একনাগাড়ে বৃষ্টিতে খরস্রোতা তিস্তা। বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে উত্তর সিকিমের লাচেন। আটকে পড়া পর্যটকদের উদ্ধার কাজ আটকে গিয়েছে। বন্ধ রয়েছে হেলিকপ্টারের এয়ারলিফ্ট। 
এদিকে ফুরিয়েছে সরকারি রেশন। বিদ্যুৎ সংযোগ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন অবস্থায় গত ছয়দিন থেকে ধস বিধ্বস্ত উত্তর সিকিমের লাচেনে আটকে রয়েছেন বহু পর্যটক। আটকে থাকা পর্যটকদের মধ্যে বিদেশী পর্যটকরাও রয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। অবস্থা ক্রমশই হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। সঙ্কট তীব্র হতেই অবস্থার মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের তরফে পর্যটকদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবার জন্য হোটেল মালিকদের আবেদন জানানো হয়েছে। 
সরকারিভাবে জানানো হচ্ছে শতাধিক পর্যটক এখনও সিকিমের লাচেন আটকে রয়েছে। কিন্তু আটকে থাকা পর্যটকদের সংখ্যা আরো বেশি বলেই মনে করছেন পর্যটন মহল। 
উত্তর সিকিম ধস বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে লাচেনে ক্ষতি বেশি। চুংথাং থেকে মুনসিথাং ও ক্ষতির মুখে পড়েছে। এই সব এলাকায় রাস্তাঘাট উধাও হয়ে গেছে। উত্তর সিকিম থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে লাচেন। লাচেনে এখনও আটকে রয়েছে শতাধিক পর্যটক। পাশাপাশি উত্তর সিকিমের ছাতেনে সেনা ক্যাম্পে ধস নামার কারনে তিন জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। ছয় জন জওয়ান এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।  সেনার ব্রিগেডিয়ার এইচএস লিড্ডার বলেন, আবহাওয়া প্রচন্ড খারাপ। স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি এনডিআরএফ এখনও উদ্ধারে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ছাতেনে ছয় জওয়ান এখনও নিখোঁজ।  
হিমালয়ান হসপিটালিটি ট্যুর অ্যান্ড ট্র্যাভেল ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, সরকারের পাঠানো রেশন শেষ হয়ে গেছে। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারের কাজ বন্ধ। প্রায় ১১৩জন পর্যটক লাচেন আটকে রয়েছে। আটকে থাকা পর্যটকদের সংখ্যা আরো বাড়ার সম্ভাবনাই প্রবল।  
বুধবার শিলিগুড়ি মহকুমার ফাঁসিদেয়ার ঘোষপুকুর তিস্তা ব্যারেজের জলে এক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির দেহ ভেসে ওঠে। সিকিমের দুর্ঘটনার মুখে পড়া কোন মৃতদেহই তিস্তার জলে ভেসে এসেছে বলেই পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। 
ধস পরিষ্কার করে সিকিমের কিছু রাস্তা খুলে দেওয়া হয়েছে। গ্যাঙটক থেকে মঙ্গন, রাকডুঙ্গ থেকে তিনটেক, মঙ্গন থেকে চুংথাং, চুংথাং থেকে লাচুং সড়ক, লাচুং থেকে ডিকচুর  রাস্তাগুলি খোলা রয়েছে। এছাড়াও  গ্যাঙটক থেকে মঙ্গন যাবার জন্য ফুডঙ্গ রোডটি হালকা যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।