Elephant Attacks

ফের ময়নাগুড়িতে হাতির হামলায় প্রাণহানি

জেলা

ময়নাগুড়ি ব্লকের রামসাই জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় ফের বন্যহাতির হামলায় প্রাণ হারালেন এক ব্যক্তি। মৃতের নাম বালুক ওঁরাও(৫২)। ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্কের পাশাপাশি বনদপ্তরের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বালুক ওঁরাও প্রতিদিনের মতোই তাঁর গরু চরাতে রামসাই জঙ্গলের ধারেই গিয়েছিলেন। এরপর দীর্ঘসময় কেটে গেলেও তিনি আর বাড়ি না ফেরায় পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হয়। এরপরই গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে জঙ্গলের ভেতরে শুরু হয় খোঁজ। অবশেষে, জঙ্গলের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় বালুক ওঁরাওয়ের ক্ষতবিক্ষত দেহ। ধারণা করা হচ্ছে, গরু চরানোর সময় তিনি হাতির সামনে পড়ে যান এবং হাতির আক্রমণে তাঁর মৃত্যু হয়। এই মর্মান্তিক ঘটনার পর থেকেই রামসাই জঙ্গল লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা বনদপ্তরের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। ঘন ঘন বন্যপ্রাণীর হামলায় প্রাণহানির ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
ডুয়ার্সের জলপাইগুড়ি আলিপুরদুয়ার সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় মানুষ–হাতির সংঘাত ক্রমেই বাড়ছে। বিশেষত বনবস্তি ও জঙ্গলসংলগ্ন গ্রামীণ অঞ্চলে সচেতনতার অভাব, হাতির চলাচলের নিয়মিত নজরদারির ঘাটতি এবং বনদপ্তরের গাফিলতি এই দুর্ঘটনা বাড়িয়ে তুলছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। অনেক সময় হাতির গতিবিধি আগে থেকে জানানো হয় না, পর্যাপ্ত বনরক্ষী মোতায়েন থাকে না, ফলে সাধারণ মানুষ অসহায় হয়ে পড়েন।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, হাতির আক্রমণে কারও মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণ হিসেবে পরিবারের জন্য সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা পাওয়ার নিয়ম রয়েছে। পাশাপাশি আহত হলে চিকিৎসা ব্যয় এবং বাড়িঘর বা ফসল নষ্ট হলে ক্ষয়ক্ষতির ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে ক্ষতিপূরণ পেতে দেরি হয় এবং বহু ক্ষেত্রেই গ্রামবাসীদের অভিযোগ, প্রশাসনিক জটিলতায় অনেক পরিবার ন্যায্য সাহায্য পান না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সংঘাত কমাতে হাতির করিডর চিহ্নিত করা, রাতে বনবস্তি এলাকায় টহলদারি বাড়ানো, মোবাইল অ্যালার্ট ব্যবস্থা চালু করা, বৈদ্যুতিক বেড়ার নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ, এবং গ্রামবাসীদের সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি। স্থানীয়দের দাবি, মানুষের মৃত্যু রোধে বনদপ্তরকে আরও সক্রিয় হতে হবে। নাহলে ডুয়ার্সে মানুষ হাতির সংঘাত আরও ভয়াবহ আকার নেবে।

Comments :0

Login to leave a comment