প্রিতম ঘোষ, কালীগঞ্জ

ঘটনার দিন মায়ের সাথে গাছ লাগাচ্ছিল ছোট্ট তামান্না। তারপরই স্নানে যাওয়ার কথা ছিল। হঠাৎই সকেট বোমা মারা হয়। লুটিয়ে পড়ে ছোট্ট তামান্না। তামান্নার জেঠু আবুল কাশেম বলছেন, "পরিকল্পনা মাফিক এই খুন করা হয়েছে। না হলে বিজয় মিছিল ছোট রাস্তায় প্রবেশ করবে কেনো?

শনিবার বিকেলেই সিপিআই(এম) নদীয়া জেলা কমিটির ডাকে পলাশীর অশোকা সিনেমা হলের সামনে সমাবেশ হবে।

বড় রাস্তা দিয়ে ভিতরে ঢুকে গেলে রাস্তার শেষ বাড়িটি তামান্নাদের। এই রাস্তায় কোনও মিছিল ঢোকার কথাই নয়। কাদের আলী তামান্নার প্রতিবেশী জানাচ্ছেন ২৩ জুনের ঘটনার কথা। উপনির্বাচনের ফল ঘোষণা হয়নি সবে ১১-১২ রাউন্ড ঘোষণা হয়েছে। খবর আসছে তৃণমূল প্রার্থী আলিফা আহমেদের জয়ের ব্যবধান বাড়ছে। তখনই তৃণমূলের কর্মী সমর্থক গুন্ডারা জড়ো হয়েছিলো। যেখানে ২৪ রাউন্ড বানানো হওয়ার কথা তখন মাত্র ১১ রাউন্ড গণনা হতেই বিজয় উল্লাসে মেতে পড়ে। সাধারণ যেখানে কালি পটকা বা চকলেট বোম ফাটায় কিন্তু ঐদিন পরিকল্পনামাফিক বোম মজুত রেখেছিল। পরিকল্পনা মাফিক সেটা না হলে কখনো বিজয় মিছিলে সকেট বোমা ফাটানোর কথা না। বিজয় উল্লাসের নামে কিভাবে সকেট বোমা মেরে বাচ্চা একটি মেয়ের প্রাণ কেড়ে নিল। দলমত নির্বিশেষে এই ঘটনার বিরোধিতা করা উচিত। তামান্নার মা যাতে বিচার পায়। তার ব্যবস্থা করা উচিত প্রশাসনের।"  
তামান্নার জ্যাঠা আবুল কাশেম জানাচ্ছেন, "ঐদিন ওরা বোম চার্জ করতে করতে আসে। বাড়িতে সেদিন কোনো পুরুষ ছিল না। চার জন মহিলা ছিল। তখন ওরা বোম মেরে চলে যায়।"
ঘটনার পর থেকে বিপর্যস্ত পরিবার। এখনো আতঙ্কিত রয়েছেন তাঁরা। পুলিশ প্রশাসনের ওপর ভরসা রাখতে পারছেন না তাঁরা।  

এখনও এলাকার পরিস্থিতি থমথমে। পুলিশ মোতায়েন রয়েছে গ্রামের বিভিন্ন জায়গায়। প্রতিবেশীরাও বলছেন তৃণমূলের গুন্ডা বাহিনী পরিকল্পনা মাফিক এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এই ঘটনার সঠিক বিচার চাইছেন তাঁরাও।

কালিগঞ্জ উপনির্বাচনের বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী কাবিল উদ্দিন শেখের নির্বাচনী এজেন্ট আব্দুল আলী শেখ বলছেন, “তৃণমূল আগে থেকেই বোমা গুলি মজুত করেছিল। আমার রিটারিং অফিসারকে ও অবজারভারকে জানিয়েছিলাম কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। পুলিশ প্রশাসন সাহায্য করেছে তৃণমূলের গুন্ডা বাহিনীকে। যারা জোট প্রার্থীকে সমর্থন করেছিলেন তাঁদের প্রত্যেকের বাড়িতে হামলা চালানো হয়।”