অরিজিৎ মন্ডল: বহরমপুর
বিজেপির আরএসএসকে বিভাজনের রাজনীতি করার সুযোগ করে দিচ্ছে রাজ্যের তৃণমূল সরকার। পরিযায়ী সমস্যা, বেকারের প্রতিদিনের যন্ত্রণা যুব সংগঠনের সময় দিতে পারছেন না অনেক কমরেডরা। বিচ্ছিন্নতা তৈরি হচ্ছে সেই বিচ্ছিন্নতাকে মোকাবিলার জন্য বিকল্প পন্থাও গ্রহণ করেছেন অনেকে। সম্পাদকীয় প্রতিবেদনের উপর আলোচনাতে বিভিন্ন জেলার প্রতিনিধিরা প্রায় একই সুরে এই কথাকেই সমর্থন করে গেলেন।
সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা দাঙ্গার সাক্ষী হয়েছে মুর্শিদাবাদ। সেই মুর্শিদাবাদের এক প্রতিনিধির আলোচনায় উঠে আসে এই দাঙ্গা লাগাতে সরাসরি মদত দিয়েছে পুলিশ ও রাজ্যের শাসক দল। উস্কানি কে কেন্দ্র করে এই বিভাজনের রাজনীতির যাতে চালিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় সেই জন্য বিজেপির হাতে। তৃণমূলের আমলে মুর্শিদাবাদ জেলা চাপ পড়ে গেছে যে এটি পরিযায়ীদের জেলা যেহেতু এই জেলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় মানুষের বসবাস বেশি তাই এখানে ধর্মীয় বিভাজন আরএসএস করতে চাইছে। সেই বিভাজনের বিরুদ্ধেই ডিওয়াইএফআই লড়াই চালিয়েছে আসছে।
জলপাইগুড়ির প্রতিনিধি আলোচনার সময় বললেন, উত্তরবঙ্গের বিভাজন শুধু ধর্মীয় বিভাজন নয় জাতিগত বিভাজন ও প্রকট হচ্ছে। আদিবাসী অবাঙালি রাজবংশীদের মধ্যেও বিভাজন করতে চাইছে বিজেপি আরএসএস। আমরা প্রায়োরিটি লিস্ট সেট করে বুথভিত্তিক ভাবে অন্তত পাঁচ জন কর্মী নির্দিষ্ট করতে চাইছে। সমস্যা যা ছিল তা অনেকটাই মেটানো গেছে। আশা করছি টিমওয়ার্কের মাধ্যমে বাকি সমস্যাও মিটিয়ে ফেলতে পারব আমরা। পূর্ব বর্ধমান জেলার প্রতিনিধি আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, স্থানীয় ইস্যুতে লড়াই সংগ্রাম সংঘটিত করতে পেরে সংগঠনে লাভ হয়েছে। নতুন কর্মীদের যুক্ত করা গেছে সংগঠনের সাথে। যুব অংশ বাদ দিয়ে সাধারণ মানুষের প্রতিদিনের রুটি রুজির লড়াইতেও আমাদের অংশগ্রহণ বেড়েছে ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে আমাদের গ্রহণযোগ্য তাও বেড়েছে। এর একটা উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন কাটোয়া আহমেদপুর ও কাটোয়া বর্ধমান লাইনে অনিয়মিত ট্রেন চলাচল কে কেন্দ্র করে আমরা লাগাতার আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়েছি। রিয়েল কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়েছে কাটোয়া আহমেদপুর লাইনে রেল পরিষেবা বৃদ্ধি করতে। আলোচনায় এই প্রতিনিধি বারংবার ইন্টার ডিসিপ্লিনারি মুভমেন্ট এর কথা উল্লেখ করেছিলেন। বলেন, তিলোত্তমা আন্দোলনের পর যুবতী বাহিনী যা গঠিত হয়েছিল তার কার্যক্রম আগের থেকে বেড়েছে। আমরা প্রান্তিক অংশের যুবতী মহিলাদের কাছে পৌঁছাতে পেরেছি। আদিবাসী অনগ্রসর শ্রেণীর অনেককেই আমাদের সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়েছে এবং তারা নিয়মিত লড়াই সংগ্রামের পথে রয়েছে।
একদিকে ভাঙ্গন প্রবন সামশেরগঞ্জ এলাকাতে যেমন ত্রাণের কাজে যুব কর্মীরা নেমেছে, ঠিক উল্টোদিকে প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে এই বহরমপুর শহরে এসে কোন মানুষের যদি রাতের রক্ত লাগে সেখানেও বিআইএফ এর কমরেডরা তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াচ্ছে।
দক্ষিণপন্থী রাজনীতির ঠোঁক বাড়ছে তার সাথে নয়া উদারবাদ গ্রাস করছে যুবদের। কিন্তু নয়া উদারবাদ যে স্বপ্ন দেখিয়েছিল তা আসলে যে মিথ্যা তা উন্মোচিত হয়েছে। তাই কর্পোরেট হিন্দুত্বের যে আস্ফালন তা নরম হিন্দুত্বের মাধ্যমে মননে গেঁথে দিতে চাইছে বিজেপি আরএসএস এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার এক প্রতিনিধি আলোচনায় বলে কর্মজীবী যুবতীদের নিয়ে বিশেষ নজর দিতে হবে সংগঠনকে। শ্রমজীবী মহিলাদের জন্য আলাদাভাবে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন তাদের পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। তাই যুবতীদের বেশি করে আরো সংগঠনে যুক্ত করতে গেলে সমজীবী যুবতীদের তৃতীয় নজর দিতে হবে রাজ্যকে।
Comments :0