চিন্ময় কর: মেদিনীপুর
বাংলাদেশে অস্থিরতার সময় থেকেই রাজ্যে বিভাজনের প্রচার বেড়েছে। সঙ্ঘ পরিবার, মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক শক্তি তৎপর হয়েছে। বিভাজনের বিষ ঝাড়তে জীবিকার দাবিতে আন্দোলনের তীব্রতা বাড়াচ্ছে সিপিআই(এম)।
মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুরে সিপিআই(এম) জেলা কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে এসে একথা বলেন রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে আত্মসমর্পনের জন্য জবাবদিহি করতে হবে মোদী সরকারকে।
সংবাদমাধ্যমে সেলিম জানান যে জব কার্ডের জন্য আন্দোলন, পাট্টাদার-বর্গাদারদের জমি বাঁচানোর লড়াই, মজুরি, আবাস যোজনা, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির পাশাপাশি ৯ জুলাই ধর্মঘটকে সামনে রেখে আন্দোলন চলছে। তিনি বলেন, রাজ্য সম্মেলনে সময় ধরে কর্মসূচি ঠিক হয়েছে। তার পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এর মধ্যে রাজ্যের মুর্শিদাবাদে দাঙ্গা এবং পহেলগামে সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছে। ভারত-পাকিস্তান সামরিক সংঘাত হয়েছে। তাকে ঘিরে সাম্প্রদায়িক শক্তি বিভাজনের প্রচার চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, শ্রমিক কৃষক বেকার যুব মেহনতি মানুষের দাবি দাওয়া নিয়ে আন্দোলন চলছে। মানুষের মধ্যে ঐক্য-সম্প্রীতি রক্ষার জন্য কর্মসূচি নিয়ে চলেছে সিপিআই(এম)।
সেলিম বলেন, সোশাল মিডিয়া কেবল নয়, মূলস্রোতের সংবাদমাধ্যমও বিভাজনের প্রচারে যুক্ত হয়েছে। মানুষের মধ্যে বিষ ছড়ানো হয়েছে। বিভাজনের বিষ ঝাড়ার জন্য সাধারণ মানুষের দাবি দাওয়া নিয়ে আন্দোলন চলবে। জীবনজীবিকার আসল সমস্যা, বেকারি-স্মার্ট মিটারের মতো বিষয় নিয়ে আন্দোলনে জোর দেওয়া হচ্ছে। স্মার্ট মিটারের আন্দোলনের ফলে পিছু হটেছে রাজ্য সরকার। পুঁজিপতি-কর্পোরেটদের জন্য এই ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে কেন্দ্র এবং রাজ্য দুই সরকার। বিদ্যুৎ আরও দামি করে দেবে, বিশেষ করে সঙ্কট বাড়বে নিম্নবিত্ত মানুষ, কৃষিজীবী মানুষের ওপর। ২০০ ইউনিট পর্যন্ত বিনা মাশুলে বিদ্যুত দেওবার পরিবর্বে বিদ্যুতের ব্যবহারে আরও খরচা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে স্মার্ট মিটার নীতিতে।
সেলিম বলেন, শিক্ষক নেই স্কুলে, সরকারি কলেজে ভর্তি হচ্ছে না। বেসরকারি কলেজে ভর্তি হচ্ছে। দুই সরকারই চাইছে সরকারি প্রতিষ্ঠান তুলে দিতে। তার বিরুদ্ধে লড়াই চলছে।
এক প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সর্বদলীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করবেন জানিয়েছেন। তা ইতিবাচক। কিন্তু পহেলগামের পর সরকারকে বলা হয়েছিল বিশেষ অধিবেশন ডাকতে। ডাকেননি। প্রধানমন্ত্রী সর্বদলীয় বৈঠকে না থেকে প্রচার করে বেড়ালেন। বিরোধীরা সরকারকে সহযোগিতা করলেন। অথচ সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করল না সরকার।
সেলিম বলেন, মোদীকে এখন স্বীকার করতে হচ্ছে তাঁর একার দ্বারা সব সম্ভব নয়। বিরোধীদের সাহায্য নিতে হয়। তিনি দেশে দেশে ঘুরে বেড়ান। অথচ সঙ্কটের সময় সংসদীয় প্রতিনিধিদল পাঠিয়ে বক্তব্য জানাতে হয়েছে। এর থেকেই বোঝা যায় কেন সংসদীয় গণতন্ত্র গুরুত্বপূর্ণ, কেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব গুরুত্বপূর্ণ। তবে কেবল বৈঠক করলেই হবে না। এই প্রক্রিয়া থেকে শিক্ষা নিতে হবে।
আমাদের বিদেশনীতির অভিমুখ কী হবে। কোথায় আমরা আটকাচ্ছি নির্দিষ্ট করতে হবে। কেন আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইচ্ছের হাতে সরকার নিজেদের সঁপে দিচ্ছে। তার উত্তর দিতে হবে মোদী সরকারকে।
Comments :0