Amit Shah

নেই কোন দিশা, শাহের ভাষণে শুধুই সাম্প্রদায়িকতা

জাতীয় রাজ্য

‘‘বাংলায় অনুপ্রবেশ আটকাতে হবে। হিন্দুদের বাঁচাতে হবে, দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। বাংলার মাটির ভারতের নেতৃত্ব দিয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। সেই বাংলায় কমিউন্সিররা শাসন চালিয়েছে, এখন তৃণমূল শাসন করছে। তৃণমূল বাংলার মাটিতে অপরাধের উৎসাহ দিচ্ছে। হিন্দুদের ওপর অত্যাচার এবং দুর্নীতির কেন্দ্রে পরিনত করেছে বাংলাকে।’’ নেতাজী ইন্ডোরের দলীয় সভা থেকে একথা বললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। 

বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী আলিপুরদুয়ার থেকে বলেছিলেন হিন্দুদের বাঁচাতে রাজ্যের বিজেপি সরকার প্রয়োজন এদিনও একই কথা বললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। দুর্নীতি নিয়ে তৃণমূলকে তিনি নিশানা করলেও দোষীরা কেন এখনও শাস্তি পেলো না সেই নিয়ে কোন কথা শোনা যায়নি অমিত শাহের কথায়। ক্ষমতায় এসে বিজেপি রাজ্যে চাকরি এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে উন্নতি বা কৃষি ক্ষেত্রে উন্নতির জন্য কি করবে তার কোন দিশা নেই শাহের কথায়।

তিনি বলেন, ‘‘মমতা সোনার বাংলার স্বপ্ন শেষ করেছে। এই সরকারের আমলে শিক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে একাধিক দুর্নীতি হয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রকল্পে দুর্নীতি হয়েছে। তৃণমূলের সিন্ডিকেট টাকা লুঠ করেছে। বাংলার গরীব মানুষের টাকা লুঠ করা হয়েছে। তৃণমূল নেতাদের ঘর থেকে টাকা উদ্ধার হয়।’’ উল্লেখ্য ২০১১ সালের আগে বামফ্রন্ট সরকারের শিল্পনীতি এবং সিঙ্গুরের টাকা কারখানার বিরোধী একসাথে করেছিল তৃণমূল এবং বিজেপি। আর যেই শুভেন্দুকে নারদায় টাকা নিতে দেখা গিয়েছ সে নিজে আজ মঞ্চে বসে ছিলেন অমিত শাহের পাশে। শুভেন্দুর প্রশংসাও করেন শাহ। বলেন, ‘‘শুভেন্দু বিধানসভায় বলতে উঠলে মমতা ব্যানার্জি কাঁপে।’’

এদিন অমিত শাহের ভাষণ ছিল সম্পূর্ন ভাবে সাম্প্রদায়িক। সংখ্যালঘুদের নিশানা করে তিনি তার বক্তব্য রাখেন। বিধানসভা নির্বাচনের আগে ফের হিন্দু মুসলমানের রাজনীতির সুর তৈরি করে দিলেন তিনি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষ যখন এক হচ্ছে তখন ফের মানুষে মানুষে ভাগ করার জন্য ধর্মকে টেনে আনলেন শাহ।

তিনি বলেন, ‘‘হিন্দু সমাজকে প্রতারিত করেছে মমতা। হিন্দুদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। যাদের নাম বাদ যাচ্ছে তাদের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সিএএ দেওয়া হবে।’’

শাহ বলেন, ‘‘বাংলার জমি কি ওয়াকফের হওয়া উচিত? উনি এই আইনের বিরোধীতা করে কাদের পাশে থাকতে চাইছে। মসজিদের ইমামদের ভাতা দিয়েছে এই সরকার, আদালতের নির্দেশে তা বন্ধ রয়েছে। মুসলিমদের খুশি করার জন্য তিনি অপারেশন সিঁদুরের বিরোধী করেছেন। বাংলার মা বোনেদের বলতে চাই অপারেশন সিঁদুর নিয়ে প্রশ্ন তোলা তৃণমূলকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার। কংগ্রেস সরকারের সময় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কিছু করেনি। গুলির জবাব গুলিতে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। এখনও অপারেশন সিঁদুর শেষ হয়নি।’’ 

শাহ দাবি করেন। ‘‘মূর্শিদবাদের ঘটনায় আগে বিএসএফকে ডাকা হয়নি। হাইকোর্টের নির্দেশে বিএসএফ আসে। সাম্প্রদায়িক হিংসার সাথে রাজ্য সরকারের মন্ত্রী যুক্ত। মুসলিম তুষ্টিকরণের সব সীমা তৃণমূল পার করেছে।’’ 

 

ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূলকে নিশান করে তিনি বলেন, ‘‘দেশের কোথায় নির্বাচন এবং নির্বাচন পরবর্তী হিংসা হয় না শুধু বাংলায় হয়ে। দিদিকে বতে চাই আপনার সময় শেষ হয়ে এসেছে ২০২৬ সালে বিজেপি সরকার তৈরি হবে। তৃণমূল সরকার চলে গেলেই বিজেপি কর্মীদের যারা খুন করেছে তাদের শাস্তি দেওয়া হবে। দম থাকলে দিদি হিংসা, বুথ দখল না করে ভোট করে দেখাক। যদি করেন তাহলে বাংলার মানুষ তৃণমূলের জামানত জব্দ করবে।’’

তিনি বলেন, ‘‘বাংলার নির্বাচন শুধু বাংলার ভবিষ্যতের সাথে যুক্ত নয়। দেশের সাথেও যুক্ত। মমতা ব্যানার্জির জন্য বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ হচ্ছে এই তৃণমূল সরকারের আমলে। দিদি ভাইপো অনুপ্রবেশ আটকাতে পারবে না একমাত্র বিজেপি সরকার তা আটকাতে পারবে। বিএসএফের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে রাজ্য সরকার, কিন্তু বিএসএফকে জমি দেওয়া হচ্ছে। জমি দেওয়া হলে কেউ ঢুকতে পারবে না। ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ভোট বেড়েছে ৯৭ আসনে বিজেপি এগিয়ে আছে। একাধিক আসনে ৪০ শতাংশ ভোট পেয়েছে বিজেপি লোকসভা নির্বাচনে। আগামী নির্বাচনে বিজেপি সরকার তৈরি হতে চলেছে।’’ 

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাংলার উন্নতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকার অনেক কাজ করেছে। বাংলার সংস্কৃতির জন্য কাজ করেছে। বাংলাকে ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি দিয়েছে মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে মমতা কী দিয়েছে বাংলাকে? ২ হাজার ৯ লক্ষ কোটি টাকা দিয়েছে তার জায়গায় মোদী ৮ লক্ষ ২৭ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে।’’

Comments :0

Login to leave a comment